ভোট শেষ, রেশনে অতিরিক্ত খাদ্য কি আর দেবে কেন্দ্র? উঠছে প্রশ্ন
প্রধানমন্ত্রী গরিব কল্যাণ অন্ন যোজনা প্রকল্পটি মার্চ মাসের পর কি আদৌ চালাবে কেন্দ্রীয় সরকার? উত্তরপ্রদেশ সহ পাঁচটি রাজ্যের ভোট পর্ব শেষ হওয়ার পর উঠছে এমন প্রশ্ন। করোনা পরিস্থিতিতে চালু হওয়া প্রকল্পটির মাধ্যমে রেশন গ্রাহকদের মাসে মাথাপিছু পাঁচ কেজি করে অতিরিক্ত চাল-গম বিনা পয়সায় দেওয়া হয়। দেশের প্রায় ৮০ কোটি (পশ্চিমবঙ্গে ৬ কোটি) মানুষ এই প্রকল্পের সুবিধা পায়। গত নভেম্বর মাসে প্রকল্পটির মেয়াদ শেষ হওয়ার কয়েকদিন আগে কেন্দ্রীয় সরকার এর সময়সীমা মার্চ পর্যন্ত সম্প্রসারিত করে। পাঁচটি রাজ্যের গুরুত্বপূর্ণ বিধানসভা নির্বাচনের দিকে তাকিয়েই এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছিল বলে ওয়াকিবহাল মহল মনে করছে।
তবে রেশন গ্রাহকদের অতিরিক্ত বরাদ্দর জন্য প্রয়োজনীয় খাদ্যশস্য কেন্দ্রীয় সরকারের কাছে মজুত রয়েছে। সূত্রের খবর, চাল-গম মিলিয়ে ৫ কোটি ২০ লক্ষ টন খাদ্যশস্য রয়েছে। আরও নতুন চাল ও গম এবার মজুত হবে। কিন্তু বিপুল টাকা ভর্তুকি দিয়ে কেন্দ্র রেশন গ্রাহকদের বিনা পয়সায় চাল-গম দেওয়া চালিয়ে যাবে কি না, তা নিয়ে সংশয় আছে। এবারের কেন্দ্রীয় বাজেটে খাদ্যে ভর্তুকি বাবদ বরাদ্দ অর্থ অনেকটাই কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। ২০২১-২২ সালে খাদ্যে ভর্তুকি দিতে কেন্দ্রের বাজেট প্রস্তাব ছিল ২ লক্ষ ৪২ হাজার ৮৩৬ কোটি টাকা। সেখানে সংশোধিত বাজেটে এই খরচ গিয়ে দাঁড়ায় ২ লক্ষ ৮৬ হাজার ৪৬৯ কোটিতে। কিন্তু ২২-২৩ সালে কেন্দ্রীয় বাজেটে খাদ্য ভর্তুকি খাতে ২ লক্ষ ৬ হাজার কোটি টাকা বরাদ্দ হয়েছে। বাজেটে বরাদ্দ কমলেও আগামী ৬ মাস যাতে গরিব কল্যাণ প্রকল্পটি কেন্দ্র চালিয়ে যায়, সে জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি পাঠিয়েছেন অল ইন্ডিয়া ফেয়ার প্রাইস শপ ডিলারস ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক বিশ্বম্ভর বসু। জাতীয় খাদ্য নিরাপত্তা আইনে গ্রাহকদের জন্য খাদ্যশস্যের যে সাধারণ বরাদ্দ রয়েছে, তাতেও কেন্দ্র ভর্তুকি দেয়। সাধারণ বরাদ্দের পরিমাণ মাথাপিছু ৫ কেজি। অন্ত্যোদয় গ্রাহকদের জন্য পরিবার পিছু ৩৫ কেজি। একমাত্র পশ্চিমবঙ্গে রাজ্য সরকার অতিরিক্ত ভর্তুকি দিয়ে সাধারণ বরাদ্দের খাদ্যশস্য গ্রাহকদের বিনা পয়সায় সরবরাহ করে থাকে। এর পুরো আর্থিক দায়ও রাজ্য সরকারের। রেশন গ্রাহকদের ভর্তুকি খাতে এবার রাজ্য বাজেটে প্রায় ১১ হাজার কোটি টাকা রাখা হয়েছে।