ফের পৃথক রাজ্যের দাবি উস্কে দিয়ে বিতর্কে বংশীবদন
তৃণমূলের রাজ্য সহ সভাপতির পাশে সরকারি মঞ্চে দাঁড়িয়ে ফের ঘুরিয়ে পৃথক রাজ্যের দাবি জানালেন রাজবংশী উন্নয়ন ও সংস্কৃতি বোর্ড এবং রাজবংশী ভাষা আকাদেমির চেয়ারম্যান বংশীবদন বর্মন। বুধবার আলিপুরদুয়ার বিশ্ববিদ্যালয়ের পুনর্ভাবনায় ডুয়ার্সের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য শীর্ষক একটি কর্মশালায় যোগ দিতে এসে এমনই মন্তব্য করেন তিনি। সরকারি বিভিন্ন পদে থেকে ও নানা সুযোগ সুবিধা নিয়েও বংশীবাবুর এ ধরনের মন্তব্যে রাজনৈতিক মহলে ব্যাপক শোরগোল পড়ে যায়। সাংসদ জন বারলা ও কালিম্পং -এর বিধায়ক রুদেন লেপচার আলাদা রাজ্যের দাবির পর এদিন বংশীবদন বর্মন ফের কার্যত পৃথক রাজ্যের দাবি উসকে দেওয়ায় প্রশ্ন উঠেছে তাঁর ভূমিকা নিয়েও।
বংশীবদন বলেন, ‘কোচবিহারের মানুষের যা সাংবিধানিক অধিকার আছে, সেই অধিকার যতদিন সম্পূর্ণ পাওয়া না যাবে, ততদিন এ কথা চলতে থাকবে, এ দাবি চলতে থাকবে।’ তিনি বলেন, ‘আমরা আন্দোলন থেকে সরে আসব না।’ ভারতভুক্তির চুক্তি অনুযায়ী কোচবিহারের ‘গ’ শ্রেণির স্বীকৃতি দীর্ঘদিনের দাবি বংশীবদন বর্মনের।তবে, একসময় রাজ্যের বিরুদ্ধে তার দল গ্রেটার কোচবিহার পিপলস আ্যাসোসিয়েশন আন্দোলন করলেও এখন তিনি রাজ্য সরকারের একাধিক কমিটির পদে রয়েছেন। হালে তার ১৯৮টি রাজবংশী স্কুলকেও রাজ্য সরকার অনুমোদন দিয়েছে। স্কুলগুলিকে শুধু সরকারি অনুমোদন দেওয়াই নয়, স্কুলগুলিতে প্রায় ৮০০ প্যারাটিচার ও অ্যাসিষ্টান্ট নিয়োগেরও অনুমোদন করেছে। খুব শীঘ্রই নিয়োগ প্রক্রিয়া সম্পূর্ণও করতে বলা হয়েছে। এই পরিস্থিতিতে অনুষ্ঠানে বংশীবাবুর এ ধরনের মন্তব্য খুবই তাৎপর্যপূর্ণ।’
বুধবার আলিপুরদুয়ারে ওই কর্মশালায় অতিথি হিসেবে অন্যদের সঙ্গে উপস্থিত ছিলেন গ্রেটার নেতা বংশীবদন বর্মন, উত্তরবঙ্গ উন্নয়ন পর্ষদের চেয়ারম্যান রবীন্দ্রনাথ ঘোষ। অনুষ্ঠানে আগাগোড়া রাজবংশী ভাষায় ভাষণ দেন বংশীবদন। মুখ্যমন্ত্রীর উন্নয়নমূলক কাজকে স্বাগত জানালেও কার্যত পৃথক রাজ্যের দাবির কথা শোনা যায় তার মুখে। বংশীবদন বলেন, ‘রাজ্য সরকার মাতৃভাষাকে স্বীকৃতি দিচ্ছে। মুখ্যমন্ত্রীর এই উদ্যোগকে সাধুবাদ জানাই।’
পৃথক রাজ্যের দাবি কতোটা যুক্তিযুক্ত এই বিষয়ে রবীন্দ্রনাথ ঘোষ বলেন, ‘মুখ্যমন্ত্রী উত্তরবঙ্গে উন্নয়নমূলক কাজ করছেন। উন্নয়নের স্বার্থে পাহাড় পৃথক রাজ্যের দাবি থেকে সরে এসেছে। সেখানে এমন দাবি অপ্রাসঙ্গিক।’