রামনবমীর নাম করে চাঁদার জুলুম, কাঠগড়ায় সঙ্ঘ পরিবার
জলপাইগুড়িতে বলপূর্বক চাঁদা আদায়ে নেমেছে বিজেপি এবং সঙ্ঘ পরিবার। রামনবমী উপলক্ষ্যে বিজেপির চাঁদা আদায়ের জুলুমে নাজেহাল সাধারণ মানুষ। রীতিমতো কুপন ছাপিয়ে চাঁদা তোলা হচ্ছে। সঙ্ঘ পরিবারের ছাপানো কুপন ইতিমধ্যেই পৌঁছে গিয়েছে বিজেপির দপ্তরে। বিজেপি নেতারাও কুপন নিয়ে চাঁদা আদায়ে নেমে পড়েছেন। কুপনে লেখা রয়েছে শ্রী রামনবমী উদযাপন সমিতির নামে, সমিতির নামেই হলুদ রঙের ছাপানো কুপনে আদায় করা হচ্ছে ওই চাঁদা। এক একটি কুপন পিছু একশ টাকা করে নেওয়া হচ্ছে। সূত্রের দাবি, রামনবমীকে সামনে রেখে লক্ষাধিক টাকা সংগ্রহে নেমেছে সঙ্ঘ পরিবার।
আগামী ১০ই এপ্রিল রামনবমীর দিন জলপাইগুড়ি শহরে মিছিল করবে সঙ্ঘ। সেই মিছিলের খরচ জোগাড় করতেই কুপন ছেপে চাঁদা তোলা শুরু করেছে সঙ্ঘ। সূত্রের খবর, সঙ্ঘের প্রতিটি শাখাকে নির্দিষ্ট অঙ্কের টাকা তোলার লক্ষ্যমাত্রা স্থির করে দেওয়া হয়েছে। এই নিয়ে সঙ্ঘ পরিবারের অন্দরেই উঠেছে নানান প্রশ্ন! কী প্রয়োজন এত টাকা তোলার? এই নিয়ে অনেকেই সরব।
সঙ্ঘ পরিবার সূত্রে খবর, বড় একটি মিছিল করার প্রস্তুতি নেওয়া হয়েছে। শহরের বাইরে থেকেও লোক আনা হবে ওই মিছিলের জন্য, গাড়ি করে বা বাসে লোক নিয়ে আসার খরচ রয়েছে। যারা মিছিলে আসবেন প্রত্যেককে খিচুড়ি লাবড়া খাওয়ানো হবে। বিপুল সংখ্যক মানুষের খাওয়ার ব্যবস্থা করার খরচও কিছু কম নয়। সেই কারণেই চাঁদার মাধ্যমে টাকা তোলা ছাড়া আর কোন উপায় নেই সঙ্ঘের। কিন্তু কুপন ১০০ টাকা করা নিয়েই উঠেছে প্রশ্ন। বিজেপি কর্মী-সমর্থকদের একটি বড় অংশের দাবি, ১০০ টাকার কুপন দেওয়া হচ্ছে মানেই জোর করে সাধারণ মানুষের উপর চাঁদা চাপিয়ে দেওয়া হচ্ছে। যদিও সঙ্ঘ পরিবারের এক কার্যকর্তার কথানুযায়ী, ‘স্বেচ্ছায় যারা সাহায্য করতে চাইবেন, তাদের জন্যই এই কুপন। কেউ দিতে না চাইলে দেবেন না।’
চলতি বছরে মহাসমারোহে রামনবমী আয়োজনের নেপথ্যে রাজনৈতিক উদ্দেশ্য রয়েছে বলেই মনে করছেন রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকেরা। বিধানসভা নির্বাচনে পরাজয়ের পরে রাজ্যজুড়ে গেরুয়া শিবিরে শুধুই ক্ষয় চলছে। এ রাজ্যের মাটিতে রাজনৈতিক প্রাসঙ্গিকতা হারিয়ে ফেলেছে বিজেপি। সংগঠনকে কোনভাবেই আর উজ্জীবিত করতে পারছে না গেরুয়া শিবির। সেই কারণে রামনবমীর আয়োজন করে সঙ্ঘের সব শাখা ফের একবার সক্রিয় করার মরিয়া চেষ্টা করতে চাইছে বিজেপি।
চাঁদা আদায় ইস্যুতে বিজেপি ও সঙ্ঘ পরিবারকে গৈরিকীকরণের অভিযোগে বিদ্ধ করেছে তৃণমূল। বিজেপিকে কটাক্ষ করে; জলপাইগুড়ি জেলা তৃণমূল সভাপতি মহুয়া গোপ বলেন, ‘চারিদিকে যখন তেল-চালের দামে মানুষ নাজেহাল তখন বিজেপি চাঁদা তুলে ধর্ম নিয়ে রাজনীতি করে মানুষকে বোকা বানাতে চাইছে।’