জল অপচয় রুখতে পুর এলাকার প্রতিটি বাড়িতে ফ্লো-মিটার বসানোর ভাবনা রাজ্যের
রাজ্যের পুর এলাকাগুলির প্রত্যেক বাড়িতে বসানো হবে ফ্লো-মিটার। তবে কর বসানোর জন্য নয়। প্রতি বাড়িতে কত জল ব্যবহার বা অপচয় হচ্ছে, তা বুঝতে রাজ্য সরকারের এই উদ্যোগ। পুরদপ্তরের পক্ষ থেকে সম্প্রতি এমন নির্দেশ গিয়েছে প্রতিটি পুরসভায়। এখন কোনও বাড়িতে ফ্লো-মিটার রয়েছে কি না, প্রতিটি বাড়িতে তা বসানোর আনুমানিক খরচ কত ইত্যাদি জানতে ডিপিআর (বিস্তারিত প্রকল্প রিপোর্ট) তৈরি করতে বলা হয়েছে ওই নির্দেশিকায়। সেই অনুযায়ী কাজও শুরু করে দিয়েছে পুরসভাগুলি। জানা গিয়েছে, পুরদপ্তরের পক্ষ থেকে বাড়িতে বাড়িতে ওই মিটার বসিয়ে দেওয়া হবে। এর জন্য নাগরিকদের কোনও খরচ করতে হবে না।
২০২৩ সালের মধ্যে রাজ্যের ১২৮টি পুরসভার প্রতি বাড়িতে জলের সংযোগ দেওয়ার পরিকল্পনা নিয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সমীক্ষা অনুযায়ী, রাজ্যের পুরসভা এলাকায় প্রায় ৫০ লক্ষ বাড়ি রয়েছে। তার মধ্যে এখনও ১৮ থেকে ১৯ লক্ষ বাড়িতে জলের কোনও সংযোগ নেই। সেগুলি অবশ্য মূলত উত্তরবঙ্গ, পুরুলিয়া, বাঁকুড়া, হাওড়া, মুর্শিদাবাদ প্রভৃতি জেলার পুরসভা এলাকায়। কলকাতার কাছাকাছি সব পুরসভাতেই বাড়ি বাড়ি জলের সংযোগ রয়েছে। নতুন করে জলের সংযোগ দিতে গেলে ফ্লো-মিটার বসানো বাধ্যতামূলক করার পরিকল্পনা নিয়েছে পুরদপ্তর।
এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানিয়েছেন বিভিন্ন পুরসভার চেয়ারম্যানরা। কামারহাটি পুরসভার চেয়ারম্যান গোপাল সাহা বলেছেন, ‘আমি মনে করি প্রতিটি বাড়িতে এই মিটার বসানো উচিত। যেভাবে জল অপচয় হয়, তা ঠেকাতে সরকারের আরও কঠোর হওয়া দরকার। প্রশাসনিক বৈঠকে আমি মুখ্যমন্ত্রীকে এই প্রস্তাব দিয়েছিলাম। মানুষের সচেতনতা বৃদ্ধির পাশাপাশি প্রশাসনিকভাবে পদক্ষেপ করা দরকার। নয়তো জল অপচয় বন্ধ করা যাবে না।’ একই কথা জানিয়েছেন বরানগর পুরসভার চেয়ারপার্সন অপর্ণা মৌলিক। তিনি বলেন, ‘পুরদপ্তর থেকে আমাদের কাছে ফ্লো-মিটার বসানোর ব্যাপারে একটি নির্দেশিকা এসেছে। আমরা ডিপিআর তৈরি করছি।’ পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিমও জানিয়েছেন, ‘আমরা জলের মিটার বসানোর জন্য বলেছি।
তবে সেটা জলের কর নেওয়ার জন্য নয়। কত পরিমাণ জল কাজে লাগছে, তা আমরা বুঝতে পারব এর মাধ্যমে। জল অপচয় বন্ধ করতে এই হিসেব সাহায্য করবে।’