নারী সুরক্ষায় ইংলিশবাজারে নামল পুলিসের মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’ টিম
নারী সুরক্ষায় এবার পথে নামানো হল জেলা পুলিসের মহিলা বাহিনী ‘উইনার্স’। মোটর বাইকে করে ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহের রাস্তায় রাস্তায় ঘুরছেন তারা। নারী পাচার, শ্লীলতাহানি, অপহরণ বা ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য, কোনও মহিলা বিপদে পড়ে সাহায্য চাইলেই ১০-১৫ মিনিটের মধ্যেই পৌঁছে যাচ্ছে দলটি। রাস্তায় এখন টিম ‘উইনার্স’কে কাছে পেয়ে অনেকটাই নিজেদের নিরাপদ ভাবছেন শহরের মহিলারা। পাশাপাশি পুলিসের এই উদ্যোগের প্রশংসা করেছেন তাঁরা।
পুলিস সূত্রে জানা গিয়েছে, দোলের দিন থেকেই শুরু হয়েছে টিম উইনার্সের টহল। ২০ জনের প্রশিক্ষিত মহিলা পুলিসকর্মী নিয়ে তৈরি হয়েছে বিশেষ এই দলটি। ইংলিশবাজারে পাঁচটি ও পুরাতন মালদহে পাঁচটি বাইকে করে মহিলাদের নিরাপত্তার কাজে নেমেছে এই বাহিনী। এই দুই থানা এলাকার প্রতিটিতে ১০ জনের মহিলা পুলিসের দল দাপিয়ে বেড়াচ্ছে পাঁচটি করে বাইকে চেপে। এই বিশেষ বাহিনীর পরনে রয়েছে কমান্ডো ধাঁচের পোশাক। মাথায় হেলমেট। হাতে শক্ত লাঠি। প্রতিটি দলের নেতৃত্বে থাকছেন একজন করে মহিলা পুলিস আধিকারিক।
উল্লেখ্য, মালদহের বিভিন্ন থানা এলাকায় মহিলাদের উপর একাধিক অত্যাচারের ঘটনা বিভিন্ন সময়ে নথিভুক্ত হয়। এছাড়াও শ্লীলতাহানি, নারী পাচার, অপহরণের মতো অপরাধ বা বাল্যবিবাহের মতো ঘটনাও প্রায় ঘটে থাকে। এর পাশাপাশি রয়েছে ইভটিজিংয়ের ঘটনা। মালদহ শহরের বেশ কিছু রাস্তায় ইভটিজারদের দৌরাত্ম্য রয়েছে বলে অভিযোগ রয়েছে। বিশেষ করে জনাকীর্ণ বিভিন্ন বাজার, রথবাড়ি, মালদহ ফ্লাইওভার, বাঁধরোড সহ বেশ কিছু জায়গায় ইভটিজাররা বেশি সক্রিয় বলে জানতে পেরেছেন পুলিস আধিকারিকরা।
শুধু তাই নয়, বিভিন্ন বেআইনি মদের ঠেক থেকেও মহিলাদের উদ্দেশে কটূক্তি বা অশ্লীল মন্তব্য ছুড়ে দেওয়ার ঘটনা একাধিকবার প্রকাশ্যে এসেছে। মহিলাদের হেনস্তা করার লক্ষ্যে এই ধরনের অপরাধ রুখতে জেলা পুলিসের টিম উইনার্স যথেষ্ট কার্যকরী ভূমিকা নেবে বলে আশাবাদী ইংলিশবাজার ও পুরাতন মালদহের মহিলা বাসিন্দারা।
ইংলিশবাজার মহিলা থানার ওসি তারিফা খাতুন বলেন, গত শুক্রবার থেকে টিম উইনার্স নজরদারি শুরু করেছে। রোমিওদের দৌরাত্ম্য রুখতে এই বিশেষ টিম নামানো হয়েছে। কোনও মহিলা বিপদে পড়লে সাহায্য চাওয়ার ১০-১৫ মিনিটের মধ্যে আমাদের টিম পৌঁছে যাবে। ব্যস্ত এলাকা, বাজার, গুরুত্বপূর্ণ রাস্তার মোড়, স্কুল-কলেজ সহ বিভিন্ন এলাকায় মহিলারা যেন নিরাপদে চলাফেরা ও কাজকর্ম করতে পারেন তা নিশ্চিত করাই আমাদের লক্ষ্য।
মালদহের পুলিস সুপার অমিতাভ মাইতি বলেন, আমরা নারী সুরক্ষার উপরে আরও বেশি গুরুত্ব দিতে চাইছি। তাই এই বিশেষ বাহিনী গঠনের ব্যবস্থা করা হয়েছে।