চালক কম থাকায় শিয়ালদহে ট্রেন ও পরিষেবার সময় বাড়ানো নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা মেট্রোর অভ্যন্তরেই
ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো শিয়ালদহ পর্যন্ত সম্প্রসারিত হলে যাত্রী সংখ্যা উল্লেখযোগ্য হারে বাড়বে। কিন্তু ট্রেন এবং পরিষেবার সময় আদৌ রাতারাতি বাড়ানো যাবে কি না, তা নিয়ে ঘোর অনিশ্চয়তা রয়েছে মেট্রোর অভ্যন্তরেই। হাতে গোনা চালক দিয়ে চালু থাকা পরিষেবায় ট্রেন বাড়াতে বর্তমান সংখ্যার অন্তত তিন গুণ চালক প্রয়োজন হবে বলে মেট্রো সূত্রের খবর। উত্তর-দক্ষিণ মেট্রোর পরিষেবা সামাল দিয়ে কী ভাবে এত মোটরম্যান মিলবে, সংশয় দেখা দিয়েছে তা নিয়েই। যদিও মেট্রো কর্তৃপক্ষের দাবি, পূর্ব এবং দক্ষিণ-পূর্ব রেল থেকে চালক এনে মোটরম্যানের ঘাটতি পূরণ করা হবে।
আপাতত সেক্টর ফাইভ থেকে ফুলবাগান পর্যন্ত সপ্তাহে পাঁচ দিন দৈনিক ৪৮টি ট্রেন চালাতে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোয় চালক আছেন ২১ জন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে, এই মেট্রোয় চালকের একার দায়িত্বেই ট্রেন চলে। পিছনের কামরায় গার্ড থাকেন না। সূত্রের খবর, ১০ মিনিট অন্তর ট্রেন চালাতে হলে এর অন্তত তিন গুণ লোক লাগবে।
বর্তমানে উত্তর-দক্ষিণ এবং ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রো মিলিয়ে ২৬৮ জন মোটরম্যান থাকার কথা। সেখানে কাজ করছেন কম-বেশি ২২০ জন। তাঁদের মধ্যে অনেকে অবসরও নিচ্ছেন। মেট্রো সূত্রের খবর, রেল বোর্ডের নির্দেশে ২০১২ সাল থেকে রেলওয়ে রিক্রুটমেন্ট বোর্ডের মাধ্যমে সরাসরি চালক নিয়োগ বন্ধ। বদলে পূর্ব রেল, দক্ষিণ-পূর্ব রেল এবং মেট্রো রেলের মধ্যে হওয়া জেপিও চুক্তি (জয়েন্ট প্রসিডিয়োর অর্ডার) অনুযায়ী অন্য দুই রেল থেকে দরকার মতো চালক জোগান দেওয়া হয়। এর মধ্যে দক্ষিণ-পূর্ব রেল থেকে মোটরম্যান আসা বহু দিন বন্ধ। পূর্ব রেলেও ট্রেনের সংখ্যা বৃদ্ধি পাওয়ায় প্রত্যাশিত সংখ্যায় চালক মিলছে না। পাশাপাশি, ওই দুই রেল থেকে এখানে চালকেরা ‘লিয়েনে’ আসায় তাঁরা পদোন্নতি এবং অন্যান্য আর্থিক সুবিধা থেকে বঞ্চিত হন বলে অভিযোগ। যার জন্য অনেকেই মেট্রোয় আসতে আগ্রহী হন না।
মেট্রো সূত্রের খবর, নতুন লাইন চালু হলে বা নতুন স্টেশন পর্যন্ত পরিষেবা সম্প্রসারিত হলে ‘ক্রু রিভিউ’ করা হয়। শেষ বার সেই রিভিউ হয়েছে ২০১৮ সালে। তার পরে ইস্ট-ওয়েস্ট মেট্রোর পরিষেবা সম্প্রসারিত হয়েছে দক্ষিণেশ্বর পর্যন্ত। ফলে, হাতে থাকা লোকজন দিয়েই নতুন স্টেশন এবং লাইনে পরিষেবা শুরু করতে হয়েছে। ইতিমধ্যে অনেকে অবসর নেওয়ায় মেট্রোচালকদের কাজের চাপ বাড়ছে।এ প্রসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মহলের এক আধিকারিক বলেন, ‘‘এখনই চালকদের যথেষ্ট কাজের চাপ নিতে হয়। সেই চাপ আরও বাড়ালে তা পরিষেবার পক্ষে নিরাপদ না-ও হতে পারে।’’ মেট্রোর ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার প্রত্যুষ ঘোষ বলেন, ‘‘শিয়ালদহ পর্যন্ত কতগুলি ট্রেন চলবে, কত ক্ষণ অন্তর চলবে— সে সব বিষয় এখনও ঠিক হয়নি। ফলে, এই মুহূর্তে কিছু বলা সম্ভব নয়।’’