মোবাইল কাড়ছে ঘুম, কর্মক্ষেত্রেই ঘুমিয়ে পড়ছেন ৬০% মানুষ, বলছে সমীক্ষা
ঘুমের দফারফাই বটে। নেপথ্যে মোবাইল ফোন। আরও নির্দিষ্ট করে বললে সোশ্যাল মিডিয়ায় আসক্তি। নিট ফল? সময়ে ঘুমানো তো দূরের কথা, চোখ বোজার আগের মুহূর্ত পর্যন্ত মোবাইলে ব্যস্ত থাকছেন প্রায় ৯২ শতাংশ মানুষ। যার প্রভাব পড়ছে কর্মক্ষেত্রে। অফিসের চেয়ারে বসে ঢুলছেন প্রায় ৬০ শতাংশ কর্মচারী। এমনই সব চাঞ্চল্যকর তথ্য উঠে এসেছে গ্রেট ইন্ডিয়ান স্লিপ স্কোরকার্ড, ২০২২ সমীক্ষায়।
২০২১ সালের মার্চ থেকে ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারি। টানা এক বছর কলকাতার প্রায় ৩০ হাজার মানুষের সঙ্গে কথা বলে তৈরি হয়েছে এই সমীক্ষা রিপোর্ট। উল্লেখযোগ্য বিষয় হল, ঘুম সংক্রান্ত বিষয়ে এবছরের স্কোরকার্ড গত বছরের তুলনায় আরও খারাপের দিকে গিয়েছে। প্রতি চারজনের মধ্যে একজন শহরবাসী জানিয়েছেন করোনা পরবর্তী সময়ে তাঁদের ঘুমের প্যাটার্নের ব্যাপক অবনতির কথা।
কীরকম? মূলত দু’টি কারণ উঠে এসেছে সমীক্ষায়। প্রথম, সোশ্যাল মিডিয়ার প্রতি অসম্ভব আসক্তি। অন্তত ৩৭ শতাংশ ক্ষেত্রে দেরিতে ঘুমের কারণ এটি। দ্বিতীয়টি হল পেশাগত। ফোর জি উত্তীর্ণ এই যুগে অফিস টাইম শেষ করার পরও যে বাড়িতে কাজ নিয়ে আসছেন হাজার হাজার প্রফেশনাল! সেই চাপেই ঘুমাতে দেরি হচ্ছে ২৮ শতাংশ মানুষের। চমকপ্রদ বিষয় হল, এত রাতে ঘুমিয়েও কিন্তু সকাল সকাল উঠে পড়তে বাধ্য হচ্ছেন প্রায় ৫১ শতাংশ মানুষ। আর পর্যাপ্ত ঘুম না হওয়ায় কাজ করতে করতেই চোখ জুড়িয়ে আসছে বহু শহরবাসীর। বিষয়টা যে কেউ বুঝছেন না, তা কিন্তু একেবারেই নয়। ৩২ শতাংশ মানুষের উপলব্ধি, ফেসবুক, টুইটার সহ বিভিন্ন সোশ্যাল মিডিয়া তাঁদের রাতের ঘুমের বারোটা বাজাচ্ছে। পরোক্ষভাবে হলেও শরীর-মনের ক্ষতিসাধন করছে। ঘুমের আগে মোবাইল, ল্যাপটপের মতো ডিজিটাল স্ক্রিনের গ্যাজেট যদি এড়িয়ে চলা যায়, হয়তো ভালো ঘুম হতে পারে। কিন্তু বিধি বাম। তাই ঘুম চোখেই মোবাইল ঘেঁটে চলেছেন শহরবাসী। তবে ঘুম উড়ে যাওয়ার আরও একটি কারণ আছে। ছোট এবং অপরিষ্কার বিছানা। অন্তত ২৫ শতাংশ মানুষ এটিকে কারণ হিসেবে খাড়া করেছেন।
তাহলে সমস্যা কাটানোর উপায়? মুর্শিদাবাদ মেডিক্যাল কলেজের মনোরোগ বিভাগের প্রধান ডাঃ রঞ্জন ভট্টাচার্যের টিপস, ব্যক্তিগত জীবন এবং পেশাগত জীবনে ভারসাম্য আনতেই হবে। তাহলেই ধীরে ধীরে চোখে ফিরবে শান্তির ঘুম। কিন্তু অনিদ্রা কাটাতে ঘুমের ওষুধ? নৈব নৈব চ…।