দুই উপনির্বাচনে কম ভোটদানের হারের বিষয়ে কী বললেন শাসক ও বিরোধী দলের নেতারা?
আশা ছিল বেলা বাড়লে গতি বাড়িয়ে এগোতে শুরু করবে ভোটদানের শতাংশ। শেষপর্যন্ত বিকেল পাঁচটা পর্যন্ত স্কোরবোর্ডে দেখা গেল আসানসোল লোকসভা উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৬৪.০৩ শতাংশ এবং বালিগঞ্জ বিধানসভার উপনির্বাচনে ভোট পড়েছে ৪১ শতাংশের কিছুটা বেশি।
সোমবার বিকেলে রাজ্যের শিল্পমন্ত্রী এবং তৃণমূল কংগ্রেসের মহাসচিব পার্থ চ্যাটার্জি ভোটদানের এই শতাংশের হিসাবটা জানানোর পর স্বাভাবিকভাবেই প্রশ্ন উঠেছে কেন এত কম ভোট পড়ল। যার ব্যাখ্যায় রাজ্যের পুরমন্ত্রী ফিরহাদ হাকিম বলেন, ‘প্রচন্ড গরম এবং সেইসঙ্গে রোজা চলছে। পাশাপাশি উপনির্বাচনে ভোট সবসময় কম পড়ে। আর বালিগঞ্জে একটা অংশে ভোট চিরকালই কিছুটা কম পড়ে।’
কম ভোটদানের বিষয়ে একদিকে ফিরহাদ যেমন এই দাবি করেছেন, পাশাপাশি সাংসদ ও রাজ্য বিজেপির প্রাক্তন সভাপতি দিলীপ ঘোষের দাবি, ‘লোকে ভয়ে ভোট দিতে যাননি। যদি উপনির্বাচনে তৃণমূল প্রার্থী কম ব্যবধানে জেতেন তবে তো সেটা তৃণমূলের অস্বস্তি।’
যদিও তৃণমূল এবং বিজেপির এই দাবির সঙ্গে একমত হননি কংগ্রেস সাংসদ প্রদীপ ভট্টাচার্য। তিনি বলেন, ‘উপনির্বাচনে ভোট কম পড়ে। এটা ঠিক। কিন্তু আমি নিজে বালিগঞ্জ বিধানসভা কেন্দ্রের পাঠভবন স্কুলের ভোটার। সমস্ত ভোটেই ভোটের দিন সকাল সাড়ে ন’টা নাগাদ ভোট দিতে যাই এবং লাইনে দাঁড়িয়ে ভোট দিয়ে আসি। মঙ্গলবার গিয়ে দেখলাম বুথে ভোটারই নেই। ফলে লাইনও নেই। বেলার দিকে ওই এলাকা দিয়ে যাওয়ার সময় ওখানকার ভোটারদের সঙ্গে দেখা হওয়ার পর তাঁরা জানালেন ভোট দিতে তাঁদের কোনও উৎসাহ নেই।’
কেন উৎসাহ নেই সে ব্যাখ্যায় কংগ্রেসের এই নেতা বলেন, ‘প্রথমত রাজ্যে পরপর চলতে থাকা ধর্ষণের ঘটনা এবং সে প্রসঙ্গে তৃণমূল নেতৃত্বের বক্তব্য মানুষ ভালভাবে নেননি। দ্বিতীয়ত, ভোটারদের সঙ্গে কথা বলে দেখলাম তাঁরা ভাবছেন ভোটটা ভালভাবে হয় না। তাই দিয়ে কোনও লাভ নেই। তৃতীয় এবং সবচেয়ে যে গুরুত্বপূর্ণ বিষয় সেটা হল লোকে ভাবছে কাদের ভোট দেব। কারণ, যাঁরা আছেন তাঁদের অপশাসন আর দেখা যাচ্ছে না। আর বিরোধীরা শাসকদলের বিরুদ্ধে সেভাবে লড়তেও পারছে না। ফলে ভোট দিয়ে লাভ নেই।’ বিরোধীদের মধ্যে তো তাঁর দল কংগ্রেসও আছে। সাংসদ কি তাঁদের কথাও বলছেন? তাঁর উত্তর, ‘আমি সবার কথাই বলছি।’