কাজে এল না ঝুলনের বিশ্বরেকর্ড, নিউজিল্যান্ডের কাছে ৬২ রানে হার ভারতের
পাকিস্তানের বিরুদ্ধে আগাগোড়া দাপট দেখিয়ে মহিলাদের বিশ্বকাপের (ICC Women’s World Cup) প্রথম ম্যাচে জিতেছিল মিতালি রাজের ভারত। কিন্তু দ্বিতীয় ম্যাচে থমকে গেল ভারতীয় দল। বিশ্বকাপে খেলতে আসার আগে নিউজিল্যান্ডের বিরুদ্ধে ওয়ানডে সিরিজ খেলেছিলেন ঝুলন গোস্বামীরা। সেই সিরিজে ভারত ১-৪-এ হেরে গিয়েছিল কিউয়িদের কাছে। নিউজিল্যান্ড যে ধারে ও ভারে শক্তিশালী তা আগেই জানত ভারত (India Women Cricket Team)। বৃহস্পতিবার বিশ্বকাপে কিউয়িদের কাছে ৬২ রানে হেরে গেল ‘উওমেন ইন ব্লু’। রান তাড়া করতে নেমে পুরো ৫০ ওভারও খেলতে পারেনি ভারতের মহিলা ব্যাটাররা। ৪৬.৪ ওভারে ভারতের ইনিংস শেষ হয়ে যায় ১৯৮ রানে।
হেরে যাওয়ার দিন আবার ব্যক্তিগত নজির গড়লেন বাংলার ঝুলন গোস্বামী। মোট ৫টি বিশ্বকাপ খেলেছেন তিনি। বিশ্বকাপে ৩৯টি উইকেট দখল করেন ঝুলন। আর তার ফলে তিনি যুগ্মভাবে মহিলা বিশ্বকাপে সব থেকে বেশি উইকেট নেওয়ার নজির গড়েন। অস্ট্রেলিয়ার লিন ফুলস্টনের সঙ্গে একই বন্ধনীতে জায়গা করে নিলেন বাংলার বোলার।
নিউজিল্যান্ডের (New Zealand) মাঠে খেলা সব সময়ে কঠিন ব্যাপার। মাঠের আকার, এলোমেলো হাওয়া প্রতিপক্ষের কাজ কঠিন করে তোলে। টস জিতে এদিন ভারত প্রথমে ফিল্ডিং করার সিদ্ধান্ত নেয়। প্রতিপক্ষের স্কোর দেখে রান তাড়া করার সিদ্ধান্ত নিয়েছিলেন মিতালি। কিউয়ি বাহিনীকে অল্প রানে থামিয়ে রাখাই ছিল ভারতের লক্ষ্য। কিন্তু ৫০ ওভারের শেষে নিউজিল্যান্ড করে ৯ উইকেটে ২৬০ রান। শুরুতে কিউয়ি ওপেনার সুজি হেটস মাত্র ৫ রানে রান আউট হলেও সোফি ডিভাইন ও অ্যামেলিয়া কের ইনিংস গোছানোর কাজ করেন। সোফি ডিভাইন ব্যক্তিগত ৩৫ রানে ফেরেন। এর পরে অ্যামেলিয়া কের এবং অ্যামি স্যাটারথওয়েট নিউজিল্যান্ডের ইনিংস এগিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ করেন। অ্যামেলিয়া কের ব্যক্তিগত ৫০ রানে এলবিডব্লিউ হন রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়ের বলে। অ্যামি সর্বোচ্চ ৭৫ রান করেন। তাঁর আগে অবশ্য আউট হন ম্যাডি গ্রিন (২৭)। তখন দলের রান ৪ উইকেটে ১৭৫। অ্যামি স্যাটারথওয়েট আউট হন দলীয় ২২৪ রানে। কেটি মার্টিন খেলেন লড়াকু ৪১ রানের ইনিংস। বাকিরা অবশ্য কেউই সেভাবে বড় রান করতে পারেননি।
ভারতীয় বোরালদের মধ্যে পূজা বস্ত্রকার চারটি উইকেট নেন। রাজেশ্বরী গায়কোয়াড়ের ২টি উইকেটের পাশাপাশি ঝুলন গোস্বামী ও দীপ্তি শর্মা একটি করে উইকেট নেন। ইনিংসের একেবারে শেষ ওভারে ঝুলন ফিরিয়ে দেন নিউজিল্যান্ডের উইকেটকিপার কেটি মার্টিনকে। আর তার ফলেই বিশ্বরেকর্ড গড়েন ঝুলন।
নিউজিল্যান্ডের ২৬০ রান তাড়া করতে হলে দরকার ছিল পার্টনারিশপ গড়া। কিন্তু শুরু থেকেই নিয়মিত ব্যবধানে উইকেট হারানোয় ভারত গোড়াতেই চাপে পড়ে যায়। স্মৃতি মান্ধানা ৬, দীপ্তি শর্মা ৫, অভিজ্ঞ মিতালি রাজ ৩১, ওপেনার ভাটিয়া ২৮ রান করেন। রান তাড়া করতে নেমে শুরুতেই ভারত কিন্তু ছিটকে যায় লড়াই থেকে। একা লড়াই চালিয়ে যান হরমনপ্রীত। একদিক থেকে যখন একের পর এক ভারতের ব্যাটাররা ফিরে যাচ্ছেন, তখন অন্যপ্রান্তে লড়াই চালিয়ে গিয়েছিলেন তিনি। হরমনপ্রীত ব্যক্তিগত ৭১ রানে যখন ফেরেন, তখন ভারত লড়াই থেকে ছিটকে গিয়েছে। বাকিরা সেভাবে লড়াই করতে পারলেন না। ভারত থেমে গেল ১৯৮ রানে।