নতুন বছরে কালীঘাট মন্দিরে নতুন আকর্ষণ, আজ থেকে শুরু হচ্ছে লাইট অ্যান্ড সাউন্ড শো
সামগ্রিক সৌন্দর্যায়ন করা হবে কালীঘাট মন্দিরের। ইতিমধ্যেই সেই কাজে হাত লাগিয়েছে রাজ্য সরকার। চলছে স্কাইওয়াক নির্মাণের প্রক্রিয়া। আর তার ফাঁকেই আগত ভক্তদের কাছে মায়ের মন্দিরকে আরও আকর্ষণীয় করে তুলতে কলকাতা পুরসভার নতুন উদ্যোগ ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’। মন্দিরের মূল প্রবেশদ্বারেই দেখা মিলবে আলো-সঙ্গীতের জাদুর। আজ, বৃহস্পতিবার সেটির উদ্বোধন করবেন কলকাতার মেয়র ফিরহাদ হাকিম।
মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের বাড়ির গলির ঠিক উল্টোদিকেই কালীঘাট মন্দিরের মূল প্রবেশদ্বার। ইতিপূর্বে সেটিরও সংস্কার হয়েছে। রঙিন আলো দিয়ে নতুন করে সাজিয়ে তোলা হয়েছিল প্রবেশদ্বারটি। এবার তাতে নয়া সংযোজন ‘লাইট অ্যান্ড সাউন্ড’। তার জন্য ফের সেখানে পড়েছে নতুন রঙের প্রলেপ। বসানো হয়েছে আলো ও শব্দ প্রক্ষেপণের ব্যবস্থা। সন্ধ্যা নামলেই প্রবেশদ্বারে বেজে উঠবে শ্যামাসঙ্গীত। গানের সঙ্গে মানানসই রং বদল হবে ক্ষণে ক্ষণে। শঙ্খ, ঘণ্টা, কাঁসর ধ্বনিতে চলবে আলোর নান্দনিক খেলা। প্রায় ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করে এই ব্যবস্থা তৈরি করা হয়েছে।
স্থানীয় ৮৩ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলার প্রবীরকুমার মুখোপাধ্যায় জানিয়েছেন, মূল প্রবেশদ্বারে থাকবে একটি জায়ান্ট স্ক্রিন। সেখানে সতীপীঠের মাহাত্ম্য তুলে ধরা হবে। এছাড়া, সংস্কার করা হয়েছে মন্দিরের প্রবেশপথও। মূল ফটক থেকে মায়ের মন্দির এবং শ্মশান ঘাট পর্যন্ত রাস্তায় নতুন করে পড়েছে পিচের প্রলেপ। শহরে উঁচু-নিচু রাস্তা কেটে নতুন করে সমান্তরাল করার কাজ চালাচ্ছে কলকাতা পুরসভা। ঠিক সেভাবেই কালীঘাট মন্দির সংলগ্ন প্রবেশপথটির সংস্কার হয়েছে। পুরনো পিচ কেটে উড়িয়ে দেওয়ায় আর ঢেউ খেলানো রাস্তার ঝক্কি পোহাতে হবে না আগত ভক্ত থেকে শুরু করে নিত্যযাত্রীদের। প্রায় ৭০০ মিটার রাস্তা তৈরিতে আনুমানিক ৪০ লক্ষ টাকা খরচ করেছে পুরসভা। ৮ নম্বর বরোর চেয়ারম্যান চৈতালি চট্টোপাধ্যায় জানিয়েছেন, ‘মন্দিরের মূল প্রবেশদ্বার থেকে শুরু করে সংলগ্ন রাস্তাঘাট সবকিছুর সংস্কার করা হয়েছে।’
এর আগে দক্ষিণেশ্বরের ভবতারিণী মন্দিরে প্রবেশের জন্য স্কাইওয়াক বানিয়েছে রাজ্য। ঠিক সেভাবেই রাসবিহারী অ্যাভিনিউ থেকে কালীঘাট মন্দিরে ঢোকার রাস্তায় নির্মিত হবে স্কাইওয়াক। তার জন্য সেখানকার হকারদের ইতিমধ্যেই পুরসভার তরফ থেকে হাজরা পার্কে পুনর্বাসন দেওয়া হয়েছে। গোটা কালীঘাট এলাকাকেই নানাভাবে সাজিয়ে তোলার পরিকল্পনা নিয়ে এগচ্ছে রাজ্য। মন্দির চত্বরের সৌন্দর্য বৃদ্ধির পাশাপাশি টালি নালা সংস্কারের কাজও চলছে। টালি নালায় নোংরা ফেলা বন্ধ করতে কালীঘাট ব্রিজে বসানো হয়েছে লোহার জাল। সব মিলিয়ে আগামী দিনে ওই চত্বরকে ‘ধর্মীয় পর্যটনকেন্দ্র’ হিসেবে আরও আকর্ষণীয় করে তুলে ধরতে চায় মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সরকার। সেই সূত্র ধরেই নানা অভিনব পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে খবর।