রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

বন্ধ কারখানার জমিতে নতুন শিল্প গড়ার উদ্যোগ নিল রাজ্য সরকার

March 13, 2022 | 2 min read

বাম আমলে কলকারখানা বন্ধ হয়ে যাওয়ার নজির বিস্তর। সেই সমস্ত বন্ধ কারখানার জমিতে নতুন শিল্প গড়ার দাবিও বহুদিনের। কর্মসংস্থান সৃষ্টির লক্ষ্যে প্রথমবার ২০১৭ সালে‌ দীর্ঘদিন ধরে পড়ে থাকা সেই জমির পুনর্ব্যবহারের উদ্যোগ নেয় রাজ্য। সংশোধনী আনা হয় ১৯৬৫ সালের ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল ল্যান্ড রিফর্মস রুলস’এ। তবে কাজ আশানুরূপ এগয়নি। এপ্রিল মাসে হতে চলেছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। তার আগে ফের একবার বন্ধ কলকারখানার জমিতে শিল্পস্থাপনের লক্ষ্যে বিনিয়োগ বাড়াতে ও কর্মসংস্থান সৃষ্টি করতে উদ্যোগী রাজ্য। শিল্পস্থাপনে রাজ্য সরকারের নয়া ‘আপ্তবাক্য’—হয় বিনিয়োগ, নয়তো জমি ফেরত।

১৯৫৫-৫৬ সালে ল্যান্ড সিলিং নিয়ম মেনে বহু জমি ‘খাস’ বলে চিহ্নিত হয়েছিল। সেই সময় পশ্চিমবঙ্গ জমিদারি অধিগ্রহণ আইন ১৯৫৩-এর ৬(৩) ধারা অনুযায়ী ছাড় দেওয়া হয় মিল, ফ্যাক্টরি বা ওয়ার্কশপকে। এই ক্ষেত্রে কলকারখানাগুলির তৎকালীন মালিকদের মূলত সেই জমি রাখতে দেওয়া হয়েছিল। এই জমি অন্য কাউকে হস্তান্তর না করার শর্ত থাকলেও, বিগত ৫০-৬০ বছরে বহু ক্ষেত্রেই তা মানা হয়নি। আবার এর মধ্যে বন্ধ হয়েছে বহু কলকারখানাও। চা বাগান বাদ দিয়ে মিল, ফ্যাক্টরি বা ওয়ার্কশপের অব্যবহৃত জমি নতুন করে শিল্পের কাজে ব্যবহার করতে ২০১৭ সালে ল্যান্ড রিফর্ম রুলসে সংশোধনী আনা হয়। সংশোধনী এনে পড়ে থাকা জমিতে শিল্প গড়তে চাইলে, ন্যূনতম সেলামি ও ভাড়ায় দীর্ঘমেয়াদি ‘লিজে’ তা দেওয়ারও ব্যবস্থা করা হয়। যাঁদের অধীনে জমি রয়েছে তাঁদেরকেই সুযোগ করে দেওয়া হয় নতুন হারে সেলামি ও ভাড়া দিয়ে পুনরায় কারখানা চালু করার জন্য। পুনরায় একই কারখানা চালু না করতে চাইলে, নতুন শিল্প গড়ারও সুযোগও করে দেওয়া হয়েছিল। ওই জমিতে বিদ্যুৎ উৎপাদন, তথ্যপ্রযুক্তি, স্টিল, সিমেন্ট, পর্যটন শিল্প, পোল্ট্রি প্রভৃতি‌ শিল্প গড়ার ছাড় দেওয়া হয়েছিল। এই জমি ব্যবহার‌ করে নতুন শিল্প গড়তে উৎসাহ দিতে ২০২০ সালে ফের একবার সংশোধনী এনে কমানো হয় সেলামি ও ভাড়ার হার। অনেক ক্ষেত্রে মাত্র এক টাকা সেলামির সুযোগও করে দেওয়া হয়।

রাজ্যের আধিকারিকদের মতে, বন্ধ কলকারখানার জমি ব্যবহারের আইনকে সরলীকরণ করার যে কাজ রাজ্য করেছে, তা যুগান্তকারী। তবে এই ব্যাপারে বিশেষ প্রচার করা হয়নি। সম্প্রতি বন্ধ কল-কারখানার জমি নিয়ে একটি উচ্চপর্যায়ের বৈঠক হয় নবান্নে। ভূমি ও ভূমি সংস্কার দপ্তরকে নির্দেশ দেওয়া হয়, পড়ে থাকা এহেন জমি চিহ্নিত করতে। এই চিহ্নিতকরণের কাজ দক্ষিণবঙ্গ থেকে শুরু করা হয়েছে বলেই সূত্রের খবর। হাওড়াতে দীর্ঘদিন ধরে বন্ধ থাকা বেশ কিছু কারখানার জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যার কোনটাই ৫০ থেকে ৬০ একরের কম নয়। উত্তর ২৪ পরগনা ও হুগলিতেও বেশকিছু জমি চিহ্নিত করা হয়েছে। যেগুলি ১০০ একরের উপর।

নবান্ন সূত্রে খবর, খুব শীঘ্রই এই তিনটি জেলার চারটি বন্ধ কারখানা মালিকদের ডাকতে চলেছে রাজ্য। এদের পরিষ্কার বার্তা দেওয়া হবে, হয় পড়ে থাকা জমিতে শিল্পস্থাপন, না হয় সরকারকে জমি ফেরত। তবে এই কারখানাগুলির নাম এখনই প্রকাশ্যে আনতে নারাজ প্রশাসন। এর পাশাপাশি সাতটি জেলার আধিকারিকদের পড়ে থাকা জমি চিহ্নিত করতে বলা হয়েছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Industry, #Factory

আরো দেখুন