ঘুমিয়ে সর্বহারার নেতারা! বামেদের সম্মেলনের মঞ্চেই হতাশার ছবি
বিরস, কাঠখোট্টা আলোচনা। যা কিনা বাম নেতৃত্বের মিটিং, সম্মেলনের বলা যায় ইউএসপি (USP)। শ্রেণিসাম্য প্রতিষ্ঠা, মেহনতি মানুষের অধিকার পাইয়ে দেওয়ার লড়াইয়ে নেমে তাত্ত্বিক বিষয়ে কাটাছেঁড়াটার পথে প্রথম থেকেই হাঁটছে লাল পার্টি। তাই বছরে এতবার নানা স্তরে সম্মেলন। বামপন্থী রাজনীতির সঙ্গে অঙ্গাঙ্গীভাবে যুক্ত হলে, তাতে যোগ দিতে হয়। এদিকে নেতাদের বয়সও বাড়ছে। ক্লান্তি স্বাভাবিক। সমাজ বদলে দেওয়ার থিওরি আলোচনায় আর কতক্ষণই বা মন দেওয়া যায়? ফলে আলোচনা চলাকালীন মঞ্চেই ঘুমিয়ে পড়লেন বর্ষীয়ান নেতা। মঙ্গলবার থেকে কলকাতায় শুরু হওয়া সিপিএমের (CPM) রাজ্য সম্মেলনের এই ছবিই এখন নেটদুনিয়ায় চর্চার বিষয় হয়ে দাঁড়িয়েছে।
স্বাধীনতার পর এই প্রথম পার্টি সবচেয়ে কঠিন পরিস্থিতির মধ্যে দিয়ে চলেছে। মঙ্গলবার থেকে কলকাতার প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে শুরু হওয়া সিপিএমের রাজ্য সম্মেলনের প্রথম দিনই সেকথা স্পষ্ট স্বীকার করে নিয়েছেন নেতারা। যোগ দিয়েছেন প্রায় ৭০০ প্রতিনিধি। রয়েছেন সীতারাম ইয়েচুরি, বিমান বসু (Biman Basu)-সহ পলিটব্যুরোর সাত সদস্য। তিনদিনের রাজ্য সম্মেলনের মূল লক্ষ্য, আলোচনার মাধ্যমে দলকে সংশোধনের পথে নিয়ে যাওয়া। কিন্তু কোথায় সেই উদ্যম? কমরেডদের বক্তব্য চলাকালীন মঞ্চে বসে থাকা শীর্ষ নেতৃত্বের দিবানিদ্রার ছবিটা সেই প্রশ্নই উসকে দিল।
নেটদুনিয়ায় ভাইরাল হওয়া ছবিতে দেখা যাচ্ছে, প্রমোদ দাশগুপ্ত ভবনে এক সদস্য পোডিয়ামে দাঁড়িয়ে বক্তব্য রাখার সময় পিছনে কেউ ঘুমিয়ে কাদা, কেউ বা ব্যস্ত মোবাইল নিয়ে। তবে সবচেয়ে বেশি চোখে পড়ল সিটুর (CITU)সাধারণ সম্পাদক তথা পলিটব্যুরো সদস্য তপন সেনের ঘুমন্ত (Sleeping)ছবি। তপন সেনের পাশের দু, একটি চেয়ারের পর বসেছিলেন সর্বভারতীয় কৃষক নেতা হান্নান মোল্লা। তাঁরও ভাবভঙ্গিতে ক্লান্তি স্পষ্ট। এছাড়া বিমান বসুকেও দেখা গেল মাথা নিচু করে বসে থাকতে। তাঁরও কি সামান্য ঝিমুনি এসেছিল? সোশ্যাল মিডিয়ায় ছবি ভাইরাল হতে এই প্রশ্ন ওঠাই স্বাভাবিক। নেটিজেনরা নানা টিপ্পনিও কাটছেন। আর সেইসঙ্গে অমোঘ প্রশ্নটিও উঠে আসছে, কৃষক এবং শ্রমিক – কমিউনিস্ট পার্টির সংগ্রামী সাফল্যের নেপথ্যে যে দুই স্তম্ভ, সেসব নেতারাই যখন নিদ্রামগ্ন, তবে কাকে অবলম্বন করে আবার ঘুরে দাঁড়াবে দল?