রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ আচরণের জন্যই রাজ্যে আর্থিক সঙ্কট, অভিযোগ রাজ্যপালের

March 9, 2022 | 2 min read

বিধানসভার বাজেট অধিবেশনের সূচনায় রাজ্যপাল জগদীপ ধনকারের ভাষণে তুলে ধরা হল রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রীয় সরকারের বৈষম্যর বিভিন্ন দিক। কেন্দ্রের বিমাতৃসুলভ মনোভাবের জন্য রাজ্যের অর্থিক সঙ্কট তীব্রতর হয়েছে বলে ভাষণে উল্লেখ করা হয়েছ। ২৫ পাতার ভাষণের বেশিরভাগ অংশ জুড়ে রয়েছে রাজ্য সরকারের সাফল্যের খতিয়ান। ভাষণের শেষ দিকে কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনাও করা হয়েছে। এই পর্বে কার্যত ‘ভূমিকা’ হিসেবে রাজ্যপালের ভাষণে বলা হয়েছে, সঙ্কীর্ণ রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে পরিচালিত স্বার্থান্বেষী গোষ্ঠী জনাদেশ প্রাপ্ত সরকারের নেওয়া শান্তি ও সমৃদ্ধির পথ মেনে নিতে পারছে না। এরপরই সরাসরি কেন্দ্রের সমালোচনা করে বলা হয়েছে, রাজ্যের প্রাপ্য ৯০ হাজার কোটি টাকা কেন্দ্রের কাছ থেকে পাওয়া যায়নি। বন্যার ক্ষতিগ্রস্ত এলাকায় ত্রাণ ও পুনর্গঠনের জন্য প্রয়োজনীয় অর্থ কেন্দ্র দেয়নি। তবে কেন্দ্রের আর্থিক বঞ্চনা সত্ত্বেও রাজ্য সরকার যে জনসাধারণের জন্য কাজ করে যাবে, সেটাও জানানো হয়েছে ভাষণে।

দেশের যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোয় আঘাত হানার জন্য কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করা হয়েছে রাজ্যপালের ভাষণে। এতে বলা হয়েছে, দেশের রূপকাররা শাসনপ্রণালী তৈরির সময় সহযোগিতামূলক যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামাকে বেছে নিয়েছিলেন। কিন্তু এটা দুর্ভাগ্যজনক যে, এখন এই আদর্শকে সবসময় লঙ্ঘন করা হচ্ছে। কেন্দ্র ও রাজ্যের নিজস্ব অধিকারের সীমা উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে অস্পষ্ট করে দেওয়া হয়েছে। এর জন্য কেন্দ্র ও রাজ্যের সম্পর্ক বিঘ্নিত হচ্ছে। যেখানে সংবিধানে বলা আছে, কেন্দ্র ও রাজ্য একযোগে কাজ করবে। যুক্তরাষ্ট্রীয় কাঠামোকে আরও জোরদার করে রাজ্যকে তার ন্যায্য প্রাপ্য মিটিয়ে দেওয়ার দাবি জানানো হয়েছে ভাষণে। রাজ্যের অর্থনৈতিক বিকাশের জন্য এটা দরকার। রাজ্যের মানুষের স্বার্থে উন্নয়নমূলক কাজ করার অধিকার যে নির্বাচিত সরকারের আছে, সেটাও এই ভাষণের মধ্য দিয়ে মনে করিয়ে দেওয়া হয়েছে। ভাষা, সংস্কৃতি ও ধর্মবিশ্বাসের ক্ষেত্রে কোনও একটি বিশেষ ছাঁচকে চাপিয়ে দেওয়ার অপচেষ্টার সমালোচনা করা হয়েছে ভাষণে। ভারতের প্রাণশক্তি যে তার বৈচিত্র্যের মধ্যেই রয়েছে, সেটাও বলা হয়েছে রাজ্যপালের ছাপানো ভাষণে।

বিধানসভায় রাজ্যপালের ভাষণটি তৈরি করে দেয় রাজ্য সরকার। রাজ্যপালের কাছে আগাম তা পাঠানো হয়। ভাষণের ব্যাপারে রাজ্যপালের কোনও আপত্তি, সংযোজন বা বিয়োজন থাকলে সেটা সরকারকে জানান। সংশোধিত হওয়ার পরেই রাজ্যপাল ভাষণ রাখেন সভায়। সোমবার বিরোধী বিজেপি বিধায়কদের হইচইয়ের জন্য বিধানসভায় ভাষণটি রাজ্যপাল কার্যত পড়তে না পারলেও, নিয়ম মেনে সেটি সভায় পেশ করা হয়। রাজ্যপাল বিধানসভা ছেড়ে চলে যাওয়ার পর ফের স্বল্প সময়ের অধিবেশন হয়। সেখানে রাজ্যপালের ভাষণের উপর ধন্যবাদসূচক প্রস্তাব আনেন পরিষদীয়মন্ত্রী পার্থ চট্টেপাধ্যায়। সেটি সমর্থন করেন সরকারের মুখ্য‌ স঩চেতক নির্মল ঘোষ। বুধ ও বৃহস্পতিবার রাজ্যপালের ভাষণের উপর বিতর্ক চলবে। শেষ দিন বিতর্কে অংশ নিতে পারেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও বিরোধী দলনেতা শুভেন্দু অধিকারী। শুক্রবার বিধানসভায় বাজেট পেশ করা হবে। সোমবার থেকে তিনদিন চলবে বাজেটের উপর আলোচনা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Jagdeep Dhankhar, #Economy, #union govt

আরো দেখুন