দীঘায় পাল্টে যাচ্ছে হোটেল বুকিংয়ের নিয়ম, জেনে নিন নতুন পদ্ধতি সম্পর্কে
দীঘা রাজ্যের অন্যতম ডেস্টিনেশন। শীত,গ্রীষ্ম হোক বা বর্ষা দিঘার আর্কষণ ফুরনোর নয়। বাঙালির ঘুরতে যাওয়ার তালিকায় প্রায় প্রথম তিনে দিঘার স্থান। সব থেকে জনপ্রিয় এই পর্যটন স্থলে ক্রমশই বাড়ছে পর্যটকের আনাগোনা, বাড়ছে নানা অপ্রীতিকর ঘটনাও। একদিকে পর্যটকদের উপর নজর রাখতে সিসিটিভি এবং অন্যদিকে রাজস্ব আদায়ের জন্য দিঘার ৬০০টি হোটেল নিয়ে অনলাইন ডেটাবেস সিস্টেম (Online Database System) চালু করতে চলেছে রাজ্য।
আগামী ১ এপ্রিল থেকে দিঘার সমস্ত হোটেলে চালু হতে চলেছে অনলাইন ইনফর্মেশন অ্যান্ড ডাটাবেস সিস্টেম। প্রাথমিকভাবে এই ডাটাবেস সিস্টেম চালু হবে দিঘার ৬০০টি হোটেলে। পরে ধাপে ধাপে শঙ্করপুর, তাজপুর, মন্দারমণির হোটেলেও এভাবে তথ্য সংরক্ষণ করা হবে। দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে এ ব্যাপারে প্রযুক্তিগত সহায়তা করছে এনআইসি (ন্যাশনাল ইনফরমেটিক সেন্টার)। ইতিমধ্যে দিঘার হোটেলগুলিকে চিঠি দিয়ে কম্পিউটার ও নেট সংযোগ নিতে বলা হয়েছে।
দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদের প্রশাসক মানসকুমার মণ্ডল বলেন, “অনলাইন ডাটাবেস সিস্টেম চালু হলে পর্যটকদের যাবতীয় তথ্য নতুন পোর্টালে আপলোড করে দিতে হবে হোটেল কর্তৃপক্ষকে। সেই সঙ্গে পর্যটকদের থেকে নেওয়া ফিও জমা করতে হবে অনলাইনের মাধ্যমেই। ফলে রাজস্ব ফাঁকি যেমন দেওয়া যাবে না। তেমনই পর্যটকদের সুরক্ষার দিকটিও সুনিশ্চিত করা সম্ভব হবে।”
দিঘা-শঙ্করপুর হোটেলিয়ার্স অ্যাসোসিয়েশনের সভাপতি সুশান্ত পাত্র এই সিদ্ধান্তের সমর্থনে জানিয়েছেন, এই ধরনের ব্যবস্থা চালু হলে হোটেল মালিকদের হয়রানিও কমবে। কিন্তু, তাঁর সংশয়, বড় হোটেলগুলিতে এই ব্যবস্থা চালু করা গেলেও মাঝারি বা ছোট হোটেলগুলিতে আদৌ তা সম্ভব কীনা সেটাই দেখার।
প্রশাসন সূত্রে জানানো হয়েছে, দিঘায় পর্যটকরা এলে তাঁদের একটা ফি দিতে হয়। মূলত পরিকাঠামোর উন্নয়ন ও পরিষেবা বাবদ এই টাকা নেয় হোটেল। পরে সেই টাকা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে দেওয়ার কথা হোটেল কর্তৃপক্ষের। প্রশাসনের অভিযোগ সূত্রে খবর, বহু হোটেল এই রাজস্ববাবদ নেওয়া টাকা দিঘা-শঙ্করপুর উন্নয়ন পর্ষদকে দেয় না। এতেই লোকসানের মুখে পড়তে হয় পর্ষদকে। তাই এবার সমস্ত বিষয়টিকে অনলাইন সিস্টেমের আওতায় আনা হচ্ছে। অবৈধ কোনও লেনদেন, ট্যাক্স ফাঁকি এড়াতে ফি আদায়ের পদ্ধতিকে অনলাইন নথিভুক্ত করতে চাইছে প্রশাসন।
দিঘায় পর্যটকের আনাগোনা অনুযায়ী ৫ থেকে ৬ কোটি টাকার কর আদায় হওয়ার কথা। কিন্তু, সেই কর আদায়ের পরিমাণ বর্তমানে মাত্র এক থেকে দেড় কোটি টাকা। তাই সরকারের পর্যটকের সংখ্যা যেমন বোঝা যাবে এই সিস্টেমের মাধ্যমে তেমনি কোনও পর্যটক বিপদে পড়লে তার তথ্য সহজেই পাওয়া যাবে। সম্প্রতি দিঘায় জলে ডুবে মৃত্যু, হোটেল থেকে দেহ উদ্ধার, চুরি ছিনতাইয়ের মতো ঘটনা ঘটছে। ফলে পুলিশ প্রশাসনকে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। এই সিস্টেম চালু হলে তা অনেকটাই দূর হবে বলে মনে করা হচ্ছে।।