অশালীন আচরণের অভিযোগ, বিজেপির বিধায়কদের বিরুদ্ধে স্বাধীকারভঙ্গের নোটিস বিধানসভায়
সোমবার রাজ্যপালের ভাষণ পাঠ পর্বে বিধানসভার ভিতরে নজিরবিহীন বিশৃঙ্খলতার অভিযোগে বিজেপির দিকে আঙুল তুলেছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। মুখ্যমন্ত্রী-সহ গোটা শাসকদলের নেতৃত্বের কথায়, বিক্ষোভের নামে ওইদিন গেরুয়া পরিষদীয় দল কার্যত সংসদীয় গণতন্ত্রকে হত্যা করেছে। তবে কেবল সমালোচনা করেই তারা ক্ষান্ত থাকছে না। ওইদিন সদনে তৃণমূলের মহিলা মন্ত্রী-বিধায়কদের সঙ্গে অশালীন আচরণের অভিযোগ জানিয়ে স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস জমা করেছে তারা। মঙ্গলবার সংক্ষিপ্ত অধিবেশন চলাকালীন অধ্যক্ষ বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের কাছে এই নোটিস জমা পড়ে। নোটিসে রাজ্যের চার মন্ত্রী শশী পাঁজা, চন্দ্রিমা ভট্টাচার্য, সাবিনা ইয়াসমিন ও শিউলি সাহা ছাড়াও বিধায়ক অসীমা পাত্র সই করেছেন। নোটিসে তাঁরা এব্যাপারে কাঠগড়ায় তুলেছেন বিজেপি বিধায়কদের। আর গেরুয়া পরিষদীয় শিবিরের ওই অভব্য আচরণের পিছনে প্রশ্রয় দেওয়ার জন্য বিরোধী দলনেতার প্রসঙ্গও উল্লেখ করেছেন অভিযোগকারীরা।
অধিবেশন শেষে লবিতে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শশীদেবী বলেন, সোমবার বিধানসভায় কলঙ্কজনক ভূমিকা পালন করেছে বিজেপি। স্বয়ং বিরোধী দলনেতা দলীয় বিধায়কদের এই ধরনের নজিরবিহীন আচরণে মদত জুগিয়েছেন। আমরা মহিলা মন্ত্রী-বিধায়করা রাজ্যপালকে তাঁর ভাষণ পাঠ শুরু করার জন্য বার বার অনুরোধ জানাচ্ছিলাম। কিন্তু ওইসময় বিজেপি বিধায়করা আমাদের সঙ্গে অভব্য আচরণ করেন। এমনকী, ভিড়ের মধ্যে কেউ কেউ আমাদের শারীরিকভাবেও লাঞ্ছনা করার চেষ্টা করেন। আমরা তাই এসবের বিহিত চেয়ে এই স্বাধিকারভঙ্গের নোটিস জমা করেছি। এদিকে, সদনে পেশ হওয়া রাজ্যপালের ভাষণের উপর আলোচনার সময় কমিয়ে আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছে সরকার পক্ষ। যে ভাষণ জগদীপ ধনকার পড়তেই পারেননি তার উপর দু’দিন ধরে পাঁচঘণ্টা বিতর্ক চালানো অর্থহীন বলে মনে করে তারা। তাই এদিন সর্বোচ্চ মহলের সঙ্গে পরামর্শ করে কেবল আজ, বুধবার অধিবেশনের দ্বিতীয়ার্ধে আড়াই ঘণ্টা এনিয়ে চর্চা চালানোর কথা বিবেচনা করছে শাসক শিবির। এই কারণে আগে বৃহস্পতিবার ঠিক থাকলেও আজই এই বিতর্কের শেষে জবাবি ভাষণ দিতে সদনে হাজির হওয়ার কথা রয়েছে মুখ্যমন্ত্রীর। এদিন সন্ধ্যায় বিরোধী শিবিরকেও এই পরিবর্তিত সূচির আভাস দেওয়া হয়েছে। তবে বিজেপি পরিষদীয় দল এই বিষয়ে কী পদক্ষেপ নেয়, তা রাত পর্যন্ত স্পষ্ট হয়নি। উল্লেখ্য, আজ অধিবেশনের বিরতিতে এই পরিবর্তিত সূচিতে সিলমোহর দিতে কার্য উপদেষ্টা কমিটির বৈঠক ডাকা হয়েছে। এই বৈঠকে অবশ্য বিজেপি যাবে না বলে আগেই ঘোষণা করেছে।