রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে বিজেপিকে হারাতে বিরোধীদের ভরসা মমতাই!
নরেন্দ্র মোদীর বিরুদ্ধে লড়াই করতে পারেন একমাত্র মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ভোটবাক্সে মানুষের সমর্থনই তার প্রত্যক্ষ প্রমাণ। এব্যাপারে একমত দেশের তামাম বিরোধীরা। অবিজেপি একাধিক রাজনৈতিক দল চাইছে, মমতাকে সামনে রেখে শক্তিশালী বিরোধী জোট তৈরি করতে। আর তার মহড়া হতে পারে আগামী জুলাই মাসের রাষ্ট্রপতি এবং উপ রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেই। ইতিমধ্যে সেই বার্তা এসে পৌঁছেছে কালীঘাটে। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাওয়ের (কেসিআর) তরফ থেকে। তিনি চাইছেন, রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে প্রার্থী নির্বাচন করুন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই। বিজেপি বিরোধী লড়াইয়ের সেই প্রার্থীকে সমর্থন দেবে বিরোধী দলগুলি। তৃণমূল কংগ্রেস সূত্রের খবর, এপ্রিল মাসেই দিল্লি যাবেন মমতা। সেখানেই বিষয়টি চূড়ান্ত হওয়ার সম্ভাবনা। তৃণমূল সাংসদ সুখেন্দু শেখর রায় জানিয়েছেন, ‘রাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত সব বিষয়ে খোঁজখবর রাখছেন দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি যা বলার বলবেন।’
ইতিমধ্যেই সব আঞ্চলিক এবং বিজেপি বিরোধী দলগুলিকে নিয়ে জোট গড়ার বার্তা দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। সেই বার্তায় সাড়া দিয়ে কেসিআরও চাইছেন, অবিজেপি এবং অকংগ্রেসি দলগুলির জোট। সেই লক্ষ্যকে সামনে রেখে গত ফেব্রুয়ারি মাস থেকে ময়দানে নেমেছেন তিনি। জোট গড়তে কথা বলেছেন মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব থ্যাকারে, এনসিপি প্রধান শারদ পাওয়ার, ঝাড়খণ্ডের মুখ্যমন্ত্রী হেমন্ত সোরেন, জেডি(এস) নেতা এইচ ডি দেবেগৌড়া, সমাজবাদী পার্টি প্রধান অখিলেশ যাদবের সঙ্গে। আম আদমি পার্টির সুপ্রিমো অরবিন্দ কেজরিওয়াল এবং বিজেডির নবীন পট্টনায়েককে এই উদ্যোগে শামিল করাতে দৌত্য চলছে। তবে বিজেপি বিরোধী অন্যতম মুখ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় ছাড়া এই জোট যে কখনই ‘আকার’ নেবে না, সেকথা মানছেন কেসিআরের সেকেন্ড-ইন-কমান্ড কে কেশব রাও। তাঁর কথায়, ‘রাষ্ট্রপতি-উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সর্বসম্মত প্রার্থী বাছাইটাই এখন জরুরি। আর সেই কাজটাই মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে সামনে রেখে সারতে চাইছে সব বিরোধী দল।’
পাঁচ রাজ্যের বিধানসভা নির্বাচনের মধ্যে চারটিতে ফুটেছে পদ্মফুল। ফলে অক্সিজেন পেয়েছি বিজেপি। যদিও এর প্রভাব ২০২৪ সালের লোকসভা নির্বাচনে পড়বে না বলে দ্ব্যর্থহীন ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো। একমত অন্যান্য অবিজেপি রাজনৈতিক দলগুলিও। তাদের মতে, আঞ্চলিক পার্টিগুলি যত শক্তিশালী হবে, তত বেশি বেগ দেওয়া যাবে বিজেপিকে। পাঁচ রাজ্যের ভোটের পর আঞ্চলিক দলগুলিকে এক ছাতার তলায় এসে শক্তিশালী বিরোধী ঐক্যের বার্তা দিয়েছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। ইতিমধ্যে এম কে স্ট্যালিন, কে চন্দ্রশেখর রাও, শারদ পাওয়ারের মত দেশের বিজেপি বিরোধী একাধিক নেতার সঙ্গে ফোনে কথা হয়েছে তাঁর। অখিলেশকেও নিরাশ না হওয়ার পরামর্শ দিয়েছেন। মমতাও চাইছেন, আঞ্চলিক দলগুলিকে শক্তিশালী করতে। এমনিতেই রাষ্ট্রপতি নির্বাচন নিয়ে এখন ঘোরতর টেনশনে বিজেপি। কারণ, বিধায়ক সংখ্যা। রাষ্ট্রপতি নির্বাচনে সাংসদ এবং বিধায়করা ভোট দিয়ে থাকেন। বাংলায় তৃণমূল কংগ্রেসের হাতে এখন রয়েছে ২১৭ জন বিধায়ক। অন্যদিকে উত্তরপ্রদেশে এবার বিজেপির এমএলএ কমেছে। বিধায়ক বেড়েছে সমাজবাদী পার্টি, আপের। সংখ্যাতত্ত্বের বিচারে পিছিয়ে গেরুয়া শিবির। তাই বিরোধীদের কাছে এটাই সুবর্ণ সুযোগ।