এখন লোকসভা ভোট হলে বাংলা থেকে মিলবে কটা আসন? চিন্তায় বিজেপি
দলের নিচুতলার সংগঠন যেভাবে দুর্বল হয়ে গিয়েছে, তাতে এই মুহূর্তে লোকসভার ভোট হলে ২০১৯ সালের প্রাপ্ত আসনের অর্ধেকও ধরে রাখা যাবে কি না সন্দেহ। বিভিন্ন জেলা থেকে দলের সাংগঠনিক অবস্থা নিয়ে পার্টির কাছে যে অভ্যন্তরীণ রিপোর্ট রয়েছে, তা থেকেই এমন আশঙ্কা গেরুয়া শিবিরের অন্দরে। সংগঠন মেরামত না হলে ২০২৪—এর লোকসভা ভোটে কতটা সাফল্য আসবে তা নিয়ে প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে বঙ্গ বিজেপির অন্দরে।
সারা রাজ্যে ৭৮ হাজারের কিছু বেশি বুথ রয়েছে। এই মুহূর্তে বিভিন্ন জেলায় সংগঠনের যা অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৭০ শতাংশ বুথ কমিটি নিষ্ক্রিয়। মণ্ডল কমিটির সদস্যরা সিংহভাগই বসে গিয়েছেন। তৃণমূল থেকে যাঁরা দলে এসেছিলেন তাঁরা গেরুয়া শিবির ছেড়ে ফিরে গিয়েছেন ফের পুরনো দলে। সদ্য শেষ হওয়া রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ভোটে সিংহভাগ বুথে এজেন্ট দেওয়ার লোকই পায়নি বিজেপি। কারণ, একুশের ভোটে বিপর্যয়ের পর অধিকাংশ কর্মীর মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে আসারা বহু জায়গায় গুরুত্ব পেয়েছিলেন। সারা রাজ্যে ৭৮ হাজারের কিছু বেশি বুথ রয়েছে। এই মুহূর্তে বিভিন্ন জেলায় সংগঠনের যা অবস্থা তাতে দেখা যাচ্ছে, প্রায় ৭০ শতাংশ বুথ কমিটি নিষ্ক্রিয়। মণ্ডল কমিটির সদস্যরা সিংহভাগই বসে গিয়েছেন। তৃণমূল থেকে যাঁরা দলে এসেছিলেন তাঁরা গেরুয়া শিবির ছেড়ে ফিরে গিয়েছেন ফের পুরনো দলে। সদ্য শেষ হওয়া রাজ্যের ১০৮টি পুরসভার ভোটে সিংহভাগ বুথে এজেন্ট দেওয়ার লোকই পায়নি বিজেপি। কারণ, একুশের ভোটে বিপর্যয়ের পর অধিকাংশ কর্মীর মনোবল ভেঙে গিয়েছে। তৃণমূল ছেড়ে আসারা বহু জায়গায় গুরুত্ব পেয়েছিলেন।
প্রার্থী হয়েছিলেন। হেরে যাওয়ার পর তাঁদের অনেকেই বিজেপির সঙ্গে সম্পর্ক ত্যাগ করেছেন। ফলে দলের পুরনো কর্মীরা হতাশ। অনেকেই দলের কাজ ছেড়ে ব্যক্তিগত কাজে মন দিয়েছেন। তাই পুরভোটে বাঁকুড়া—পুরুলিয়া—ঝাড়গ্রামের মতো জঙ্গলমহলে ওয়ার্ডে ওয়ার্ডে হার হয়েছে বিজেপির।
আবার কোচবিহারে কিছুটা আশানুরূপ ফল হলেও উত্তরবঙ্গের অধিকাংশ জেলাতেই দলের সাংগঠনিক কাঠামোটাই নিচুতলায় কার্যত কমজোরি হয়ে গিয়েছে। তার উপর আদি—তৎকাল বিজেপিকে কেন্দ্র করে দলের গোষ্ঠীদ্বন্দ্ব তো অন্যতম কারণ। দলের এক রাজ্য নেতার কথায়, এই মুহূর্তে যদি লোকসভা ভোট হয় তাতে গত ২০১৯ সালের নির্বাচনে প্রাপ্ত ১৮টি আসনের অর্ধেক আসনও দল পাবে কি না তা নিয়ে সন্দেহ রয়েছে। সে যতই মোদির মুখের উপর ভরসা করুক না কেন দল। এই পরিস্থিতি উপলব্ধি করতে পেরে নড়েচড়ে বসেছে বঙ্গ বিজেপির ক্ষমতাসীন গোষ্ঠী। রাজ্য বিজেপির সভাপতি সুকান্ত মজুমদার কার্যত স্বীকার করে নিয়েছেন, “২০১৪ থেকে ২০২১ সাল পর্যন্ত বিজেপি বাংলায় দ্রুত বেড়েছে। কিন্তু সংগঠনকে ততটা শক্তিশালী করা যায়নি। নিচুস্তরে গিয়ে সংগঠনের পুনর্নির্মাণের চেষ্টা করছি।” আর এই গর্তে পড়ে যাওয়া সংগঠনকে গর্ত থেকে টেনে তুলতে জেলা সফর শুরু করেছেন সুকান্ত—দিলীপ—অমিতাভ চক্রবর্তীরা। নিচুতলায় সাংগঠনিক কাঠামো বদলের সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
এক, ওয়ার্ডস্তরে সাংগঠনিক কাঠামো করা হচ্ছে। দুই, অঞ্চলে সাংগঠনিক কমিটি তৈরি করা হবে। তিন, কর্মীদের বাড়ি বাড়ি প্রবাস শুরু করছেন নেতারা। চার, যে যে ওয়ার্ডে দল পরাজিত হয়েছে সেখানে বাড়তি নজর। পাঁচ, মার্চ মাসের মধ্যে নিচুস্তরে সমস্তরকম কমিটি তৈরির কাজ শেষ করা হবে।
কিন্তু একুশের ভোটে পর্যদুস্ত হওয়ার এতদিন পরে কেন বোধোদয়? ঘরে—বাইরে সমালোচনার মুখে পড়েই কি অবশেষে ঘুরে দাঁড়ানোর চেষ্টা? এই প্রশ্নও উঠছে গেরুয়া শিবিরের অন্দরে।