লাভের ফসল ঘরে তুলছে রাষ্ট্রায়ত্ত সংস্থাগুলি, কেরোসিনের দামের বোঝা বইছে সাধারণ মানুষ
পেট্রল-ডিজেলের থেকেও কি রেশনের কেরোসিন থেকে লাভের কড়ি বেশি ঘরে তুলছে রাষ্ট্রায়ত্ত তেল সংস্থাগুলি? এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে এখন দেশের বিভিন্ন রাজ্যে। এপ্রিল মাসে কেরোসিনের যে মূল দাম বা বেসিক প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে, তা জন্ম দিয়েছে এই প্রশ্নের।
বিশেষজ্ঞদের মতে, তিন ধরনের পেট্রপণ্যের বেসিক প্রাইস মোটামুটি এক। আন্তর্জাতিক বাজারে অশোধিত তেলের দামের সঙ্গে উৎপাদন সহ বিভিন্ন খরচ ও লাভের অংশ ধরে বেসিক প্রাইস নির্ধারণ করে তেল সংস্থাগুলি। এপ্রিলের গোড়ায় লিটার প্রতি পেট্রল ও ডিজেলের বেসিক প্রাইস ছিল ৬০ টাকার আশপাশে। সেখানে এ মাসে রেশনে বিক্রি হওয়া কেরোসিনের বেসিক প্রাইস নির্ধারণ করা হয়েছে লিটার পিছু ৭০ টাকা। গত চার মাসে কেরোসিনের বেসিক প্রাইস ৪১ টাকা থেকে লাফিয়ে লাফিয়ে বেড়ে হয়েছে ৭০ টাকা।
রাজ্যের প্রায় সাড়ে ৯ কোটি রেশন গ্রাহকের জন্য মাসে মাথাপিছু বরাদ্দ হাফ লিটার থেকে এক লিটার কেরোসিন। গরিব মানুষদের একটা বড় অংশ এখনও রান্নার কাজে জ্বালানি হিসেবে কেরোসিন ব্যবহার করেন। এখন দাম বাড়তে বাড়তে তা ৮০ টাকা ছুঁয়ে ফেলায় অনেক গরিব মানুষের পক্ষে কেরোসিন কেনা সম্ভব হচ্ছে না। ১৪ কেজির রান্নার গ্যাসের সিলিন্ডারের এখন যা দাম, সম পরিমাণ কেরোসিনের দাম তার থেকে বেশি। বেসিক প্রাইসের সঙ্গে জিএসটি, পরিবহণ খরচ, ডিলার-ডিস্ট্রিবিউটরদের কমিশন প্রভৃতি যুক্ত করে প্রতি মাসে কেরোসিনের বিক্রয় মূল্য নির্ধারণ করে রাজ্যের খাদ্যদপ্তর। পরিবহণ খরচের ফারাকের জন্য বিভিন্ন জেলায় দামের তারতম্য হয়। সেকারণে কোনও কোনও জেলায় ৮৩ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে কেরোসিন।
কেরোসিনের উপর জিএসটির হার পাঁচ শতাংশ। অর্থাৎ লিটার পিছু কর প্রায় সাড়ে ৩ টাকা। পেট্রল-ডিজেলের উপর কেন্দ্র অনেক বেশি হারে এক্সাইজ ও সেস চাপানোয় এবং রাজ্য সরকারের বিক্রয় কর থাকায় বেসিক প্রাইস এক হলেও কেরোসিনের থেকে দামি। কেরোসিন ডিলারদের রাজ্য সংগঠনের সাধারণ সম্পাদক অশোক গুপ্তর দাবি, কেন্দ্র আগেই ভর্তুকি তুলে নিয়েছে। কেরোসিনের উপর এখন লিটারে ২০-২২ টাকা লাভ করছে তেল সংস্থাগুলি। এই লাভের পরিমাণ তারা কিছুটা কমালে গরিব মানুষের উপকারে আসত।