বিবিধ বিভাগে ফিরে যান

হোলির দিন শুনুন এই চিরকালীন বাংলা গানগুলি

March 18, 2022 | 3 min read

ক্যামেলিয়া সান্যাল

দোল উৎসব প্রাণের উৎসব। কথিত আছে বৃন্দাবনে দোল পূর্ণিমা বা ফাল্গুনী পূর্ণিমায় শ্রী রাধিকা ও অন্যান্য গোপিনীদের সঙ্গে আবির খেলায় মেতেছিলেন শ্রীকৃষ্ণ। সেখান থেকেই এই প্রথা চলে আসছে। তবে এখন আর ধর্মের বাঁধ নেই। হোলি খেলা বা দোল উৎসবের সঙ্গে গভীরভাবে জড়িয়ে আছে হোলির গান। আবার যেহেতু এই উৎসব বসন্তকালে হয়, তাই রবি ঠাকুর লিখে গেছেন অসংখ্য বসন্তের গান। বাংলা ছবিতেও সময় সময়ে হোলির গান বা দোলের গান ব্যবহৃত হয়েছে। সেই গানের মধ্যে কয়েকটা রীতিমতো ইতিহাস সৃষ্টি করেছে।

সেইরকমই কিছু গানের তালিকা রইল। শুনে দেখুনঃ

খেলব হোলি রং দেব না

ছবির নাম একান্ত আপন (১৯৮৭)। বাংলা হোলির গান বলতে প্রথমেই এই গানটার কথা মনে পড়ে। অপর্ণা- ভিক্টর ব্যানার্জির দারুণ কেমিস্ট্রি। প্রেমিক প্রেমিকাদের জন্যে আদর্শ গান। আর হোলির মেজাজের সঙ্গে খুব সুন্দর খাপ খেয়ে যায় গানের কথাগুলোও।

ও শ্যাম যখন তখন

ছবির নাম: বসন্ত বিলাপ (১৯৭২)। আবার সেই চিরকালীন অপর্ণা সেন। কিন্তু তখন তিনি সদ্য যুবতী। অপর্ণা- সৌমিত্র হিট জুটি। মজার কথা হল ছবিতে সৌমিত্রর নামও কিন্তু শ্যাম। দুর্দান্ত কমিক টাইমিংসয়ে যোগ্য সঙ্গত চিন্ময় রায়, অনুপ কুমার আর রবি ঘোষের।

আজ হোলি খেলব শ্যাম তোমার সনে

ছবির নাম মঞ্জরী অপেরা (১৯৫২)। বাংলা গান নিয়ে কথা হচ্ছে আর সেখানে বাঙালির ম্যাটিনি আইডল উত্তম কুমার থাকবেন না, তা কী করে সম্ভব। তাই মঞ্জরী অপেরা ছবির এই হোলির গান বাদ দেওয়া গেল না। সন্ধ্যা মুখোপাধ্যায়ের স্বর্গীয় কণ্ঠস্বর কে ভুলতে পারে।

ফাগুণ হাওয়ায় হাওয়ায়

রবীন্দ্রসঙ্গীত। দোল বা হোলির কথা হবে আর এই গানটা সেই তালিকায় থাকবে না সে এক কল্পনাতীত ঘটনা। রুচিশীল বাঙালির পছন্দের তালিকায় সবার ওপরেই থাকবে এই গান।

সাত সুরো কী বাঁধ পায়েলিয়া

ছবির নাম দাদার কীর্তি ( ১৯৮০)। দাদার কীর্তি ছবিটার সঙ্গে বাঙালির কী যেন একটা মায়া জড়িয়ে আছে। তাই ছবিটা কেউ আজও ভুলতে পারেনি। গানটা খুব সুন্দর (বসন্তের গান), কারণ এখানে হিন্দি ও বাংলা দুটোকেই মিলিয়ে দিয়েছেন গীতিকার ও গায়ক হেমন্ত মুখোপাধ্যায়।

ওরে গৃহবাসী খোল দ্বার খোল

রবীন্দ্রসঙ্গীত। বাঙালির প্রাণের ঠাকুর হলেন রবি ঠাকুর। তাঁর সোনার কলম ছুঁয়ে গেছে সব ঋতুকেই। তাই তাঁর লেখা এই বসন্ত উৎসবের গান অবশ্যই থাকবে আমাদের তালিকায়। দোল উৎসব হল সবাইকে এক রঙে রাঙিয়ে দেওয়ার উৎসব আর কবি তাঁর গানে সেটাই বলছেন।

সকাল হতে না হতে কেন এলে রং দিতে

ছবির নাম প্রণমি তোমায় (১৯৮৯)। বেশ মজাদার এই গানটি। ছবিতে দেখা যায় যে মঞ্চে অনুষ্ঠান হচ্ছে। যেখানে রাধা আর কৃষ্ণ দোল উৎসব পালন করছেন। তবে রাধা এখনও ঘরের কাজ শেষ করতে পারেননি তাই সকাল্বেলা কৃষ্ণের রং খেলতে আসায় ছদ্মকোপ দেখাচ্ছেন তিনি।

এলো রে এলো রে হোলি এল রে

ছবির নাম লক্ষ্যভেদ (২০০৯)। মাঠের মধ্যে জমিয়ে রং খেলছে ছবির নায়ক, নায়িকা ও বাকিরা। একটু হিন্দি ছবির ধাঁচে দৃশ্যটির নির্মাণ হয়েছে। মানে সবাই সাদা পোশাক, থালায় করে আবির ওড়ানো এইসব।তবে এসব তো বাড়তি আয়োজন, আসল হল মন দিয়ে দোল পূর্ণিমা পালন কড়া। তাই সব কিছু বাদ দিয়েও গানখানা শুনতে মন্দ লাগে না।

আজ সবার রঙে রং মিশাতে হবে

রবীন্দ্রসঙ্গীত। রবি ঠাকুর এখানে যথার্থ কথা বলেছেন। বসন্ত ঋতু যে কবিতার ঋতু। তাই তিনি বসন্তকে আবাহন করেছেন। তাঁকে স্বাগত জানিয়েছেন রং দিয়ে। এই উৎসব যে সবার উৎসব সেটাই কবি খুব সহজ করে বলতে চেয়েছেন। সব ধর্ম, সব বর্ণের মানুষ এখানে একত্রে যোগ দিতে পারেন। তাই তো বলা হচ্ছে সবার রঙে রং মিশিয়ে সবাই আপন করে নিতে।

শ্যাম নাচে রাধা নাচে

ছবির নাম জনতার আদালত। আবার একটা জবরদস্ত হোলির গান। সবাই মিলে জমিয়ে নাচ গান আর হোলি খেলার মুহূর্ত। গানের দৃশ্য আর বাকি সব কিছু রূপায়িত হয়েছে একটু ভোজপুরি স্টাইলে। গানের লয় আর সুরও অনেকটা ওইরকম, তবে শুনতে মন্দ লাগে না। যদিও রঙের ব্যাবহার আরেকটু বেশি হলে ভাল হত।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bengali songs, #holi

আরো দেখুন