আলিয়াকাণ্ডে উপাচার্যের বিরুদ্ধে পালটা তোপ অভিযুক্ত ছাত্রনেতা গিয়াসুদ্দিনের
উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় গালিগালাজ করায় ইতিমধ্যেই গ্রেপ্তার হয়েছেন TMCP নেতা গিয়াসুদ্দিন। গ্রেপ্তারির মাত্র কয়েকঘণ্টা আগেই সাংবাদিক বৈঠক করে ক্ষমা চেয়েছিলেন তিনি। যদিও শেষরক্ষা হয়নি। সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে নিজের ভাষার জন্য ক্ষমাপ্রার্থী হলেও সাফাই হিসেবে তিনি সেই উপাচার্যকেই দুষলেন।
গ্রেপ্তার হওয়ার আগে গিয়াসুদ্দিনকে বলতে শোনা গেল, ”একজন শিক্ষিত ছাত্র হিসেবে এই ভাষা প্রয়োগ করা আমার উচিত হয়নি। আমি এর জন্য নিঃস্বার্থভাবে ক্ষমা চাইতে প্রস্তুত। কিন্তু, আমি কী করব? আমার কেরিয়ারও তো নষ্ট করে দিয়েছেন এই ভিসি। আমায় বহিষ্কার করেছেন। আমায় পরীক্ষায় বসতে দেওয়া হয়নি।” নিজের পাশাপাশি আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে দুর্নীতির জন্য উপাচার্য দায়ী বলেও সরব হন গিয়েসুদ্দিন। তিনি বলেন, ”PhD অ্যাডমিশন নিতে গেলে রেট নামে একটা পরীক্ষা হয়। গত ৩০ তারিখ সেই পরীক্ষার রেজাল্ট বেরোলে দেখা যায় এক শ্রেণীর ছাত্র, যাদের সঙ্গে পড়াশোনার কোনও সম্পর্ক নেই তাদের অ্যাডমিশন হয়ে গিয়েছে।” গিয়াসুদ্দিনের দাবি, এই সমস্ত ছাত্রদের প্রশ্ন আগে থেকে সাপ্লাই দিয়েছিলেন উপাচার্য। গিয়াসুদ্দিন আরও বলেন, ”আমার প্রতিবাদের পদ্ধতি হয়ত ভুল ছিল, কিন্তু, দাবিটা সঠিক ছিল।”
আলিয়া বিশ্ববিদ্যালয় (Aliah University) কাণ্ডে তোলপাড় চলছে রাজ্যজুড়ে। উপাচার্যকে অশ্রাব্য ভাষায় কটুকথা বলার অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের ছাত্রনেতা ও তার সহযোগীদের বিরুদ্ধে। শুধু তাই নয়, উঠেছে মারধর, হেনস্থার অভযোগ। সোশ্যল মিডিয়ায় একটি ভিডিয়ো ভাইরাল হয়েছে যেখানে দেখা যাচ্ছে, বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্যের সঙ্গে এই আচরণ করছে কয়েকজন ছাত্র। যদিও এই ভিডিয়োর সত্যতা যাচাই করেনি দৃষ্টিভঙ্গি। বিষয়টি নিয়ে তোলপাড় রাজ্য রাজনৈতিক মহল। এই ঘটনায় রাজ্যের সমস্ত মহলে নিন্দার ঝড় ওঠে। কেন পুলিশ কোনও পদক্ষেপ করছে না, তা নিয়ে উঠছিল প্রশ্ন। রবিবার এই ঘটনার প্রেক্ষিতেই তাকে গ্রেপ্তার করেছে টেকনোসিটি থানার পুলিশ। বাজেয়াপ্ত করা হয়েছে তার মোবাইল ফোন।
গিয়াসউদ্দিন মণ্ডলকে কিছুদিন আগেই বিশ্ববিদ্যালয় থেকে বহিষ্কার করা হয় বলে সূত্রের খবর। আর এই নিয়েই সে চটে উপাচার্যের উপর। এই ঘটনার নিন্দা করেছিলেন রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়ও। নিন্দায় সরব হয়েছিলেন রাজ্যের বুদ্ধিজীবীরাও। শিক্ষা মহলে উঠেছিল নিন্দার ঝড়।
এই নিয়ে তৃণমূল ছাত্র সংসদের রাজ্য সভাপতি তৃণাঙ্কুর ভট্টাচার্য বলেন, ”সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হওয়া একটি ভিডিয়ো আমাদের নজরে এসেছে। যেখানে উপাচার্যকে অশালীন ভাষায় গালিগালাজ করা হয়েছে। তৃণমূল ছাত্র পরিষদের তরফে উপাচার্যকে তৎক্ষণাৎ উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। আমাদের তরফে ওঁর শারীরিক পরিস্থিতির উপর নজর রাখা হচ্ছে।”