আন্তর্জাতিক বিভাগে ফিরে যান

পাকিস্তানের ছোঁয়া শ্রীলঙ্কাতেও! প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশের সিদ্ধান্ত বিরোধীদের

April 9, 2022 | 2 min read

চরম আর্থিক সংকটের জেরে শ্রীলঙ্কার প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের (President Gotabaya Rajapaksa) বিরুদ্ধে অনাস্থা পেশের সিদ্ধান্ত নিল প্রধান বিরোধী দল সমগি জন বাল্বেগায়া (Samagi Jana Balwegaya) বা SJB।

শ্রীলঙ্কা পার্লামেন্টের বিরোধী দলনেতা সজিত প্রেমদাস (Sajith Premadasa) সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, সরকারের অকর্মণ্যতার জন্যই আজ শ্রীলঙ্কার এই দুর্দশা। এর দায় অবশ্যই প্রেসিডেন্টের উপর বর্তায়। সেই কারণেই তাঁর বিরুদ্ধে অনাস্থা আনার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বিরোধীরা।

এই প্রসঙ্গে সজিত বলেন, “আমরা ঠিক করেছি যে প্রেসিডেন্ট গোতাবায়া রাজাপক্ষের বিরুদ্ধে পার্লামেন্টে অনাস্থা প্রস্তাব পেশ করব। কারণ, তিনি দেশকে এই আর্থিক সংকটের হাত থেকে বাঁচাতে পারেননি। আমরা এ নিয়ে বিরোধী সমস্ত দলের নেতাদের সঙ্গে আলোচনা করব। তারপর শীঘ্রই এই বিষয়ে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে।”

তাছাড়া, বর্তমান পরিস্থিতির প্রেক্ষাপটে শ্রীলঙ্কার প্রশাসনিক ব্যবস্থাকেও ঢেলে সাজানোর কথা ভাবছেন বিরোধীরা। এখনও পর্যন্ত এই দ্বীপরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের একচ্ছত্র আধিপত্যই চলে এসেছে। এবার এই ব্যবস্থাপনায় বদল আনার কথা ভাবা হচ্ছে। শুধুমাত্র প্রেসিডেন্টের হাতে সমস্ত ক্ষমতা কুক্ষিগত করে না রেখে তা নির্বচিত জনপ্রতিনিধি, সরকারি আমলা এবং বিচার বিভাগের মধ্যে ভাগ করে দেওয়া যায় কিনা, তাই নিয়ে বিরোধী পক্ষ ভাবনা, চিন্তা শুরু করেছে।

প্রসঙ্গত, এর আগে প্রেসিডেন্টের হাতে ক্ষমতার ভরকেন্দ্র থাকার বিরোধিতা করেছেন বিরোধী দলনেতা সজিত প্রেমদাস। তাঁর অভিযোগ, এর ফলে জনপ্রতিনিধিরা স্রেফ সাক্ষীগোপালে পরিণত হয়েছেন। তাঁদের হাতে কোনও ক্ষমতা নেই। এদিকে, গোটা দেশে কার্যত পরিবারতন্ত্র কায়েম হয়েছে। এই ব্যবস্থাকেও একনায়কতন্ত্রের সঙ্গে তুলনা করেছেন সজিত। তাঁর অভিযোগ, এর ফলে গণতন্ত্রের ভারসাম্য নষ্ট হচ্ছে।

দেশের দুর্বিসহ অর্থনৈতিক পরিস্থিতির কথা মাথায় রেখে মঙ্গলবার পার্লামেন্টে একটি ভাষণ দেন সজিত। সেখানে তিনি বলেন, “গত প্রায় ২০ বছর ধরে যে নেতাই প্রেসিডেন্টের কুর্সিতে বসেছেন, তিনিই এই ব্যবস্থাপনা নির্মূল করার আশ্বাস দিয়েছেন। কিন্তু, করেছেন ঠিক উল্টো।” সজিতের অভিযোগ, নেতৃত্বের এই অবস্থানের জন্য আজ শ্রীলঙ্কার এই দশা হয়েছে। ক্ষমতাসীন নেতারা শুধুই নিজেদের স্বার্থের কথা ভেবেছেন। দেশের কোনও উন্নতি করেননি। বিরোধী দলনেতার প্রশ্ন, যদি একজন ব্যক্তির হাতেই সব ক্ষমতা তুলে দেওয়া হয়, তাহলে নির্বাচন করার দরকার কী!

প্রসঙ্গত, ১৯৭৮ সাল থেকে এশিয়ার এই দ্বীপরাষ্ট্রে প্রেসিডেন্টের শাসন শুরু হয়। তারপর থেকে প্রায় সব নেতাই ভোটে জেতার আগে এই ব্যবস্থাকে নির্মূল করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। কিন্তু, ভোটে জিতেই সেই প্রতিশ্রুতি ভুলে গিয়েছেন তাঁরা।

TwitterFacebookWhatsAppEmailShare

#No Confidence Motion, #srilanka, #Gotabaya Rajapaksa

আরো দেখুন