ডিভিসি সংস্কারে একটাকাও বরাদ্দ করা হয়নি, কেন্দ্রীয় মন্ত্রীর উত্তরে মান্যতা পেল মমতার দাবি
ডিভিসির বাঁধগুলির জলাধারে পলি তুলে সংস্কার প্রয়োজন। বারবার বলা সত্ত্বেও তার জন্য টাকা অনুমোদন করা হচ্ছে না। গত বছর অক্টোবর মাসেই এব্যাপারে মোদী সরকারকে চিঠি লিখে অভিযোগ জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাতেও কাজ হয়নি। চলতি বছর বাজেট অধিবেশনে মমতার অভিযোগই প্রমাণিত হল। সংসদে দাঁড়িয়ে স্বয়ং কেন্দ্রীয় জলশক্তি মন্ত্রকের রাষ্ট্রমন্ত্রী বীরেশ্বর টুডু জানিয়ে দিলেন, ডিভিসির জলাধারের সংস্কারের জন্য একটাকাও বরাদ্দ করা হয়নি। লোকসভায় তৃণমূল কংগ্রেসের সাংসদ কল্যাণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের প্রশ্নের উত্তরে সম্প্রতি তিনি জানান, ২০১২ সালে পাঞ্চেত বাঁধের জলাধারের পলি তোলার প্রস্তাব এসেছিল। কিন্তু তা বাস্তবায়িত করা সম্ভব নয়। যে বিপুল পরিমাণ পলি কোথায় ফেলা হবে সেই প্রশ্ন যেমন রয়েছে, তেমনি রয়েছের বিপুল খরচের বিষয়টিও। রাজ্যের প্রশাসনিক মহল অবশ্য মনে করছে, দিল্লির এই অনীহা আসলে রাজ্যের প্রতি বঞ্চনার আরও একটি নিদর্শন।
জলাধার সংস্কার না হলে এবারও বন্যার আশঙ্কা প্রবল। বর্ষাকালে দামোদর অববাহিকা এলাকায় মাত্রাতিরিক্ত বৃষ্টি হলেই দক্ষিণবঙ্গের পূর্ব বর্ধমান, হুগলি, হাওড়া জেলার বিস্তীর্ণ অংশ প্লাবিত হবে বলেই মনে করছেন আধিকারিকরা। গত শতাব্দীর পাঁচের দশকের গোড়ায় তৈরি ডিভিসি-র মাইথন ও পাঞ্চেত বাঁধের জলাধারে প্রচুর পরিমাণে পলি জমেছে। ফলে কমেছে জলধারণ ক্ষমতা। বেশি বৃষ্টি হলেই অতিরিক্ত জল দুর্গাপুর ব্যারেজ হয়ে নেমে আসে নিম্ন দামোদর অববাহিকা এলাকায়। ডিভিসি সূত্রে খবর, পলি জমায় মাইথন-পাঞ্চেতের জলধারণ ক্ষমতা ২৫ শতাংশ কমে গিয়েছে।
গত বছর রাজ্যে বন্যার পর অক্টোবরে প্রধানমন্ত্রীকে দীর্ঘ চিঠি পাঠিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। ডিভিসির বাঁধ থেকে জল ছাড়ার ফলে যে ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছিল, তার বিস্তারিত উল্লেখ ছিল চিঠিতে। ১০ বছর ধরে বলা সত্ত্বেও কোনও সংস্কার হয়নি। সেটাও জানিয়েছিলেন মুখ্যমন্ত্রী। কিন্তু কেন্দ্র কিছুই করতে যে রাজি নয়, তা মন্ত্রীর সংসদে দেওয়া উত্তরই বুঝিয়ে দিচ্ছে। ডিভিসি আধিকারিকদের বক্তব্য, জলধারের সংস্কার সম্ভব নয়। বরং নতুন করে বাঁধ নির্মাণে সুবিধা বেশি।