মুখ্যমন্ত্রীর ক্ষতিপূরণ প্যাকেজে ব্যাপক সাড়া! দেউচায় ২৫০ একর সরকারের হাতে
দেউচা-পাচামি কয়লাখনির জন্য ক্ষতিপূরণের প্যাকেজ বাড়িয়ে দেওয়ায় জমিদাতাদের মধ্যে আগ্রহ বেড়েছে। শনিবার পর্যন্ত প্রায় দু’হাজার পরিবার জমি দিতে এগিয়ে এসেছে। প্রথম পর্যায়ে প্রয়োজন ৪৫০ একর। তার মধ্যে ২৫০ একর জমি চলে এসেছে বীরভূম জেলা প্রশাসনের হাতে। বাকিটা আর কয়েকদিনের মধ্যে চলে আসবে বলে আশা করছেন প্রশাসনিক কর্তারা। অন্যদিকে, ক্ষতিপূরণ প্যাকেজ অনুযায়ী জমিদাতা পরিবারের সদস্যদের একজনকে জুনিয়র কনস্টেবলের চাকরি দেওয়ার প্রস্তাবেও সাড়া মিলছে ভালো। ইতিমধ্যে ১১৪জন সেই চাকরির চিঠি নিয়েছে এপর্যন্ত। আরও ২০০ জন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই প্রস্তাবে রাজি হওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছে। সেই মতো তারা চাকরির চিঠি নেওয়ার পর আগামী সপ্তাহে প্রশিক্ষণের জন্য প্রথম দফায় মোট ৩১৪জনকে ব্যারাকপুর লাটবাগানে পাঠানো হবে। জমিদাতাদের এই আগ্রহের কথা বীরভূম জেলা প্রশাসন থেকে নবান্নকে জানানো হয়েছে।
গত ২১ ফেব্রুয়ারি পূর্বঘোষিত ক্ষতিপূরণের পরিমাণ অনেকটা বাড়িয়ে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়। আগে ঠিক ছিল, প্রতি বিঘা জমির জন্য ১০ লক্ষ টাকা দেওয়া হবে। তা বাড়িয়ে করা হয় ১৩ লক্ষ টাকা। জমিদাতাদের বিকল্প বাড়ির এলাকা ৬০০ থেকে বাড়িয়ে ৭০০ বর্গফুট করার কথাও বলেন মুখ্যমন্ত্রী। বিকল্প বাড়ির ব্যাপারে একটি মডেলও ভাবা হয়েছে। মাপে ছোট হলেও সেটি দেখতে হবে কটেজের মতো। এছাড়াও যেখানে বাড়ি তৈরি করে দেওয়া হবে, সেখানে স্কুল, প্রাথমিক স্বাস্থ্যকেন্দ্র, কমিউনিটি সেন্টার তৈরি করা হবে। সুন্দর করে সাজিয়ে তোলা হবে গোটা এলাকা। আর কেউ যদি নিজে বাড়ি তৈরি করেন তাহলে পাবেন ৭ লক্ষ টাকা। আগে ঘোষণা ছিল ৫ লক্ষ টাকা। পাশাপাশি পরিবার স্থানান্তর করার খরচ এক লক্ষের বদলে বাড়িয়ে করা হয়েছে দেড় লক্ষ টাকা। এই সংশোধিত প্রস্তাব ঘোষণার পরে ২৩ ফেব্রুয়ারি নবান্ন সভাঘরে কয়েকজন জমিদাতার হাতে ক্ষতিপূরণের চেক ও চাকরির নিয়োগপত্র তুলে দেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়।
এই সংশোধিত প্রস্তাব নিয়ে জেলা প্রশাসনের আধিকারিকরা গত কয়েকদিন ধরে জমিদাতাদের সঙ্গে বারবার আলোচনা করছেন। জমিদাতাদের নানাভাবে বোঝানো চলছে। মমতা বন্দ্যেপাধ্যায়ের এই নয়া প্রস্তাবে সাড়া দিয়ে এখন এগিয়ে আসছে জমিদাতারা। সেই সংখ্যা দাঁড়িয়েছে প্রায় দু’হাজার। যা আগের তুলনায় কয়েকশো বেড়ে গিয়েছে। বর্তমানে প্রকল্পের প্রথম পর্যায়ের জন্য জমি নেওয়ার উদ্যোগ শুরু হয়েছে। যা মূলত দেওয়ানগঞ্জ-হরিণসিংহা ব্লকের অন্তর্গত। এছাড়াও রয়েছে দেউচা-পাঁচামি ব্লক। এই দুটি ব্লক নিয়েই মূলত এই কয়লাখনি। দেউচা-পাঁচামি পৃথিবীর দ্বিতীয় বৃহত্তম কোল ব্লক হতে চলেছে। প্রকল্প বাস্তবায়িত হলে লক্ষাধিক মানুষের কর্মসংস্থান হবে বলে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। এই কয়লাখনি তৈরি হলে বীরভূমের বিস্তীর্ণ এলাকার আর্থ-সামাজিক পরিস্থিতি বদলে যাবে বলে মনে করছে অভিজ্ঞ মহল।