ভাল কাজে প্রশংসা, কাজ না করলে তিরস্কার! নয়া নীতি রাজ্য স্বাস্থ্য ভবনের
ভাল পরিষেবায় প্রশংসা, আবার কাজ না করলে তিরস্কার অথবা বদলি করা, এই নীতি নিল স্বাস্থ্যভবন। কাজ না করা চিকিৎসককে সাসপেন্ডও করবে স্বাস্থ্যভবন।
যেমন কোনও হাসপাতালে প্রসূতির ফ্যালোপিয়ান টিউব ফেটে শুরু হওয়া ভয়াবহ রক্তক্ষরণ নিপুণ দক্ষতায় সামাল দেওয়া। আবার কোনও ব্লক হাসপাতালে হাঁটু প্রতিস্থাপনের নজির গড়া। এমনকী, পেট কেটে কোমরের ভাঙা হাড় ভিতর দিয়ে জুড়ে অপারেশন। এসবই সর্বোচ্চ স্তরের পরিকাঠামোযুক্ত মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালেই সাধারণত করার ঝুঁকি নেন চিকিৎসকরা। কিন্তু স্বাস্থ্যকর্তারা ভরসা, সাহস, দক্ষতা ও চূড়ান্ত পেশাদারিত্বে ভরসা করে ইদানীং সরকারি চিকিৎসকদের একাংশও জেলা কিংবা মহকুমা স্তরের হাসপাতালেই এই সব দুরূহ কাজগুলো করে ফেলছে। দু’দিন আগে ঠিক যেমনটা করেছেন তমলুক হাসপাতালের চিকিৎসকরা।
আবার কয়েকদিন আগে কৃষ্ণনগর হাসপাতালে ৬ জন অস্থিশল্য চিকিৎসক থাকার পরেও ভাঙা পা নিয়ে আসা অশীতিপর রোগী চিকিৎসা না পেয়ে, কিংবা দক্ষিণ হাওড়া স্টেট জেনারেল হাসপাতালে তিনজন প্রসূতি ও স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞ থাকা সত্ত্বেও মাসে ১০-১৫টির বেশি প্রসব হয় না, দিনের পর দিন পরিষেবা পেতে হয়রান হন সাধারণ মানুষ, ফুটে ওঠে সরকারি স্বাস্থ্য পরিষেবার অন্ধকার দিক, সেখানে এই সরকারি পরিকাঠামোতেই ডাক্তারবাবুদের উজ্জ্বল কৃতিত্ব নজর কাড়ে প্রশ্নাতীতভাবে। তাই বারুইপুর মহকুমা হাসপাতালের চিকিৎসক হাঁটু প্রতিস্থাপনের নজির রাখেন নির্দ্বিধায়।
আবার অসীম সাহসের সঙ্গে তমলুকের এক অস্থিরোগ বিশেষজ্ঞ প্রবল ঝুঁকি নিয়ে এমন একটি অস্ত্রোপচার করেন যা মেডিক্যাল কলেজ কিংবা বড় কর্পোরেট হাসপাতাল ছাড়া দেখা যায় না। পেটে কেটে কোমরের হাড় জোড়ার দুর্দান্ত অস্ত্রোপচার করায় তাঁর কাজে তাই গর্বিত স্বাস্থ্যভবনের কর্তারা। স্বাস্থ্য অধিকর্তা অজয় চক্রবর্তী নিজেই তাই সরকারি চিকিৎসকদের হোয়াটসঅ্যাপ গ্রুপে এই সাফল্য ও ব্যর্থতার উদাহরণ দিয়েছেন। তাঁর কথায় চিকিৎসকদের একাংশ যেমন দারুণ কাজ করছেন, তেমনই কয়েকজনের আবার কাজ না করার মানসিকতা রয়েছে। আমরা এই ব্যবস্থাটাকেই বদল করতে চাইছি। হাসপাতালে আসলে কাজ করতেই হবে। রোগী পরিষেবা চালাতেই হবে।