বাংলার দাবি আদায়ে দিল্লির যাচ্ছে রাজ্যের বিশেষ প্রতিনিধি দল
বাংলার দাবি আদায় করতে নয়াদিল্লি যাচ্ছে রাজ্যের বিশেষ প্রতিনিধি দল। গঙ্গা দূষণ ঠেকাতে ও তার পার্শ্ববর্তী এলাকার খাল সংস্কারের কাজ অনেক আগেই হাতে নিয়েছে রাজ্য। তবে অন্তরায় হয়ে দাঁড়িয়েছে কেন্দ্রের ‘অসহযোগিতা’। এই বঞ্চনা রুখতে কেন্দ্রের সঙ্গে সরাসরি আলোচনায় বসতে চলেছেন রাজ্যের আমলারা। এখন রাজ্যের লক্ষ্য হল, প্রায় ৬৮৮ কোটি টাকা মূল্যের টালি নালা সংস্কার প্রকল্প সহ ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গার (এনএমসিজি) অধীন প্রকল্পের জন্য অর্থ কেন্দ্রের কাছ থেকে বের করে আনা। রাজ্যের এক উচ্চপদস্থ আধিকারিক জানান, এনএমসিজির প্রকল্পগুলির ১০০ শতাংশ খরচই বহন করার কথা কেন্দ্রের। তাও রাজ্যের প্রতি কেন্দ্রের এই বিমাতৃসুলভ আচরণ একেবারেই মেনে নেওয়া যায় না।
নবান্ন সূত্রে খবর, আগামী সোমবার রাজ্যের প্রতিনিধিদল নয়াদিল্লিতে বৈঠক করতে চলেছে এনএমসিজি ডিরেক্টর জেনারেলের সঙ্গে। রাজ্যের প্রতিনিধি দলে থাকছেন কেএমডিএ-র সিইও অন্তরা আচার্য, পুর ও নগরোন্নয়ন দপ্তরের যুগ্ম সচিব নন্দিনী ঘোষ, ওই দপ্তরের অর্থ বিভাগের অফিসাররা ও সংশ্লিষ্ট চিফ ইঞ্জিনিয়ার। রবিবারই রাজ্যের প্রতিনিধি দল নয়াদিল্লি রওনা দেবে। এই প্রকল্পে প্রাধান্য পেতে চলেছে টালি নালা প্রকল্প।
টালি নালা ছাড়াও, রাজ্যে জলাভূমির দূষণ রুখতে অন্যান্য প্রায় ৯০০ কোটি টাকার প্রকল্প নিয়েও কেন্দ্র নিশ্চুপ বলেও রাজ্যের আধিকারিকদের দাবি। এর মধ্যে রয়েছে দামোদর ও বরাকর নদীর জন্য আসানসোল-দুর্গাপুর স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্ট প্রকল্প। এই প্রকল্পের মূল্য হল ৬৭২ কোটি ৪৯ লক্ষ টাকা। এর অধীনে তৈরি হওয়ার কথা ১৭৫ এমএলডি ক্ষমতাসম্পন্ন আটটি স্যুয়ারেজ ট্রিটমেন্ট প্লান্টের। বর্ধমানের বাঁকা নদী দূষণ রুখতেও নেওয়া হয়েছে ২৩৪ কোটি টাকা মূল্যের একটি প্রকল্প।
সোমবারের বৈঠকে কেন্দ্রের বক্তব্য শোনার পর, রাজ্যের আধিকারিকরা এই প্রকল্পগুলি নিয়ে আরও এক দফা বিস্তারিত আলোচনায় বসবেন, তাতেই ঠিক হবে এই নিয়ে রাজ্যের আগামী দিনের রূপরেখা।
শুক্রবার বিধানসভায় রাজ্য বাজেট পেশের পর, বাংলার ৯০ হাজার কোটি টাকা বকেয়া নিয়ে কেন্দ্রকে একহাত নেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। প্রসঙ্গত, উত্তরপ্রদেশের ভোটের আগে বারাণসীতে কাশী বিশ্বনাথ করিডর প্রকল্পের উদ্বোধন করার দিন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী কলস মাথায় দিয়ে ডুব দিয়েছিলেন গঙ্গায়। অথচ বাংলায় ন্যাশনাল মিশন ফর ক্লিন গঙ্গা (এনএমসিজি) প্রকল্পের টাকা বকেয়া পড়ে আছে দীর্ঘদিন। মোদীর গঙ্গাস্নান নিয়ে কটাক্ষ করে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় বলেছিলেন, ‘ওঁরা শুধু ভোটের সময় গঙ্গাকে মনে রাখেন, ভোটের পরে ভুলে যান… হোটেলে প্রধানমন্ত্রী কেদারনাথের মন্দিরের ধ্যানে বসেন, গঙ্গায় ডুব দেন। গঙ্গাকে অপবিত্র করে দিয়েছেন এঁরা।’