রাজ্য বিভাগে ফিরে যান

লুপ্তপ্রায় মাছ সংরক্ষণে রাজ্যে প্রথম মাদারিহাটে গড়ে উঠল ফিশ অভয়াশ্রম

March 15, 2022 | 2 min read

সংগৃহীত ছবি

রাজ্যের প্রথম ‘ফিশ অভয়াশ্রম’ গড়ে উঠেছে মাদারিহাটে। মাদারিহাটের উত্তর ছেঁকামারি গ্রামে স্থানীয় বিশ্বকর্মা ঝোরায় মৎস্যদপ্তরের উদ্যোগে মাছের এই অভয়াশ্রম বানানো হয়েছে। জেলা প্রশাসন ‘জলধারিনী ডুয়ার্স’ স্কিমে ১০০ দিনের কাজের প্রকল্পের অর্থে প্রাকৃতিকভাবে গড়ে ওঠা ঝোরাটি সংস্কার করে দেয়। ৪০০ মিটার লম্বা এই প্রাকৃতিক জলাশয়ে জেলা প্রশাসন বায়ো ডাইভার্সিটি পার্ক হিসেবে গড়ে তুলেছিল। সেই ঝোরায় জেলা মৎস্যদপ্তরের উদ্যোগে রাজ্যে মাছেদের প্রথম এই অভয়াশ্রম গড়ে উঠেছে।

কেন মাছেদের অভয়াশ্রম? বিলুপ্ত হওয়া বিভিন্ন নদীয়ালি মাছের সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মৎস্যদপ্তর মাছেদের এই নিরাপদ জায়গা গড়ে তুলেছে। মোট ২২ প্রজাতির নদীয়ালি মাছের চারা এই ফিশ অভয়াশ্রমে ছাড়া হয়েছে। ঝোরায় ছাড়া আছে খলসে, কুর্শা, রানি, ভেদা, পাবদা, মৌরালা, গচি, বেলে, শিঙি, মাগুর, বাম, শোলের মতো বিলুপ্ত হওয়া নদীয়ালি মাছ।

মৎস্যদপ্তরের মাদারিহাট ব্লক আধিকারিক বিপুল মজুমদার বলেন, বিলুপ্ত হওয়া নদীয়ালি মাছের সংরক্ষণের উদ্দেশ্যে মাছেদের এই অভয়াশ্রম গড়ে তোলা হয়েছে। যা আমাদের রাজ্যে প্রথম। মাছেদের এই অভয়াশ্রমে বিভিন্ন নদীয়ালি মাছের চারা বড় করে পরে ডুয়ার্সের বিভিন্ন নদীতে ছাড়া হবে। এখানে নদীয়ালি মাছের প্রজনন কেন্দ্রও গড়ে তোলা হবে। মূলত বিলুপ্ত হওয়া নদীয়ালি মাছের সংরক্ষণের জন্যই এই ফিশ অভয়াশ্রম।

মৎস্যদপ্তরের ওই ব্লক আধিকারিক বলেন, মজার বিষয় সংরক্ষণের জন্য ফিশ অভয়াশ্রমের মাছ ধরা যাবে না, খাওয়া যাবে না। ফিশ অভয়াশ্রমের মাছেদের খাবারও দেওয়া হবে না। প্রাকৃতিক উপায়েই ফিশ অভয়াশ্রমের মাছ নিজেদের খাবার জোগাড় করে নেবে। পর্যটকরা শুধু মাছের খেলা দেখবেন।

মাছেদের প্রাকৃতিক খাদ্যশৃঙ্খল তৈরির জন্য ঝোরায় এই ফিশ অভয়াশ্রমে জলজ শ্যাওলা তৈরির পাশাপাশি হাইড্রিলা ভেলিস ও নেরিয়ার নামক দুই প্রজাতির ঘাস তৈরি করা হয়েছে। মৎস্যদপ্তরের কর্তারা জানিয়েছেন, এই ঘাস আসলে ফিশ অভয়াশ্রমের মাছেদের খাদ্য।

এই প্রকল্পের জন্য মৎস্যদপ্তরের খরচ হয়েছে ৬৮ হাজার ৫০০ টাকা। গত শনিবার ঝোরায় নদীয়ালি মাছের চারা ছাড়ার সময় উপস্থিত ছিলেন মৎস্যদপ্তরের জেলা সহ অধিকর্তা সুনীল বর্মন, দপ্তরের জেলা আধিকারিক কাজি রফিকুল ইসলাম, মাদারিহাটের বিডিও শরণ তামাং প্রমুখ। পর্যটকদের বিনোদনের জন্য প্রশাসন জলধারিনী ডুয়ার্স স্কিমে এই ফিশ অভয়াশ্রমের জলাশয় বা ঝোরাটিকে আগেই বায়ো ডাইভার্সিটি পার্ক হিসেবে সংস্কার করেছে। ঝোরায় পর্যটকদের বিনোদনের জন্য নৌকা বিহারেরও ব্যবস্থা করা হয়েছে।

ব্লক প্রশাসন জানিয়েছে, পর্যটকরা মাথাপিছু মাত্র ১০ টাকা দিয়ে নৌকাবিহারের আনন্দ উপভোগ করতে পারবেন। নৌকাবিহারের সময় পর্যটকরা হরেক নদীয়ালি মাছের জলকেলি উপভোগ করতে পারবেন।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#West Bengal, #Madarihat, #Fish Sanctuary

আরো দেখুন