আইডিএফসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কিনে নিল বাংলার বন্ধন ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম
সাড়ে চার হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগে ব্যবসা কেনার জন্য মুখিয়ে ছিল দেশ-বিদেশের নামজাদা সংস্থা। তাদের মুখের সামনে থেকে বাজি জিতে নিয়ে বেরিয়ে গেল বাংলার এক সংস্থা। মিউচুয়াল ফান্ড সংস্থা আইডিএফসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট কিনে নিল বন্ধন ব্যাঙ্কের নেতৃত্বাধীন কনসোর্টিয়াম। ভারতের বিনিয়োগ ব্যবসায় আজ পর্যন্ত হওয়া সবচেয়ে বড় হস্তান্তর এটি। যা এল বাঙালি চন্দ্রশেখর ঘোষের সংস্থার হাতে।
মিউচুয়াল ফান্ড এখন ভারতের বিনিয়োগ ব্যবসার বড় বাজার। ভারতের অন্তত ৩৮ লক্ষ কোটি টাকার লেনদেন চলে এই ক্ষেত্রে। বন্ধন ব্যাঙ্কের মূল সংস্থা বন্ধন ফিন্যান্সিয়াল হোল্ডিং এতদিন সাধারণ ব্যাঙ্কিং পরিষেবাতেই মূলত আটকে ছিল। এই প্রথম সংস্থা পা রাখতে চলেছে বিনিয়োগের বৃহত্তর ক্ষেত্রে। ভারতের বাজারে ঢুকতে চাওয়া দেশ এবং বিদেশের তাবৎ বড় সংস্থার সামনে মাত্র সাত বছর আগে প্রতিষ্ঠিত একটি সংস্থার এই জয় বেশ বড় ব্যাপার বলেই মনে করছেন অর্থ বিশেষজ্ঞরা।
চার হাজার ৫০০ কোটি টাকার বিনিময়ে যে দু’টি সংস্থা বন্ধনের কনসোর্টিয়ামের হাতে এসেছে তার একটি আইডিএফসি অ্যাসেট ম্যানেজমেন্ট এবং দ্বিতীয়টি আইডিএফসি এএমসি ট্রাস্টি কোম্পানি। এই দু’টি সংস্থার সাহায্যে বন্ধন কী ভাবে মিউচুয়াল ফান্ডের ব্যবসা বাড়াতে চলেছে, সে ব্যাপারে এখনই কোনও পরিকল্পনার কথা জানায়নি সংস্থাটি। তবে জানিয়েছে, আপাতত কয়েকটি নিয়ন্ত্রক সংস্থার অনুমোদনের জন্য অপেক্ষা করছে তারা। সে গুলি হাতে পেলেই পরের পরিকল্পনার কথা ভাবা হবে।
আইডিএফসি-র মিউচুয়াল ফান্ড কেনার দৌড়ে বন্ধনের সামনে ছিল আমেরিকার সংস্থা ইনভেসকো। আইডিএফসি হাতে পেতে তারা হাত মিলিয়েছিল ওয়ারবাগ পিনকাস এবং কেদারা ক্যাপিটাল নামে আরও দু’টি সংস্থার সঙ্গে। এই দুই সংস্থা কোম্পানি কেনাবেচারই কাজ করে। তবে শেষ পর্যন্ত ইনভেসকো-র চেষ্টা সফল হয়নি। শেষ মুহূর্তে বন্ধনের হাতেই চলে আসে আইডিএফসি।
এই চুক্তি গুরুত্বপূর্ণ কেন না আইসিআইসিআই, এইচডিএফসি, স্টেট ব্যাঙ্কের মতো সংস্থার উপস্থিতিতে একেবারে শূন্য থেকে শুরু করা বন্ধন ব্যাঙ্কের হাতে এই ব্যবসা এসেছে। যা ভারতের অর্থনৈতিক বিশেষজ্ঞদের মতে এ পর্যন্ত হওয়া ভারতীয় বিনিয়োগ দুনিয়ার সবচেয়ে বড় চুক্তি।
উল্লেখ্য, বন্ধনের নেতৃত্বাধীন যে কনসোর্টিয়াম আইডিএফসিকে কিনেছে, তার পুরোটাই বন্ধন ব্যাঙ্কের না হলেও ৬০ শতাংশই রয়েছে বন্ধন ব্যাঙ্কের মূল সংস্থা বন্ধন ফিনান্সিয়াল হোল্ডিংয়ের হাতে। বাকি ৪০ শতাংশে সমান ভাগ রয়েছে সিঙ্গাপুরের সংস্থা জিআইসি অনুমোদিত লাথে ইনভেস্টমেন্ট প্রাইভেট লিমিটেড এবং প্রাইভেট ইক্যুইটি ফান্ড ক্রিস ক্যাপিটাল। সুতরাং শেষ পর্যন্ত এই জয় বাংলার সংস্থাই পেয়েছে, এমনটা বলা যেতে পারে।