গর্ভবতী মহিলাদের জন্য বক্সা পাহাড়ে অ্যালুমিনিয়ামের হাল্কা পালকি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি হচ্ছে
কালচিনির বক্সা পাহাড়ের গর্ভবতী বাসিন্দাদের নীচে কালচিনির হাসপাতালে নামাতে এবার অ্যালুমিনিয়ামের হাল্কা পালকি অ্যাম্বুলেন্স তৈরির কাজ চলছে। আলিপুরদুয়ার জেলা প্রশাসন, কালচিনি ব্লক প্রশাসন ও জেলা স্বাস্থ্যদপ্তরের উদ্যোগে এ ধরনের মোট ন’টি অ্যাম্বুলেন্স বানানো হচ্ছে। মঙ্গলবার অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি হাল্কা তিনটি পালকি অ্যাম্বুলেন্স পরীক্ষামূলকভাবে নামানো হয়। অ্যাম্বুলেন্সগুলি রাজ্য সরকারের বিভিন্ন জনমুখী প্রকল্পের পোস্টার দিয়ে সাজানো হচ্ছে।
আলিপুরদুয়ারের জেলাশাসক সুরেন্দ্রকুমার মিনা বলেন, বক্সার পাহাড়ি গ্রামগুলির গর্ভবতীদের সমতলের হাসপাতালে আনার জন্য অ্যালুমিনিয়ামের অ্যাম্বুলেন্স আমরা তৈরি করছি। এর কাজ প্রায় শেষের পথে।
বক্সায় ১৩টি পাহাড়ি গ্রাম আছে। দুর্গম পথ দিয়ে গ্রামগুলির সন্তানসম্ভবা মহিলাদের সমতলের কালচিনির হাসপাতালে আনতে বাসিন্দারা প্রায় সময় বেকায়দায় পড়েন। সেজন্যই প্রথমে প্রশাসন কাঠের তৈরি কয়েকটি পালকি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করেছিল। কিন্তু, কাঠের পালকিগুলি ভারী হওয়ায় ওসব বন্ধ করে দেওয়া হয়। এবার প্রশাসন কাঠের বদলে অ্যালুমিনিয়ামের হালকা পালকি তৈরির সিদ্ধান্ত নেয়। কালচিনি ব্লক প্রশাসন সূত্রে জানা গিয়েছে, নতুন প্রযুক্তিতে অ্যালুমিনিয়ামের তৈরি পালকিগুলির ওজন মাত্র ৩৮ কেজি। একজন সন্তানসম্ভবা মহিলার ওজন যদি ৬০ কেজি হয়, সেক্ষেত্রে একটি পালকির ওজন ১০০ কেজির কাছাকাছি দাঁড়াবে। চারজন পালকি বাহককে সেই পালকি বহন করতে অসুবিধা হবে না। ন’টি পালকি অ্যাম্বুলেন্সের মধ্যে মঙ্গলবার তিনটি পরীক্ষামূলকভাবে নামানো হয়। ওই তিনটি অ্যাম্বুলেন্স দেওয়া হবে বক্সা পাহাড়ের আদমা, চুনাভাটি ও বক্সা ফোর্ট গ্রামে।
কালচিনির বিডিও প্রশান্ত বর্মন বলেন, পালকি বাহকদের সুবিধার্থে কাঠের বদলে অ্যালুমিনিয়াম ব্যবহার করে হাল্কা পালকি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করা হচ্ছে। এক-একটি পালকি অ্যাম্বুলেন্স তৈরি করতে খরচ ধরা হয়েছে ৯০ হাজার টাকা। সবমিলিয়ে খরচ হচ্ছে ৮ লক্ষ ১০ হাজার টাকা।
কালচিনির রাজাভাতখাওয়া গ্রাম পঞ্চায়েতে হিমালয়ের সিঞ্চুলা রেঞ্জে ২৬০০ ফুট উচ্চতায় বক্সা পাহাড়। ১৩টি গ্রামের বাসিন্দাদের চড়াই উতরাই ধরে হেঁটে সমতলে আসতে হয়। কিন্তু, সবচেয়ে সমস্যায় পড়তে হয় কেউ অসুস্থ হলে। বিশেষ করে গর্ভবতী মহিলাদের সমতলে হাসপাতালে আনতে বাসিন্দাদের খুবই কষ্ট সহ্য করতে হয়। তাই বক্সা পাহাড়ের বাসিন্দাদের সুবিধার জন্যই প্রশাসন থেকে এই পালকি অ্যাম্বুলেন্সের উদ্যোগ নেওয়া হয়।