উত্তরবঙ্গ বিভাগে ফিরে যান

বালুরঘাটের বিজেপি বিধায়কের দেখা না পাওয়ায় ক্ষোভ সাধারণ মানুষের

March 22, 2022 | 2 min read

ভোটে জয়লাভ করার পর প্রায় এক বছর হতে চলল। কিন্তু বালুরঘাটে সেভাবে দেখা মেলে না বিজেপি বিধায়ক অশোক লাহিড়ীর। গত বিধানসভা নির্বাচনে এই কেন্দ্র থেকে অশোকবাবু জয়ী হয়েছেন। ভোট প্রচারে এলাকার উন্নয়ন, মানুষের পাশে থেকে কাজ করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। তা শুনে বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ অশোকবাবুর উপর ভরসা করেছিলেন বালুরঘাটের বাসিন্দারা। কিন্তু জেতার পর একমাস না যেতে না যেতেই বিধায়ককে আর সেভাবে এলাকায় দেখা যায়নি। মাঝেমধ্যে বালুরঘাটে এসে এক-দুই রাত কাটিয়ে চলে যান তিনি। পুরসভা নির্বাচনের সময় হাতেগোনা কয়েক দিন এসে দলীয় প্রার্থীদের হয়ে প্রচার করে আবার চলে গিয়েছেন। বিজেপি শিবিরের প্রার্থী হওয়ার পর বালুরঘাটে পা রেখে বলেছিলেন, তিনি জানেন না মানুষ তাঁকে গ্রহণ করবেন কি না। যদি গ্রহণ করেন, তাহলে বছরে কিছু সপ্তাহ এখানে থাকবেন তিনি। মানুষ প্রত্যাখান করলেও তিনি আসবেন। এনিয়ে সেসময় বিতর্ক তৈরি হয়েছিল। তবে তিনি তাঁর কথা রেখে এক বছরে কয়েক সপ্তাহ বালুরঘাটে থেকেছেন। এনিয়ে মানুষের মধ্যে ক্ষোভ জমেছে। বিরোধীরাও বিষয়টি নিয়ে কটাক্ষ শুরু করেছে।

এ নিয়ে বিধায়ক অশোক লাহিড়ীকে ফোন করা হলে তিনি আগামী মাসে আসবেন বলে ফোন কেটে দেন। তৃণমূল কংগ্রেসের দক্ষিণ দিনাজপুর জেলা সভাপতি উজ্জ্বল বসাক বলেন, বালুরঘাটের মানুষ অশোকবাবুকে বিধায়ক বানিয়েছেন। এখানে আমাদের কিছু বলার নেই। বালুরঘাট বিধানসভার মানুষ বুঝুন, কেমন বিধায়ককে দায়িত্ব দিয়েছেন তাঁরা। যিনি এলাকার উন্নয়ন তো দূরঅস্ত, বালুরঘাটে মাঝেমধ্যে এসে এখানকার ভালোমন্দ খাবার খেয়ে চলে যান। আমরা যতটা পারছি বালুরঘাটের উন্নয়ন করার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি।

বিধায়ক এলাকায় না থাকায় সাধারণ মানুষকে সার্টিফিকেট নিতে ব্যাপক সমস্যায় পড়তে হয়। স্টেট বাসস্ট্যান্ডে বিধায়কের একটি অফিস রয়েছে। যদিও সেটি নিয়মিত খোলা হয় না বলে অভিযোগ। অনেকে জানেনই না কোথায় সেই অফিস রয়েছে। ফলে জেলা কার্যালয়ে গিয়ে সই, শংসাপত্রের জন্য হন্যে হয়ে ঘুরতে হয় বাসিন্দাদের। অভিযোগ, ভোটের আগে এলাকায় প্রচারে বেরিয়ে অশোকবাবু মানুষের উন্নয়নের কথা বিধানসভায় তুলে ধরার আশ্বাস দিয়েছিলেন। বিভিন্ন সমস্যায় পাশে দাঁড়াবেন বলে জানিয়েছিলেন। কিন্তু ভোটে জেতার পর এলাকার মানুষের সমস্যা মেটানো তো দূরে থাক, এখন তাঁকে বালুরঘাটে ই দেখা যায় না। কোথায় গেলে তাঁর দেখা মিলবে, দলের নেতারাও তা ঠিক করে বলতে পারেন না। ফলে বিধায়কের সঙ্গে যোগাযোগ করাই কঠিন হয়ে উঠেছে বিধানসভা এলাকার বাসিন্দাদের।

দলের অন্দরেও এনিয়ে জোর চর্চা শুরু হয়েছে। সাংগঠনিকভাবে বিধায়ককে না পাওয়ায় বিজেপির কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভের পারদ জমতে শুরু করেছে। একদিকে রাজ্য সভাপতি হওয়ার পর সাংসদ সুকান্ত মজুমদারকে সেভাবে আর বালুরঘাট দেখা যায় না। এরপর বিধায়কও এলাকায় থাকেন না। ফলে দলের নানা সমস্যা সহ এলাকার উন্নয়ন নিয়ে কার কাছে গিয়ে দাবি জানাবেন, তা নিয়ে কর্মীদের মধ্যে ক্ষোভ তৈরি হয়েছে। মাঝেমধ্যে সংবাদমাধ্যমের সামনে এসে অশোকবাবু অর্থনীতি নিয়ে নানা বক্তব্য রাখলেও বালুরঘাট বিধানসভা এলাকার সমস্যা ও উন্নয়ন নিয়ে সেভাবে তাঁকে কখনও সরব হতে দেখা যায়নি। এনিয়ে বাসিন্দাদের মধ্যে ক্ষোভ তীব্র থেকে তীব্রতর হচ্ছে।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#bjp, #dakshin dinajpur, #balurghat, #Ashok Lahiri

আরো দেখুন