নন্দীগ্রামে ‘কায়দা’ করে জিতেছিল শুভেন্দু? বিস্ফোরক দলবদলু নেতারা
একুশে বঙ্গের বিধানসভা নির্বাচনে নন্দীগ্রামের ফলাফল নিয়ে এবার কার্যত বিস্ফোরণ ঘটালেন বিজেপি থেকে তৃণমূলে আসা দুই নেতা রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় (Rajib Banerjee) ও জয়প্রকাশ মজুমদার (Jayprakash Majumder)। শনিবার ক্যামাক স্ট্রিটের কার্যালয়ে সাংবাদিক বৈঠকে একের পর এক তোপ দাগলেন দুই নেতা। তার মধ্যে বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য নন্দীগ্রাম বিধানসভার নির্বাচনী ফলাফল। যেখানে রাজীব, জয়প্রকাশ দু’জনই শুভেন্দু অধিকারীর বিরুদ্ধে কারচুপির বিস্ফোরক অভিযোগ তুললেন। শুভেন্দু নন্দীগ্রামে ‘কায়দা’ করে জিতেছিলেন। প্রথমে হেরেও শেষ মুহূর্তে জিতে আসেন তিনি। আর তা নিয়েই বিরোধী দলনেতার ‘ছক’ ফাঁস করলেন রাজীব-জয়প্রকাশ।
একুশের বিধানসভা নির্বাচনে বাংলায় সবচেয়ে হেভিওয়েট কেন্দ্র ছিল নন্দীগ্রাম। এখান থেকে প্রার্থী হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)। আর তাঁর বিরুদ্ধে গেরুয়া শিবিরের প্রার্থী ছিলেন শুভেন্দু অধিকারী (Suvendu Adhikari)। ফলাফলে অবশ্য সামান্য ভোটে শুভেন্দু অধিকারী জিতে বিরোধী দলনেতার পদ পেয়েছেন। যদিও নন্দীগ্রামে ভোটের ফলাফলের বিষয়টি এখনও আদালতের বিচারাধীন।
তারপর অবশ্য বঙ্গ রাজনীতিতে অনেক বাঁক-মোড় এসেছে। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছবি সঙ্গে নিয়ে বিধানসভা থেকে বেরিয়ে গেরুয়া শিবিরে যোগ দেওয়া রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায় ভোটে হেরে ফিরে এসেছেন তৃণমূলে। এখন তিনি ত্রিপুরার দায়িত্বপ্রাপ্ত নেতা।
শনিবার সাংবাদিক বৈঠকে বসে রাজীব অভিযোগ করেন, ”বিরোধী দলনেতা ব্যক্তি কুৎসার জায়গায় নিয়ে গেছেন। গড়াপেটা ম্যাচ। রাজ্যপাল আর বিরোধী দলনেতা একসঙ্গে নাটক করে একটা পরিস্থিতি তৈরি করে সাংবিধানিক সংকট তৈরি করার চেষ্টা। বিলো দ্য বেল্ট আক্রমণ করেছেন তিনি। আমি সেসময় বিজেপিতে ছিলাম, বলেছিলাম ওঁকে।” এরপরই তিনি নন্দীগ্রাম (Nandigram) প্রসঙ্গ টেনে বলেন, ”আমি চ্যালেঞ্জ করছি, আবার ভোট হোক। বুকে হাত দিয়ে বলুন তো, স্বচ্ছ ভোট হয়েছে নন্দীগ্রামে? উনি ভোটের দিন বলেছিলেন, আমায় নন্দীগ্রামে হেরে গেছি। কোন জাদুবলে আবার পালটাল? এই বিরোধী দলনেতার দর বাড়িয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আজ তিনি মুখোমুখি দাঁড়াতে পারেন না। কথা বলতে পারেন না।”
রাজীব বন্দ্যোপাধ্যায়ের পর জয়প্রকাশ মজুমদারও নন্দীগ্রাম নির্বাচন নিয়ে বিস্ফোরক দাবি তুললেন। গেরুয়া শিবিরের দীর্ঘদিনের সদস্য বিদ্রোহের জেরে শিবির বদলে তৃণমূলে এসেছেন। তাঁর কথায়, ”২০২১-এর ফলের পর আমি হেস্টিংস থেকে প্রেস কনফারেন্স করে বলেছিলাম, মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় নন্দীগ্রামে জিতছেন, তখন ৫টা হবে। পরে জানলাম, জিতলেন শুভেন্দু অধিকারী। তাঁকে জিজ্ঞাসাও করেছিলাম। রহস্যময় হেসে বলেছিলেন, ‘জয়প্রকাশদা, অনেক কায়দা করতে হয়েছে।’ যখন শুভেন্দু বিজেপিতে যোগদান করতে চলেছেন বলে জানলাম, আমি মিটিংয়ে ছিলাম। দিলীপবাবুর অনীহা ছিল শুভেন্দুবাবুর যোগদানে। ওই সময় শুভেন্দুবাবুর বিরুদ্ধে নানা কেস অন্তরালে পাঠিয়ে দেওয়ার কাজ শুরু হল। আমি দেখিয়েছিলাম, নারদা নিয়ে শুভেন্দুর ভিডিও। জিজ্ঞাসা করেছিলাম বিজেপিতে আসার কারণ। তখন বলা হয়, নিজেকে বাঁচাতে বিজেপিতে আসতে হচ্ছে। তারপর উনি সনাতনী বিজেপি হয়ে উঠলেন। কেন্দ্রীয় তদন্তের হাত থেকে বাঁচব – এটাই তাঁর উদ্দেশ্য ছিল।”