রেল বাজেটে আবারও মোদী সরকারের বঞ্চনার শিকার বাংলা? দেখে নিন বরাদ্দের অঙ্ক
ভারতীয় রেল হল ভারতের প্রাণ, রেলের মতো গুরুত্বপূর্ণ গণপরিবহন ব্যবস্থার এক একটি প্রকল্পে বরাদ্দ মোটে হাজার টাকা? এও কি সম্ভব! আরব্যরজনীর গল্প শোনাচ্ছে বিজেপি সরকার। বাংলার প্রতি মোদী সরকারের বিমাতৃসুলভ আচরণ অব্যাহত। চলতি অর্থ বাজেটে, বাংলায় চলা রেলের বিভিন্ন প্রকল্পের খাতে বরাদ্দের পরিমানই বলে দিচ্ছে, রাজনৈতিক প্রতিহিংসা চরিতার্থ করতেই বাংলাকে বারংবার বঞ্চিত করছে কেন্দ্রে ক্ষমতাসীন বিজেপি সরকার। প্রায় প্রতিটি প্রকল্পেই বেনজিরভাবে বরাদ্দ কমিয়ে দেওয়া হয়েছে। আশ্চর্যজনকভাবে এতই কম বরাদ্দ করা হয়েছে যে, তাতে কোন কাজই পূরণ হবে না! উদ্দেশ্য প্রনোদিতভাবেই কি এমনটা করল কেন্দ্রের মোদী সরকার? বিজেপির বাংলা দখলের স্বপ্ন অধরা থেকে যাওয়ার মাশুলই কি গুনতে হচ্ছে বাংলাকে? স্বভাবতই চলে আসছে প্রশ্ন!
নতুন রেলপথ স্থাপন ক্ষেত্রে
১) লক্ষ্মীকান্তপুর-নামাখানা রেলপথ স্থাপনের ক্ষেত্রে গত বাজেটে(২০২১-২০২২ অর্থবর্ষে) ২৯ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল। কিন্তু এবারের বাজেটে(২০২২-২০২৩ অর্থবর্ষে) ওই প্রকল্প বাবদ ১হাজার টাকা বরাদ্দ করা হল।
২) তারকেশ্বর-বিষ্ণুপুর রেলপথের ক্ষেত্রে বরাদ্দ ৩৩.৩৬ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে এবার শূন্যে নামিয়ে আনা হয়েছে।
৩) তারকেশ্বর-মগরা রেলপথের ক্ষেত্রে বরাদ্দের এক হাজার টাকাই অপরিবর্তিত রাখা হয়েছে।
৪) হাসনাবাদ-হিঙ্গলগঞ্জের ক্ষেত্রে ২.৯৯ কোটি টাকা থেকে কমিয়ে ১.৫ কোটি করা হয়েছে।
গেজ পরিবর্তন :
নিউআলিপুর-আক্রা-বজবজে গেজ পরিবর্তনের জন্য বিগত বাজেটে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল যা কমিয়ে ১হাজারে নামিয়ে আনা হয়েছে।
ডাবলিং-এর ক্ষেত্রে;
১) সোনারপুর-ক্যানিং লাইনে ১ লক্ষ টাকা বরাদ্দ কমিয়ে ১হাজার করা হয়েছে।
২) মুর্শিবাদের লালগোলা-জিয়াগঞ্জে ডাবলিং-এর জন্য অর্থ বরাদ্দ ৭০ লক্ষ থেকে কমিয়ে ২৫ লক্ষে নামিয়ে আনা হয়েছে।
নিউ গড়িয়া রেল টার্মিনাস
নিউ গড়িয়া রেল টার্মিনাসের জন্য বরাদ্দ ৩.৩৫ কোটি টাকা কমিয়ে ৩০ লক্ষ টাকা করা হয়েছে।
স্টেশনের নিরাপত্তা
গতবার কলকাতার যে সাতটি স্টেশনের নিরাপত্তা খাতে ১.১৪ কোটি টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল, এবার তা মাত্র এক হাজারে নামিয়ে নিয়ে এসেছে মোদী সরকার। রেলের ঐতিহ্য নিয়েও বিন্দুমাত্র চিন্তিত নয় মোদী সরকার!
বোলপুর রেল মিউজিয়াম
বোলপুর রেল মিউজিয়ামের জন্য ৫ লক্ষ টাকা বরাদ্দ করা হয়েছিল গত অর্থবর্ষে, কিন্তু এবার মিউজিয়ামের জন্য মাত্র এক হাজার টাকা দিয়েই ক্ষ্যান্ত হয়েছে কেন্দ্র। এই বরাদ্দে একটি প্রকল্পও সম্পূর্ণ হবে না।
কেন্দ্র-রাজ্য যুক্তরাষ্ট্রীয় সম্পর্কের তোয়াক্কা না করে, কেন্দ্রে ক্ষমতায় থাকার সুযোগের অপব্যবহার করে বিজেপি; অ-বিজেপি শাসিত রাজ্যগুলোকে নাজেহাল করছে। প্রয়োজনীয় বরাদ্দ থেকে রাজ্যকে বঞ্চিত করে দেশের সংসদীয়-গণতান্ত্রিক রাজনীতির পরিসরকে ধ্বংসের মুখে ঠেলে দিচ্ছে মোদী সরকার। মোদী সরকারের বাজেটে বাংলার বঞ্চনার বিরুদ্ধে সরব হলেন তৃণমূল কংগ্রেসের রাজ্যসভার নেতা তথা সাংসদ ডেরেক ও’ব্রায়েন।