শিল্পে বিনিয়োগ টানতে রাজ্যে বুধবার শুরু বাণিজ্য সম্মেলন
শিল্পে বিনিয়োগ টানতে পরিকাঠামোগত উন্নয়ন অবশ্যই জরুরি। সঙ্গে প্রয়োজন পেশাদারি কর্মসংস্কৃতিও। একদশক আগে পর্যন্ত বন্ধবিধ্বস্ত বাংলায় এ নিয়ে প্রশ্ন তুলতেন অনেকে। বামফ্রন্ট আমলের সেই হা-হুতাশের বাংলা এখন বন্ধহীন। আর তার জেরে গত ১১ বছরে রাজ্যে সৃষ্টি হয়েছে বাড়তি ৮ কোটি কর্মদিবস। সেই সাফল্যকেই এবার লগ্নির চাবিকাঠি বানাচ্ছেন মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। আগামী বুধবার শুরু হচ্ছে বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলন। সেখানে পরিকাঠামো উন্নয়নের পাশাপাশি বন্ধবিরোধী অবস্থান এবং অতিরিক্ত কর্মদিবস সৃষ্টির উদ্যোগকে সামনে রেখে নামছে নবান্ন।
বাম আমলে শুধু মাত্র ধর্মঘটের কারণে বছরে গড়ে ৭৬ লক্ষ কর্মদিবস নষ্ট হতো। এসব এখন অতীত। কেন্দ্রের জনবিরোধী নীতির প্রতিবাদে অন্যান্য রাজনৈতিক দল ধর্মঘট অবশ্য ডাকে। সেই ধর্মঘটে কারণকে সমর্থন করলেও, মুখ্যমন্ত্রীর নির্দেশে সচল থাকে রাজ্য। অন্যান্য দিনের তুলনায় বন্ধে বেশি হাজিরা লক্ষ করা যায় কলকারখানা ও সরকারি অফিসে। আর এর দরুন বিগত ১১ বছরে রাজ্যের সামগ্রিক কর্মদিবস বেড়েছে কয়েকগুণ। নবান্নের হিসেব বলছে, প্রায় আট কোটি কর্মদিবস নষ্ট হওয়া থেকে বাঁচানো সম্ভব হয়েছে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের জমানায়। ওই দিনগুলিতে সাধারণ মানুষের উপার্জন ব্যাহত হয়নি। উপকৃত হয়েছেন ‘দিন আনা, দিন খাওয়া’ মানুষগুলি। বিভিন্ন ঘটনার পরিপ্রেক্ষিতে যখন বাংলার ভাবমূর্তি নষ্টের চেষ্টা চরমে, তখন এই পরিসংখ্যানই বুঝিয়ে দিচ্ছে রাজ্যের অবস্থান কতটা শিল্প সহায়ক। সূত্রের খবর, বাণিজ্য সম্মেলনে সেই তথ্যই তুলে ধরবেন মুখ্যমন্ত্রী। এতে রাজ্যের ভাবমূর্তিতে ইতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেই মত ওয়াকিবহাল মহলের।
বিগত পাঁচটি বাণিজ্য সম্মেলনে রাজ্যে মোট ১২ লক্ষ ৩৫ হাজার ৫৭৮ কোটি টাকার বিনিয়োগ প্রস্তাব এসেছে। এবারের অঙ্ক সেই সব নজির ছাপিয়ে যাবে বলেই অনুমান বিশেষজ্ঞদের। ক্ষুদ্র শিল্পের পাশাপাশি ভারী শিল্পেও বেশ কয়েক হাজার কোটি টাকার বিনিয়োগের সম্ভাবনা রয়েছে। উদ্বোধন হবে শিল্পের জন্য প্রয়োজনীয় বেশ কিছু পরিকাঠামোর। মাঝারি ও ক্ষুদ্র শিল্পে বাংলা এখন দেশে দ্বিতীয়। রাজ্যে উৎপাদিত পণ্যের রপ্তানি বাড়ানোরও উদ্যোগ নেওয়া হচ্ছে। বিশ্ব বঙ্গ বাণিজ্য সম্মেলনে একটি রপ্তানি ফেলিসিটেশন কেন্দ্রেরও উদ্বোধন হওয়ার কথা। কারিগরি শিক্ষা থেকে শুরু করে বিভিন্ন দপ্তর মউ সাক্ষর করবে। রাজ্যের সামগ্রিক উন্নয়ন ও ভবিষ্যতের পরিকল্পনা সম্বন্ধে দেশ-বিদেশের প্রতিনিধিদের অবগত করতে তৈরি হচ্ছে ডকুমেন্ট। ইতিমধ্যে সংশ্লিষ্ট দপ্তরগুলির আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করেছেন মুখ্যসচিব হরিকৃষ্ণ দ্বিবেদী। কোন দপ্তরের কী দায়িত্ব তা পরিষ্কার জানিয়ে দেওয়া হয়েছে।