বই দেখেই পরীক্ষা দিক পড়ুয়ারা! সওয়াল যাদবপুরের ইঞ্জিনিয়ারিং বিভাগের ডিনের
যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়ে কি এবার বই খুলে পরীক্ষা? এমনই সম্ভাবনা প্রকট হয়ে উঠছে ইঞ্জিনিয়ারিং ফ্যাকাল্টির ডিনের তরফে এই সংক্রান্ত প্রস্তাবে। তা ইতিমধ্যে বোর্ড অব স্টাডিজের কাছে মতামতের জন্য পাঠিয়েছেন সহ-উপাচার্য স্যমন্তক দাস। শুধু তাই নয়, প্রস্তাব অনুযায়ী লিখিত পরীক্ষা ১০০ নম্বরের পরিবর্তে হবে ৭০ নম্বরে। আগে যে পরীক্ষায় ১০০ নম্বরের জন্য ৩ ঘণ্টা বরাদ্দ থাকত, তাতেই ৭০ নম্বরের জন্য ৪ ঘণ্টা বরাদ্দ করার প্রস্তাব দেওয়া হয়েছে।
সোমবার ফ্যাকাল্টি কাউন্সিলের একটি আনঅফিশিয়াল বৈঠকে ছাত্রদের পরীক্ষায় ‘ছাড়’ দেওয়ার কথা উঠেছিল। মঙ্গলবারও রাত পর্যন্ত একটি বৈঠক হয়। তাতেও উপস্থিত ছিলেন অধ্যাপক, ছাত্রছাত্রী এবং শীর্ষকর্তারা। তাতে ছাত্রদের তরফে অনলাইন পরীক্ষার পাশাপাশি বই খুলে অফলাইন পরীক্ষার প্রস্তাব ওঠে। পরবর্তী প্রস্তাবটি গ্রাহ্য করে কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠিয়েছেন ডিন। এর ফলেই শোরগোল পড়ে গিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক মহলে।
প্রস্তাবে বলা হয়েছে, পরীক্ষায় বই, নোটস এবং পিডিএফের প্রিন্ট করা নোটস নিয়ে বসা যাবে। তবে, মোবাইল বা ট্যাবের মতো কোনও ইলেকট্রনিক্স গ্যাজেট ব্যবহার করা যাবে না। একজন শিক্ষক বলেন, কর্তৃপক্ষের কাছে এমন প্রস্তাব পেয়ে হতভম্ব হয়ে গিয়েছি। ‘ওপেন বুক এগজাম’ একটি স্বীকৃত পদ্ধতি ঠিকই। তবে, এর জন্য কোর্স, কারিক্যুলাম, পাঠদান পদ্ধতি সেই মতো সাজাতে হয়। আগে থেকেই সে সিদ্ধান্ত নিয়ে সেমেস্টার শুরু করতে হয়। এক্ষেত্রে কিছুই হয়নি। এছাড়া, এতদিন ১০০ নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হতো। তবে, সেক্ষেত্রে ওয়েটেজ দেওয়া হতো ৭০। অর্থাৎ, লিখিত পরীক্ষায় প্রাপ্ত নম্বর থেকে ৭০ শতাংশ নেওয়া হতো। আর বাকি ৩০ শতাংশ নেওয়া হতো অভ্যন্তরীণ মূল্যায়নে প্রাপ্ত নম্বর থেকে। এবার লিখিত পরীক্ষাই ৭০ নম্বরে নেওয়ার কথা বলা হয়েছে। আর এর জন্য অন্তত দ্বিগুণ বেশি সময়ও দেওয়া হবে।
প্রসঙ্গত, অনলাইন ক্লাসের দাবিতে আন্দোলন শুরু করেছিলেন ইঞ্জিনিয়ারিং পড়ুয়াদের একাংশ। পড়ুয়াদের অবস্থান-বিক্ষোভের জেরে বেশ কয়েকদিন আটকে পড়েন সহ-উপাচার্য, রেজিস্ট্রাররা। একটা গোটা দিন আটকে ছিলেন উপাচার্য সুরঞ্জন দাসও। তবে, অফলাইনেই পরীক্ষা নেওয়ার বিষয়ে শিক্ষকরা অনড় থাকায় পড়ুয়াদের সেই দাবিতে সিলমোহর পড়েনি। তবে, এভাবে বই খুলে পরীক্ষার প্রস্তাব পেয়ে শিক্ষকরা মনে করছেন, পড়ুয়াদের সঙ্গে রফার পথেই হাঁটছে যাদবপুর কর্তৃপক্ষ।