কেন্দ্রের কাছে কেন শুধুমাত্র বাংলারই বকেয়া ৪,২৯২ কোটি! সংসদে সরব বিরোধীরা
জিএসটি খাতে ক্ষতিপূরণ বাবদ এখনও কেন্দ্রের কাছ থেকে ৪,২৯২ কোটি টাকা বকেয়া রয়েছে পশ্চিমবঙ্গের।
মঙ্গলবার কেন্দ্রীয় অর্থ মন্ত্রক রাজ্যসভায় এক প্রশ্নের উত্তরে জানিয়েছে, চলতি অর্থবর্ষে রাজ্যগুলিকে জিএসটি ক্ষতিপূরণ বাবদ মোট ১.৫৯ লক্ষ কোটি টাকা বিলি করা হয়েছে। জিএসটি অতিরিক্ত সেস-তহবিলে যথেষ্ট আয় হয়নি বলে কেন্দ্র নিজে ঋণ নিয়ে রাজ্যগুলিকে তা ধার হিসেবে দিয়েছে। কিন্তু তার পরেও চলতি অর্থবর্ষে (২০২১-২২) রাজ্যগুলির পাওনার পরিমাণ ৫৩,৬৬১ কোটি টাকা। যার মধ্যে পশ্চিমবঙ্গের বকেয়া ৪,২৯২ কোটি।
এ দিন রাজ্যসভায় প্রশ্ন উঠেছে, কেন অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলির বকেয়া পাওনাই সব থেকে বেশি? মহারাষ্ট্রের এনসিপি সাংসদ বন্দনা চহ্বাণ প্রশ্ন তোলেন, তাঁর রাজ্যের বকেয়া সাড়ে ১১ হাজার কোটি টাকার বেশি। মহারাষ্ট্র, তামিলনাড়ু, পশ্চিমবঙ্গ, কেরল, দিল্লির মতো অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলিতেই বকেয়ার পরিমাণ এত বেশি কেন?
অর্থমন্ত্রী নির্মলা সীতারামন জবাবে পাল্টা আক্রমণে গিয়ে বলেন, জিএসটি পরিষদ কেন্দ্র ও রাজ্যের অর্থমন্ত্রীদের নিয়ে তৈরি একটি যুক্তরাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠান। সেখানে তৈরি করা সূত্র মেনেই ঠিক হয়, কোন রাজ্য কত ক্ষতিপূরণ পাবে। তা নিয়ে প্রশ্ন তোলার অর্থ, জিএসটি পরিষদকে অপমান করা। তিনি বলেন, কী ভাবে কেন্দ্র ঋণ নিয়ে রাজ্যগুলিকে ঋণ দেবে, তা-ও জিএসটি পরিষদের বৈঠকেই ঠিক হয়েছে।
বিরোধীরা প্রশ্ন তুলেছেন, কেন্দ্র দাবি করছে, প্রতি মাসেই জিএসটি থেকে বিপুল রাজস্ব আয় হচ্ছে। তা হলে রাজ্যের পাওনা আটকে রাখা হয়েছে কেন? কেন্দ্রীয় অর্থ প্রতিমন্ত্রী পঙ্কজ চৌধুরী বলেন, কেন্দ্রীয় সরকার রাজ্যের ক্ষতিপূরণ মিটিয়ে দিতে দায়বদ্ধ। কোভিডের সময়ে রাজ্যগুলির জিএসটি থেকে আয় কমেছে। ফলে ক্ষতিপূরণের দাবিও বেড়েছে। এ দিকে, ক্ষতিপূরণ মেটাতে সেস-তহবিলে আয় কম হয়েছে। তাই কেন্দ্র ঋণ নিয়ে রাজ্যগুলিকে গত আর্থিক বছর ও চলতি অর্থবর্ষে প্রায় ২.৭০ লক্ষ কোটি টাকা দিয়েছে। সেই ঋণ শোধ করতে জিএসটি চালুর পাঁচ বছর পরে, অর্থাৎ, ২০২২-এর ৩১ মার্চের পরেও সেস আদায় হবে। তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভা সাংসদ জহর সরকার জানতে চান, কত দিন পর্যন্ত সেস আদায় করা হবে? অর্থ প্রতিমন্ত্রী জানিয়েছেন, ২০২২ থেকে ২০২৬ সালের ৩১ মার্চ পর্যন্ত ওই সেস আদায় করা হবে।