বগটুইকাণ্ডে ফের একবার প্রকাশ্যে চলে এল রাম-বাম আঁতাত
একুশের নির্বাচনের প্রাক মুহূর্ত অবধি বঙ্গরাজনীতির সবচেয়ে চর্চার বিষয় ছিল, এ রাজ্যে বিজেপির উত্থান। কিন্তু এর কারণ কী? ভোট রাজনীতিতে বিরোধীমনস্কতা সব সময়ই থাকে। কিন্তু রাজ্যের বিরোধীরা যখন নিজেদের ভূমিকা পালনে ব্যর্থ হয়, তখনই নতুন বিরোধীর উদয় হয়। ঠিক যেমনটা এ রাজ্যে হল, বামেদের অপদার্থতার জন্য বিজেপির বাড়বাড়ন্ত হল। বিজেপিকে বঙ্গে জাঁকিয়ে বসতে সাহায্য করেছিল রাম-বাম আঁতাত। রাজনৈতিক বিশ্লেষক থেকে শুরু করে রাজনৈতিক বিশেষজ্ঞ; সকলেরই মত ছিল রাম-বাম অর্থাৎ বিজেপি ও বামদের যোগাযোগ রয়েছে, ভোটের আদান-প্রদান ঘটেছে। মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও একাধিকবার রাম-বাম আঁতাতের কথা বলেছেন। সাম্প্রতি রামপুরহাটের বগটুইয়ের ঘটনায় আবারও স্পষ্ট হল সেই একই জিনিস।
বগটুইয়ের ঘটনায় মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে কটাক্ষ করে বঙ্গ বিজেপির অফিসিয়াল টুইটার হ্যান্ডেল থেকে গতকাল একটি ছবি টুইট করা হয়। মুখ্যমন্ত্রীর খেলা হবে স্লোগানকে আক্রমণ করে লেখা হয়, “এই খেলার কথাই বলেছিলেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়?” সঙ্গে জুড়ে দেওয়া হয় মুখ্যমন্ত্রীর পায়ের ছবি। ছবিটি দুটি অর্ধে বিভক্ত, একটিতে তিনি ফুটবলে পা দিয়ে রয়েছেন আর অন্য ছবিতে দেখা যায় তিনি নরকঙ্কালের খুলির উপর পা দিয়ে আছেন। টুইটটি করা হয়, ২৬শে মার্চ ২০২২ তারিখে সন্ধ্যে ছটা বেজে ৩৬ মিনিটে।
সেই একই ছবি টুইট করেন বাম ছাত্রনেতা তথা এসএফআইয়ের সাধারণ সম্পাদক ময়ূখ বিশ্বাস। কেবল যে ছবিটিতে মিল রয়েছে তাই নয়! এমনকি ছবির ক্যাপশানেও মিল! ছবির সঙ্গে বাম ছাত্রনেতা লেখেন, “এটাই আসল খেলা হবে!” (ইংরেজি থেকে তর্জমা করা হয়েছে)। ময়ূখ গতকাল সন্ধ্যে সাড়ে সাতটায় টুইটটি করেন। একঘন্টার ব্যবধানে একই টুইট, বিষয়বস্তু, ছবি-লেখা সবই এক! রাম-বাম যে এক সঙ্গেই রয়েছে বাম ছাত্রনেতার টুইটই তা প্রমাণ করে।
বামেরা মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ও তৃণমূল কংগ্রেসের প্রতি এতটাই প্রতিহিংসাপরায়ণ; যে ধর্মনিরপেক্ষতার মুখোশ ছেড়ে, বিজেপির মতো একটি সাম্প্রদায়িক দলের সঙ্গেও আঁতাত করতে তারা দু’বার ভাবছেন না। নিজেদের আচরণেই তারা রাম-বাম আঁতাতের দাবিকে শীলমোহর দিচ্ছেন।