করোনার চতুর্থ ঢেউয়ে আপনিও আক্রান্ত? বুঝুন এই উপসর্গগুলো দিয়ে
করোনা (Corona) মানুষকে কোনওভাবেই শান্তিতে থাকতে দিতে রাজি নয়। তাই যখনই ভাবা হয় এই ভাইরাস বোধহয় বিদায় নিল, ঠিক তখনই করোনা হাজির হয় নিজের মতো করে। এবার ইউরোপ ও এশিয়ার বহু দেশের দিকে তাকালে এই বিষয়টি একেবারে পরিষ্কার হয়ে যাবে। সবথেকে খারাপ অবস্থা তো দক্ষিণ কোরিয়ার। এই দেশটিতে রোজ প্রায় ৫ লক্ষ নতুন কোভিড কেস সামনে আসছে। অবশ্য এবার ভাইরাসের একদম নতুন রূপ সমস্যা তৈরি করছে। এক্ষেত্রে সমস্যার পিছনে রয়েছে ওমিক্রনের উপপ্রজাতি বিএ.২ (BA.2)। এই উপপ্রজাতিই (Subvariant) এই গোটা তাণ্ডবলীলার পিছনে রয়েছে।
বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা (WHO) বলছে, ওমিক্রনের এই উপপ্রজাতি যা কিনা বিএ.২ বা স্টেলথ ওমিক্রন হিসাবে পরিচিত, এই ভাইরাসটি সাধারণত মাঝারি ধরনের উপসর্গ তৈরি করছে। তবে এই রোগটিকে ছোট রোগ ভেবে নিলে যে বড় সমস্যা দেখা দিতে পারে, এই বিষয়টিও স্পষ্ট করে বলা হয়েছে। যত দ্রুত করোনা নিজেকে বদলে নিচ্ছে, ঠিক ততটাই দ্রুত বদলাচ্ছে এর উপসর্গ। আর বিএ.২ এখনও পর্যন্ত সবথেকে দ্রুতহারে সংক্রমণ তৈরি করছে।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এবার পেটেই বেশি সমস্যা তৈরি করছে এই ভাইরাস। তবে সবার ক্ষেত্রে এই কথা খাটে না। সেক্ষেত্রে মানুষভেদে এই ভাইরাসের লক্ষণ রয়েছে আলাদা। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এবার আসুন জেনে নেওয়া যাক এই রোগের প্রাথমিক কিছু লক্ষণ (Covid 4th Wave Symptoms)-
জ্বর ও ক্লান্তি
করোনা হল এক জটিল সমস্যা। মানুষভেদে এই সমস্যা নানা সমস্যা তৈরি করে। তবে প্রাথমিকভাবে বিভিন্ন রিপোর্ট বলছে, করোনা রোগটি বেশিরভাগ ক্ষেত্রে প্রথমে জ্বরের (Fever) সমস্যা তৈরি করে। এক্ষেত্রে জ্বর খুব বেশি হতে পারে, আবার নাও হতে পারে। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই সতর্ক থাকতে হবে। এছাড়া শরীরে দেখা দেয় ক্লান্তি। জ্বরের পাশাপাশি অনেকের জ্বর ঠোসা বেরতে শুরু করে। তাই এই লক্ষণ দেখা দিলে অবশ্যই চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
জ্বরের পর কাশি
প্রাথমিকভাবে দেখা দিচ্ছে জ্বর। এরপর সবথেকে বেশি দেখা দিচ্ছে কাশি (Cough)। সাধারণ জ্বর-সর্দি-কাশির সমস্যার থেকে করোনার কাশি সাধারণত আলাদা। এক্ষেত্রে সাধারণত কফ বেশি থাকে না। অবশ্য কিছুদিন কাশি থাকার পর সমস্যা বাড়ে। এরপর গলায় সমস্যা দেখা দেয়। অস্বস্তি হয়, এমনকী চুলকাতেও পারে। পাশাপাশি থাকতে পারে মাথা ব্যথা। এই মাথা ব্যথা কম থেকে শুরু করে গুরুতর হতে পারে। তাই এই কয়েকটি লক্ষণ দেখা দিলেও চিকিৎসকের পরামর্শ নিন।
পেশিতে ব্যথা
করোনা অন্যান্য ভাইরাল ফিভারের থেকে আলাদা। এক্ষেত্রে জ্বর, কাশি, ক্লান্তির পাশাপাশি থাকতে পারে পেশিতে ব্যথা (Muscle Pain)। পেশির ব্যথা মাঝারি থেকে শুরু করে গুরুতর হতে পারে। এবার ক্লান্তির সঙ্গে পেশিতে ব্যথার কম্বিনেশন খুবই খারাপ। এক্ষেত্রে দেখা দিতে পারে অনেক সমস্যা। তাই প্রতিটি মানুষকে অবশ্যই এই বিষয়টি নিয়ে সতর্ক থাকতে হবে।
পেটের সমস্যা
করোনার এই বিএ.২ ভ্যারিয়েন্টের ক্ষেত্রে পেটের সমস্যা একেবারে সামনের সারিতে উঠে এসেছে। এক্ষেত্রে অনেকের অন্য কোনও লক্ষণ দেখা দিচ্ছে না, বরং পেটের সমস্যাই হচ্ছে। দেখা দিচ্ছে, বমি বমি ভাব, বমি হয়ে যাওয়া, পেট খারাপ, পেটে ব্যথার মতো সমস্যা। তাই বিশেষজ্ঞরা বারবার করে দাবি করছেন, পেট খারাপ বলে এই সমস্যাকে কোনওভাবেই ফেলে রাখা যাবে না। কারণ এর পিছনে করোনা থাকলেও থাকতে পারে।
চিকিৎসকের পরামর্শ নিন
প্রাথমিকভাবে সমস্যা দেখা দিলে একবার চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নেওয়াই শ্রেয়। তারপর করিয়ে ফেলুন টেস্ট। এরপর বিশেষজ্ঞের তত্ত্বাবধানে থাকতে শুরু করে দিন। তাহলেই ভালো থাকবেন। এছাড়া শ্বাসকষ্ট হচ্ছে, অক্সিজেন স্যাচুরেশন কমে যাচ্ছে, বুকে ব্য়থা, বিছানা ছেড়ে ওঠা যাচ্ছে না ইত্যাদি সমস্যা দেখা দিলে একেবারে সময় নষ্ট নয়। সোজা চিকিৎসকের পরামর্শ নিয়ে নিন।
বিদ্র: এই লেখাটি সচেতনার উদ্দেশ্যে লেখা হয়েছে। কোনও ডাক্তারি পরামর্শ নয়।