রাজ্যের সব মহকুমা হাসপাতালে এবার বিনামূল্যে সিটি স্ক্যান, ডায়ালিসিস!
রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী তথা স্বাস্থ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবার নিখরচায় সিটি স্ক্যান এবং ডায়ালিসিস পরিষেবা নিয়ে যাচ্ছেন রাজ্যের প্রত্যেক মহকুমায়। সরকারি-বেসরকারি যৌথ উদ্যোগে (পিপিপি মডেল) আগামী এক বছরের মধ্যে এই পরিকল্পনা বাস্তবায়িত হতে চলেছে। বর্তমানে জেলা হাসপাতাল এবং পুরনো মেডিকেল কলেজগুলোর প্রতিটিতেই রয়েছে বিনামূল্যের এই দুই পরিষেবা। সরকারি ও যৌথ উদ্যোগ মিলিয়ে রাজ্যজুড়ে প্রায় ৫০টি সিটি স্ক্যান পরিষেবা কেন্দ্র রয়েছে স্বাস্থ্যদপ্তরের। অন্যদিকে, সরকারি ক্ষেত্রে ডায়ালিসিস সেন্টার রয়েছে ৫১টি। ৪৩টি পিপিপি মডেলে এবং 8টি সম্পূর্ণ সরকারি উদ্যোগে চলছে। এই দুটি পরিষেবাই আগামী এক বছরের মধ্যে রাজ্যের সমস্ত মহাকুমা হাসপাতালে পৌঁছে দেওয়া হবে। অর্থাৎ, সিটিস্ক্যান এবং ডায়ালিসিসের পরিকাঠামো কমপক্ষে আরও ৩০টি করে হাসপাতালে চালু হতে চলেছে রাজ্যে।
স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থ কর্তা বৃহস্পতিবার এই খবর জানিয়ে বলেন, আমাদের লক্ষ্য প্রাথমিক, জরুরি ও খরচসাপেক্ষ চিকিৎসা এবং রোগ পরীক্ষার জন্য মহকুমার বাইরে যেন যেতে না হয় মানুষকে। মহকুমা স্তরেই যেন এইসব পরিষেবা বিনা পয়সায় পাওয়া যায়। সিটি স্ক্যান ও ডায়ালিসিস পরিষেবা মহকুমা স্তর পর্যন্ত নিয়ে যাওয়ার পর আমাদের লক্ষ্য হবে বিনামূল্যের এমআরআই পরিষেবাকে রাজ্যজুড়ে আরও ছড়িয়ে দেওয়া। নতুন পেট সিটি স্ক্যান কেন্দ্র চালু করারও পরিকল্পনা রয়েছে।
প্রসঙ্গত, সিটি স্ক্যান এবং ডায়ালিসিস এই দুটি পরীক্ষাই বেশ খরচসাপেক্ষ। মোটামুটি নির্ভরযোগ্য প্রতিষ্ঠান থেকে করাতে দেড় হাজার টাকার নীচে হয় না। আর প্রথম সারির প্রতিষ্ঠানে? খরচ বেড়ে যাবে কয়েক গুণ। বাংলার ব্লক ও মহকুমা স্তরের হাসপাতালগুলিতে চিকিৎসা পরিষেবা বিনা পয়সায় হলেও এইসব দামি পরীক্ষা করাতে মানুষকে জেলা সদর বা মেডিকেল কলেজগুলোতে যেতে হয়। জরুরি ভিত্তিতে তা অনেক সময়ই চিন্তার হয়ে দাঁড়ায়। তাছাড়া যাওয়া-আসার খরচ আছেই। স্বাস্থ্যদপ্তরের এক পদস্থ কর্তা বলেন, পিপিপি মডেলের পরিষেবাগুলি আমাদের রাজ্যে ইতিমধ্যেই হিট। ২০১২ সালের আগে বাংলায় পিপিপি মডেল ও সরকারি উদ্যোগে রোগ পরীক্ষা কেন্দ্র ছিল মোটে ১৪-১৫টি। এখন তা বেড়ে হয়েছে ১৫২টি। বাংলা সরকারি ক্ষেত্রে বিনা পয়সায় যা ডায়ালিসিসের সংখ্যায় দেশে তৃতীয়। সিটি ও ডায়ালিসিস ছাড়াও শীঘ্রই যেসব জায়গায় এমআরআই কেন্দ্র চালু করতে চলেছে রাজ্য সেগুলি হল কলকাতা পুলিস হাসপাতাল এবং বালুরঘাট হাসপাতাল। বালুরঘাটে এমআরআই চালুর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন খোদ মমতা। তিনি বুঝেছিলেন, সেখানে এমআরআই চালু হলে উত্তরবঙ্গের বেশকিছু জেলার মানুষ উপকৃত হবেন। তাই বালুরঘাটে দ্রুত এমআরআই পরিষেবা চালু করাটা এখন পাখির চোখ দপ্তরের। এছাড়াও দার্জিলিংয়ে সিটি স্ক্যান নেই। সেখানেও সিটি স্ক্যান পরিষেবা বসবে। বসবে নতুন চালু হওয়া মেডিক্যাল কলেজগুলোতেও।