কংগ্রেসের ঔদ্ধত্যই বিজেপির গোয়া জয়ের নেপথ্য কারিগর, খোঁচা তৃণমূলের
প্রকাশিত হয়েছে পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের ফল। কেবলমাত্র পঞ্জাব ছাড়া প্রতিটিতেই জয় লাভ করেছে বিজেপি। সৈকত রাজ্য গোয়াতেও জয় পেয়েছে বিজেপি। কংগ্রেসের ঔদ্ধত্যকেই বিজেপির গোয়া জয়ের নেপথ্য কারিগর বলে, খোঁচা তৃণমূলের।
কংগ্রেসের ঔদ্ধত্যই গোয়ায় বিজেপিকে সংখ্যাগরিষ্ঠতা এনে দিল, সত্যি হল তৃণমূল কংগ্রেসের ভবিষ্যদ্বাণী। গোয়ায় প্রথমবারের জন্য বিধানসভা নির্বাচনে লড়ছিল সর্বভারতীয় তৃণমূল কংগ্রেস। চলতি বছরের জানুয়ারি মাসেই তৃণমূল তরফে বলা হয়েছিল, গোয়ায় বিজেপি জিতলে দায়ী থাকবে কংগ্রেস। বলাইবাহুল্য আজ ১০ই মার্চ, ২০২২ তারিখে গোয়ার ভোটবাক্স খুলতেই তৃণমূল সেই ভবিষ্যদ্বাণী সত্য প্রমাণিত হল। কেবলমাত্র কংগ্রেসের অনমনীয়, অসহনীয় মনোভাবের জন্যই সাগরপাড়ের রাজ্যে বাড়তি রাজনৈতিক অক্সিজেন পেয়ে, সরকার গড়তে চলেছে বিজেপি। কংগ্রেসের রাজনৈতিকভাবে অসহিষ্ণু মনোভাবই হল বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলোর এক ছাতার তলায় আসার অন্তরায়। কংগ্রেসের ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণের বিরুদ্ধে সরব হয়েছে তৃণমূল কংগ্রেস।
একুশে বাংলার হাইভোল্টেজ বিধানসভা নির্বাচনে জিতে আসার পর থেকেই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বিজেপি বিরোধীশক্তিগুলোকে এক জোট করার লক্ষ্যে ব্রতী হয়েছিলেন। বিজেপিকে হারাতে পারে একমাত্র বিরোধী শক্তিগুলোর জোট। কিন্তু কংগ্রেসের স্বভাবসিদ্ধ দাদাগিরি বিজেপি মুক্ত ভারত গঠনের প্রধান অন্তরায়। কংগ্রেস তরফে দাবি করা হচ্ছিল, গোয়ায় কংগ্রেসই সরকার গড়তে চলেছে। বিজেপি বিরোধী দলগুলো জোটের প্রস্তাব দিলে, কংগ্রেস বারবার তাদের ব্যঙ্গ-বিদ্রুপ করেছে।
তৃণমূলের তরফে গোয়া বিধানসভা নির্বাচনে বিজেপির বিরুদ্ধে এক সঙ্গে লড়াই করার জন্য কংগ্রেসকে জোটে আহ্বান জানানো হয়েছিল। কিন্তু কংগ্রেসের পক্ষ থেকে পি চিদাম্বরম তৃণমূলের আহ্বানকে নাকচ করে দেন। লক্ষ্য যখন বিজেপিকে পরাজিত করা, তখন সমমনোভাবাপন্ন দলগুলোর জোটে সমস্যা কোথায়! কংগ্রেস গোয়ায় বিজেপি বিরোধী ভোটকে প্রচ্ছন্নভাবে ভাগ করেছে। কংগ্রেসের এই রাজনৈতিক অনমনীয় দৃষ্টিভঙ্গির জন্যই বাড়তি সুবিধা পেয়েছে বিজেপি। কেবল এই একটি রাজ্যের ক্ষেত্রেই নয়, গোটা দেশের নিরিখে বলা যায়, কংগ্রেস কখনওই বিজেপি বিরোধী শক্তিগুলিকে এক মঞ্চে আসতে দিচ্ছে না। যার সুযোগ পুরোমাত্রায় ফুলে নিচ্ছে বিজেপি। বিরোধী ভোট ভাগ হয়ে যাওয়ার সুবাদে, বিজেপি সহজেই সরকার গড়তে প্রয়োজনীয় আসন পেয়ে যাচ্ছে।
রাজনৈতিক কারবারিদের মতে, একমাত্র সমমনোভাবাপন্ন দলগুলোই সম্মিলিতভাবে বিজেপিকে হারাতে পারবে। কিন্তু দীর্ঘকাল যাবৎ চলে আসা কংগ্রেসের ঔদ্ধত্যই হল আসল সমস্যার কারণ, যার সমাধান অসম্ভব। যত দিন না কংগ্রেস তার ঔদ্ধত্যকে সরিয়ে নমনীয় হতে পারবে, তত দিন বিজেপি বিরোধীদের দুর্বলতার সুযোগ নিয়ে রাজনৈতিক ফায়দা তুলতে থাকবে।