রাজ্যে বেসরকারি বাসের ভাড়া বাড়ছে না, সাফ জানিয়ে দিলেন পরিবহণ মন্ত্রী
করোনা মহামারী গত দু’বছরে সাধারণ মানুষের রোজগারে ধস নামিয়েছে, কাজও কেড়েছে অনেকের। পাশাপাশি পেট্রপণ্যের অস্বাভাবিক মূল্যবৃদ্ধির জেরে হেঁসেলে টালমাটাল দশা আম-জনতার। রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের দোহাই দিয়ে তেলের দামবৃদ্ধির দায় ঝেড়ে ফেলেছে মোদি সরকার। তবে এই কঠিন পরিস্থিতিতে রাজ্যবাসীর পাশে রয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। তাঁর নির্দেশ, কোনওভাবেই বাসের ভাড়া বাড়ানো যাবে না। সোমবার রাজ্যের পরিবহণ মন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বেসরকারি বাস মালিকদের বৈঠকে সরকারের এই নীতি আরও একবার স্পষ্ট করে দিয়েছেন। পাশাপাশি, মালিকপক্ষের সমস্যাগুলির সুরাহার ব্যাপারেও গুরুত্ব দিয়ে বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন তিনি।
ফিরহাদ বলেছেন,মানুষের রোজগার কমে গিয়েছে। জিনিসপত্রের দাম অস্বাভাবিকভাবে বাড়ছে। কেন্দ্রীয় সরকার নিজেদের কোষাগার ভরতে তেলের দাম প্রতিদিন বাড়াচ্ছে। এই পরিস্থিতি উল্লেখ করে তিনি প্রশ্ন তোলেন, ‘তাহলে কি রোজ রোজ বাসের ভাড়া বাড়াব?’ তিনি সাফ জানিয়েছেন, ‘সরকার বাসের ভাড়া এক পয়সাও বাড়াবে না।’
তবে বেসরকারি বাস মালিকদের সমস্যার দিকগুলি গুরুত্ব দিয়ে দেখা হবে বলে আশ্বাস দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী। বাস মালিকদের কিছুদিন ধৈর্য ধরার আবেদনও জানিয়েছেন তিনি। ফিরহাদ জানিয়েছেন, ‘আমরা বিকল্প জ্বালানির দিতে এগচ্ছি।’ অর্থাৎ পেট্রল-ডিজেলের বদলে আগামীদিনে পরিবেশ বান্ধব জ্বালানি গণ পরিবহণের প্রধান ‘অক্সিজেন’ হয়ে উঠবে। এক্ষেত্রে সিএনজি এবং ইলেকট্রিক গাড়িকেই বাড়তি অগ্রাধিকার দিচ্ছে রাজ্য। মন্ত্রী আরও বলেন, সরকারি নিগমের বহু বাসে সিএনজি ইঞ্জিন বদলের কাজ সাফল্যের সঙ্গে চলছে। রাজ্যের একাধিক সরকারি বাস ডিপোতে সিএনজি স্টেশন তৈরির কাজ ইতিমধ্যেই সেরে ফেলা হয়েছে। একইসঙ্গে পরিবহণ দপ্তর ২ হাজার ইলেকট্রিক বাসের অর্ডারও দিয়েছে। তবে ব্যাটারি সংক্রান্ত কিছু সমস্যার জেরে সেই ই-বাস আসতে কিছুটা দেরি হচ্ছে বলেও জানিয়েছেন মন্ত্রী।
বৈঠকের পর সিটি সাবার্বাণ বাস সার্ভিসেসের সাধারণ সম্পাদক টিটু সাহা বলেছেন, ‘ভাড়া নিয়ে মন্ত্রী সরকারের অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছেন। আমরা একাধিক বিষয়ে সহযোগিতা চেয়েছিলাম। পুলিসি হয়রানি, বর্ধিত জরিমানা, সাইটেশন কেসের মতো বিবেচনার আশ্বাস দিয়েছেন পরিবহণমন্ত্রী।’ টিটুবাবুর অভিযোগ, বেসরকারি বাসকে অতিরিক্ত কেস দিচ্ছে পুলিস। দূষণ ও সাইটেশন কেস নিয়ে মালিকদের দিশেহারা দশা। সম্প্রতি কার্যকর ট্রাফিক আইনের নয়া জরিমানার হার নিয়েও সমস্যার কথা জানিয়েছেন টিটুবাবু। যার প্রেক্ষিতে ফিরহাদ কলকাতা ও রাজ্য পুলিসের সঙ্গে কথা বলে সমাধান সূত্র বের করার আশ্বাস দিয়েছেন। যা নিয়ে সন্তোষ প্রকাশ করেছে মালিক সংগঠনগুলি।