কলকাতা বিভাগে ফিরে যান

রেকর্ড জমায়েত, বিক্রিবাটা – কোভিডোত্তর পর্বে সফল কলকাতা বইমেলা

March 14, 2022 | 2 min read

বই বিক্রি ও জনসমাগমের নিরিখে ভেঙেই গেল সর্বকালীন রেকর্ড। সল্টলেকের বইমেলা প্রাঙ্গণে এবারের কলকাতা আন্তর্জাতিক পুস্তকমেলা (Kolkata Book Fare) সর্বার্থেই নজির গড়েছে। এবারের মতো সমাপ্তি ঘণ্টা বাজানোর আগেই উদ্যোক্তা পাবলিশার্স অ্যান্ড বুক সেলার্স গিল্ডের সভাপতি সুধাংশুশেখর দে জানান, ৪৫ বছরের বইমেলায় এত ভিড় আগে হয়নি। ১৪ দিনে প্রায় ২৩ লক্ষ মানুষ এসেছেন, বই বিক্রি হয়েছে প্রায় ২৩ কোটি টাকার। সব রেকর্ড ভেঙে গিয়েছে।

রবিবার যেভাবে স্টলে স্টলে কার্যত জনপ্লাবন আছড়ে পড়েছে তারপর নিশ্চিত যে, বিক্রি ২৫ কোটি ছাড়াতে পারে। বস্তুত দে’জ পাবলিশিং, দেব সাহিত্য কুটির, পত্রভারতী, মিত্র ও ঘোষ-সহ সব বড় স্টলেই দীর্ঘ লাইন দিয়ে বই কিনেছেন মানুষ। করোনা কাল কাটিয়ে বাঙালি প্রাণের উৎসবে যোগ দিয়েছে, দুই বছরের ব্যবধানে। এর মধ্যে সিংহভাগ নতুন প্রজন্মের। উল্লেখযোগ্যভাবে যার হাত ধরে শুরু হয়েছিল মেলা, সেই মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের লেখা বইগুলি অন্যতম বেস্ট সেলার।

মূলত, গত বিধানসভা ভোট ও বর্তমান রাজনীতির প্রেক্ষিতে বইগুলি ছিল আকর্ষণের কেন্দ্রে। এর মধ্যে ‘জীবন সংগ্রাম’ বইটির নাম আলাদাভাবে করতে হয়। মুখ্যমন্ত্রীর লেখা ১১৩টি বই মিলেছে জাগো বাংলার স্টলে। সুদৃশ্য সেই স্টল আসলে লক্ষ্মীর ভাণ্ডারের মণ্ডপ। প্রতিদিনই লোকসংস্কৃতির মঞ্চে মাটির গান শুনিয়েছেন লোকশিল্পীরা। রবিবার উপচে পড়েছিল সেই মণ্ডপ। তবু সুশৃঙ্খলভাবে সবাই লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন।

এবার বইমেলায় মমতার ১২টি বই প্রকাশিত হয়েছে, যার মধ্যে ১১টি প্রকাশনা দে’জ-এর। বাকি ইংরেজি বইটি প্রকাশ করেছে বি বুকস। খেলা হবে বা দুয়ারে সরকার তো বটেই, কোভিডের দিনলিপি, শিশুমন, সহিষ্ণুতা, মানুষের পক্ষে উন্নয়নের লক্ষ্যে, নো সিএএ নো এনআরসি—সহ সদ্য প্রকাশিত অন্য বইগুলি নিয়েও উচ্ছ্বসিত স্টলে প্রবেশ করা মানুষ। এখনও বোঝা গেল, বাংলায় অন্যতম বেস্ট সেলার উপলব্ধি ও জীবন সংগ্রাম বা পল্লবী। জাগো বাংলা স্টলে ছিল ইংরেজি, হিন্দি, সাঁওতালি, পাঞ্জাবি ভাষার বই বা উর্দু শায়েরি।

এবার দেখা গেল, মেলায় পুরনোর সঙ্গে নতুনের যুগলবন্দি বাংলা সাহিত্যে। চিরকালীন সাহিত্যিকদের পাশাপাশি লোকে কিনেছেন নবীন বা একটু পুরনো সাহিত্যিকদের লেখা। ডিজিটাল দুনিয়াতেও যে মুদ্রিত বইয়ের চাহিদা বিন্দুমাত্র কমছে না, বরং বাড়ছে, সেটাও স্পষ্ট হয়েছে। গিল্ডের পক্ষে পুরস্কৃত করা হয়েছে লেখক বাণী বসু এবং প্রকাশক সুরেশ দাসকে। এবারের থিম কান্ট্রি বাংলাদেশ গোটা ব্যবস্থাপনায় অত্যন্ত সন্তোষ প্রকাশ করেছে। এর মধ্যেই আগামী বছরের থিম কান্ট্রি হিসাবে স্পেনের নাম ঘোষণা করা হয়। বস্তুত ১৬ বছর পর আবার থিম কান্ট্রি সংস্কৃতি-চিত্রকলার দেশ স্পেন। এসেছিলেন ভারতে নিযুক্ত স্পেনের রাষ্ট্রদূত হোসে মারিয়া।

আঞ্চলিক বড় স্টল হিসাবে পুরস্কৃত করা হয় অনুষ্টুপকে। আর হ্যাঁ, বইমেলা আগামী বছরও হবে সল্টলেকের করুণাময়ীতে, যেখানকার নাম বইমেলা প্রাঙ্গণ হিসাবে ঘোষণা করেছেন মুখ্যমন্ত্রী। আগামী বছর ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর রুট শিয়ালদহ পর্যন্ত মিলবেই, সেক্ষেত্রে আরও মানুষ আসবেন। আগেভাগেই তার প্রস্তুতি নিতে চাইছে গিল্ড, জানালেন আরেক কর্তা ত্রিদিব কুমার চট্টোপাধ্যায়। এদিন সমাপ্তি অনুষ্ঠানে হাজির ছিলেন কলকাতা পুরসভার মেয়র ও মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম, বিধাননগরের মেয়র কৃষ্ণা চক্রবর্তী, মন্ত্রী সুজিত বসু প্রমুখ।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Kolkata International Book fair, #Kolkata Book fair 2022

আরো দেখুন