পড়ুয়াদের ধর্মঘটের জের, বিশ্বভারতীতে অব্যাহত অচলাবস্থা
পড়ুয়ারা আন্দোলন চালিয়ে গেলেও অনড় বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ। পরীক্ষা না দেওয়া পড়ুয়াদের অনুত্তীর্ণ গণ্য করা হবে, এই মর্মে সোমবার বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে। এদিকে পরীক্ষা বয়কট সহ তিন দফা দাবিতে আন্দোলনে গতি আনতে অনশন শুরু করেন ছাত্রনেতা সোমনাথ সৌ। অচলাবস্থা কাটাতে এদিন বিকেলে বাংলাদেশ ভবনে বৈঠক ডাকে কর্তৃপক্ষ। বিষয়টি জানার পর বাংলাদেশ ভবনের ভিতরে ঢুকে বিক্ষোভ শুরু করেন আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। দীর্ঘক্ষণ অপেক্ষা করে থাকলেও পড়ুয়াদের বিক্ষোভ বন্ধ না হওয়ায় কর্তৃপক্ষ বৈঠক বাতিল করতে বাধ্য হয় বলে প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়। তাই কোনও সমাধানসূত্র বের হয়নি। ফলে শান্তিনিকেতনে অচলাবস্থা অব্যাহত।
এদিন পরীক্ষার বিজ্ঞপ্তিতে বিশ্বভারতী জানায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সাধারণ নিয়ম অনুযায়ী পরীক্ষার দিন কোনও পরীক্ষার্থী অনুপস্থিত থাকলে তাঁকে অনুত্তীর্ণ হিসেবে ধরা হবে। তা সংশ্লিষ্ট পড়ুয়ার মার্কশিটে প্রতিফলিত হবে। বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষের এই সিদ্ধান্ত কোনওভাবেই মানা হবে না বলে জানান আন্দোলনকারী পড়ুয়ারা। তাঁদের অভিযোগ, আদালত স্পষ্টভাবে উল্লেখ করেছে পরীক্ষার্থীদের জন্য হস্টেলের ব্যবস্থা করার পরই পরীক্ষার আয়োজন করতে পারবে কর্তৃপক্ষ। তা না করে পরীক্ষা নেওয়ার নোটিস জারি করা হয়েছে। এটা একপ্রকার গা জোয়ারির শামিল। এই সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে বৃহত্তর আন্দোলনের পথে হাঁটার হুঁশিয়ারি দিয়েছেন তৃণমূল ছাত্র পরিষদের সভাপতি মীনাক্ষি ভট্টাচার্য। তৃণমূল ছাত্র পরিষদ ও এসএফআইয়ের পাশাপাশি সাধারণ ছাত্রছাত্রীদের তিন দফা দাবিতে সরব হয়েছে অখিল ভারতীয় বিদ্যার্থী পরিষদও। এদিন তারা একটি প্রতিবাদ মিছিল করে। পরে উপাচার্য বিদ্যুৎ চক্রবর্তীর বাসভবন পূর্বিতার সামনে দীর্ঘক্ষণ প্ল্যাকার্ড হাতে বিক্ষোভ দেখায়। তবে ১৫দিন ধরে চলা আন্দোলনে বিশ্বভারতী কর্তৃপক্ষ কোনও নমনীয় মনোভাব না দেখানোর অভিযোগে অনশনে বসলেন ছাত্রনেতা সোমনাথ সৌ। তিনি জানান, ছাত্রছাত্রীদের দাবি না মেটা পর্যন্ত অনশন চলবে। অচলাবস্থা কাটাতে বাংলাদেশ ভবনে কর্তৃপক্ষের তরফে একটি বৈঠক ডাকা হলেও পড়ুয়ারা সেখানে গিয়ে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করেন। ফলে বাধ্য হয়েই কর্তৃপক্ষকে ওই বৈঠক বাতিল করতে হয়। পরে একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করে কর্তৃপক্ষ জানায় অচলাবস্থা কাটাতে অধ্যক্ষ, প্রধানদের নিয়ে উপাচার্যের সভাপতিত্বে বাংলাদেশ ভবনে একটি সভা আহ্বান করা হয়েছিল। সেই মুহূর্তে আন্দোলনকারীরা প্রচুর পরিমাণে জমায়েত হওয়ার কারণে সুস্থ আলোচনা করা সম্ভব হয়নি। যা থেকে বোঝা যায় অচলাবস্থা কাটাতে পড়ুয়ারা আগ্রহী নয়। সন্ধ্যার দিকে বিক্ষুব্ধ পড়ুয়ারা বৈঠকে উপস্থিত হওয়া অধ্যক্ষ ও অন্যান্য আধিকারিকদের বাংলাদেশ ভবন ঘেরাও করে রাখেন।