বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিতে বাংলায় আসছেন শাহ, অমিতের বক্তব্যকেই হাতিয়ার করে বিঁধল তৃণমূল
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহের নিজের বক্তব্যকে হাতিয়ার করেই তাঁকে বিঁধল তৃণমূল। সরাসরি বলা হল, কাজ আর মন্তব্য একেবারে স্ববিরোধী। সেইসঙ্গে অমিতের বঙ্গ সফরে কোনও ‘দুরভিসন্ধি’ লুকিয়ে থাকতে পারে, এমনটাও মনে করছেন জোড়াফুল শিবিরের নেতারা। যেখানে উল্লেখ করা হয়েছে, বাংলা ভাগ করার যে দাবি বিজেপি নেতারা তুলছেন, তাকে ইন্ধন দিতেই কি রাজ্যে আসছেন অমিত শাহ? এদিকে গোষ্ঠীদ্বন্দ্বে জর্জরিত রাজ্য বিজেপির অবস্থা নিয়েও আলোচনা করতে পারেন শাহ।
আগামী ১৬ তারিখ রাজ্যে আসার কথা রয়েছে অমিত শাহের। কিন্তু এই বঙ্গ সফরের আগে তাঁর একটি মন্তব্য নিয়ে বিতর্ক তৈরি হয়েছে। সংসদে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘বাংলায় গেলে খুন হয়ে যেতে পারেন।’ এই বক্তব্যকে তুলে ধরেই জোড়াফুলের নেতারা অমিতকে নিশানা করেছেন। তৃণমূল মহাসচিব পার্থ চট্টোপাধ্যায় বলেছেন, ‘অমিত শাহের বক্তব্য সম্পূর্ণ পরস্পর বিরোধী। কারণ তিনি মুখে বলছেন সন্ত্রাসের কথা, বাংলায় না যাওয়ার পরামর্শ বিলোচ্ছেন। আবার নিজেই নানা কর্মসূচি নিয়ে বাংলায় আসছেন। বাংলা যে শান্তির উদ্যান, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীর নির্ধারিত সফর, তাই প্রমাণ করে।’
অমিতের এই সফরে রাজনীতির ‘সূক্ষ্ম চাল’ দেখতে পাচ্ছেন তৃণমূল সাংসদ তথা জাতীয় মুখপাত্র সুখেন্দুশেখর রায়। তিনি বলেছেন, ‘অমিত শাহ উত্তরবঙ্গে আসছেন বিচ্ছিন্নতাবাদীদের মদত দিতে। বাংলাকে ভাগ করার চক্রান্ত করতে। কিন্তু বাংলার মানুষ অমিত শাহদের যে কোনও ষড়যন্ত্রকে বুক দিয়ে রুখেছে, আগামী দিনেও রুখবে।’ ঘটনাচক্রে উত্তরবঙ্গকে পৃথক রাজ্য করার দাবি তুলেছেন বিজেপি সাংসদ জন বারলা। আবার এই দাবিতে সুর মেলাতে দেখা গিয়েছে কার্শিয়াংয়ের বিষ্ণুপ্রসাদ শর্মা সহ বিজেপির একাধিক বিধায়ককে। যা নিয়ে বেশ কিছু ধরেই রাজ্য-রাজনীতি সরগরম। এই প্রেক্ষাপটে অমিত শাহের সফরে কী উঠে আসে, সেদিকেই নজর রেখেছে তৃণমূল। এছাড়াও উত্তরবঙ্গ সফরে অমিতের সঙ্গে অসমের মুখ্যমন্ত্রী হিমন্ত বিশ্বশর্মা থাকতে পারেন বলে খবর। কিন্তু হিমন্তের আসা রাজনৈতিক মহলে আলোচনার কেন্দ্রবিন্দুতে। আলোচনায় উঠে এসেছে কেএলও নেতা জীবন সিংয়ের আত্মসমর্পণ প্রসঙ্গও উঠে।
এসেছে, শান্তি আলোচনায় বাংলাকে বাদ দিয়ে অসম ও কেন্দ্রের সঙ্গে বসার জন্য জীবন সিংয়ের অত্যাধিক আগ্রহের পর্বও।
এদিকে দলীয় সূত্রে জানা যাচ্ছে, অমিত শাহকে ঝাড়গ্রামের বিজেপি সাংসদ কুনার হেমব্রম স্পষ্ট ভাষায় জানিয়ে দিয়েছেন, সংশ্লিষ্ট জেলায় দলের সাংগঠনিক পরিস্থিতি একেবারেই ভালো নয়। বিধানসভা নির্বাচনের পর থেকে ঝাড়গ্রামে কোনও বড় দলীয় কর্মসূচি নেওয়া হয়নি। দলীয় সূত্রের খবর, কুনার হেমব্রম এই ব্যাপারে অমিত শাহকে অবিলম্বে যথাযথ পদক্ষেপ নেওয়ার জন্য আর্জি জানিয়েছেন। ঝাড়গ্রামের সাংসদ বলেন, ‘আমি ঝাড়গ্রামের দলীয় সাংগঠনিক পরিস্থিতি নিয়ে অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনা করেছি। ঝাড়গ্রামে বিজেপি সাংগঠনিকভাবে অনেকটাই এগিয়ে ছিল একসময়। এখন সেই পরিস্থিতি আর নেই। তাই যাবতীয় সমস্যা মিটিয়ে জেলায় দলের সংগঠনকে চাঙ্গা করাটা জরুরি।’