‘বিক্ষুব্ধ’ নেতাদের ক্ষতে প্রলেপ দিতে নতুন কমিটি বিজেপির
একদিকে বিক্ষুব্ধ আদি নেতাদের পুনর্বাসন। অন্যদিকে দলবদলুদের পার্টিতে ধরে রাখার মরিয়া চেষ্টা। রাজ্য বিজেপি সদ্য গঠিত কার্যকরী সমিতির তালিকা দেখে এমনটাই ধারনা রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের। সোমবার ১০৮ জনের এই কমিটি ঘোষণা করেছে গেরুয়া পার্টি। যেখানে সুকান্ত মজুদারের জমানায় রাজ্য কমিটি থেকে বাদ পড়া একঝাঁক পুরনো নেতাকে ঠাঁই দেওয়া হয়েছে। রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সহ-সভাপতি প্রতাপ বন্দ্যোপাধ্যায়, বিশ্বপ্রিয় রায়চৌধুরি, রাজকমল পাঠকদের সেই কমিটির সদস্য করা হয়েছে। উল্টোদিকে, বিধানসভা ভোটে শয়ে শয়ে দলবদলুদের দিয়ে পার্টির কলেবর ফুলিয়ে ছিল বিজেপি। যার ফলস্বরূপ ৭৭টি আসনে আটকে যায় পদ্ম শিবির। এবার সেই হেরো দলবদলুদের ধরে রাখতে কার্যকরী সমিতির ‘ললিপপ’ সদস্য করে রাখা হল। সেই কমিটিতে নাম রয়েছে—রুদ্রনীল ঘোষ, বৈশাখী ডালমিয়া, রথীন চক্রবর্তী, রিঙ্কু নস্কর এবং দুলাল বরের মতো পরাজিত দলবদলুদের।
অন্যদিকে, এদিন কার্যকরী কমিটির বিশেষ আমন্ত্রিত হিসেবেও ৪৮ জনের পৃথক কমিটি ঘোষণা করেছে বঙ্গ বিজেপি। বিধানসভা ভোটের প্রাক্কালে সংস্কৃতি জগতের বিভিন্ন ক্ষেত্রে ‘টোপ’ দিয়ে কিছু ব্যক্তিত্বকে জালে তুলেছিল বিজেপি। অরাজনৈতিক সেই অংশের মানুষদের দিয়েই মূলত বিশেষ আমন্ত্রিত কমিটি তৈরি হয়েছে। পাপিয়া অধিকারী, অঞ্জনা বসু, রিদ্ধি বন্দ্যোপাধ্যায়রা ওই কমিটির উল্লেখযোগ্য সদস্য। এর মধ্যে পাপিয়া ও অঞ্জনাদেবী বিধানসভা ভোটে পদ্ম প্রতীকে লড়েও হেরে গিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বিজেপির এক আদি নেতা বলেন, পার্টি নিয়ে সুকান্ত-অমিতাভরা যা ইচ্ছা তাই করছেন। পুরনোদের ব্রাত্য করে নতুনদের দিয়েই পার্টি চালাতে আমাদের বাদ দেওয়া হয়েছিল। এবার লোক দেখানো কার্যকরী কমিটিতে রেখে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার চেষ্টা করছেন। দলবদলুদের সঙ্গে এক সারিতে তাঁদের আসন দেওয়ায় অপমানিত বোধ করছেন বহু পুরনো বিজেপি নেতা। অন্যদিকে, গত বছরের ২০ সেপ্টেম্বর সুকান্ত মজুমদার বিজেপি সভাপতি হিসেবে দায়িত্ব গ্রহণের দীর্ঘ সময় পরে কেন এই কমিটি গঠন হল, তা নিয়েও প্রশ্ন উঠছে দলের অন্দরে।