বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

জেনে নিন ন্যাড়া পোড়া বা হোলিকা দহনের ইতিহাস

March 17, 2022 | 2 min read

ক্যামেলিয়া সান্যাল

‘আজ আমাদের ন্যাড়া পোড়া কাল আমাদের দোল, পূর্ণিমাতে চাঁদ উঠেছে বলো হরিবোল…’ দোলযাত্রার এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ। বাংলায় যা ন্যাড়া পোড়া অবাঙালিদের কাছে সেটাই অনেকটা হোলিকা দহন। কেন প্রচলিত হল এই হোলিকা দহন, জানেন?

পুরাণে আছে, রাক্ষস রাজা হিরণ্যকাশ্যপু তাঁর প্রজাদের পুজা অর্চনা করা বন্ধ করে দেন। অমরত্ব লাভের জন্য তিনি ব্রহ্মার তপস্যা শুরু করেন। তাঁর তপস্যায় খুশি হয়ে ব্রহ্মা তাঁকে পাঁচটি ক্ষমতা প্রদান করেন। ব্রহ্মার দেওয়া এই পাঁচটি বর হল – কোনও মানুষ বা কোনও প্রাণী তাঁকে মারতে পারবে না। ঘরের ভেতরে বা ঘরের বাইরে তাঁর মৃত্যু হবে না। তাঁর মৃত্যু দিনেও হবে না, রাতেও হবে না। অস্ত্র দ্বারাও হবে না, শস্ত্র্র দ্বারাও হবে না। হিরণ্যকাশ্যপুর মৃত্যু জমিতেও হবে না, জলেও হবে না, শূন্যেও হবে না।

এই বর পাওয়ার পর হিরণ্যকাশ্যপুর অত্যাচার বাড়তেই থাকে। কিন্তু তাঁর সন্তান প্রহ্লাদ বিষ্ণুর পরম ভক্ত ছিলেন। তাই নিজের সন্তান প্রহ্লাদকেও হত্যা করার সিদ্ধান্ত নেন তিনি। তাঁর জন্য নিজের বোন হোলিকার সাহায্য নেন হিরণ্যকাশ্যপু। হোলিকা ব্রহ্মার কাছ থেকে একটি শাল পেয়েছিলেন। এই শাল তাঁকে সবসময় রক্ষা করবে বলে জানিয়েছিলেন ব্রহ্মা। হোলিকা বলেন তিনি প্রহ্লাদকে নিয়ে আগুনের মধ্যে বসবেন। শাল থাকায় তাঁর কিছু হবে না কিন্তু প্রহ্লাদ পুড়ে ছাই হয়ে যাবে। যেই প্রহ্লাদকে নিয়ে হোলিকা আগুনে প্রবেশ করেন, তখনই গায়ের শালটি তাঁর কাছ থেকে প্রহ্লাদের গায়ে গিয়ে পড়ে। তাই প্রহ্লাদের কিছু না হলেও পুড়ে ছাই হয়ে যান হোলিকা।

এরপর কী ভাবে নরসিংহ রূপ ধরে খোদ বিষ্ণু এসে হিরণ্যকাশ্যপুকে হত্যা করেন, সে কাহিনী অনেকেরই জানা। কিন্তু হোলিকার মৃত্যু থেকেই শুরু হয় হোলিকা দহন প্রথা। আজও দোলের আগের দিন হোলিকা দহন করে মনের সব পাপ, অশুচি, লোভ, হিংসে পুড়ে ছাই হয়ে যায় বলে মনে করা হয়।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#Doljatra, #Holika Dahan, #Holi 2022

আরো দেখুন