মোদী বিরোধী মুখ হয়ে উঠুন মমতাই, এমনটাই চান পাওয়ার?
ইউপিএ চেয়ারম্যান হতে তিনি রাজি নন। সেটা আগেই বুঝিয়ে দিয়েছেন। এবার বিরোধী জোটের মুখ হওয়ার ব্যাপারেও নারাজ শারদ পাওয়ার। জানা যাচ্ছে, নিজের দলের অন্দরে তিনি ইতিমধ্যেই সেই ইঙ্গিত দিয়েছেন। অর্থাৎ একটি বিষয় পরিষ্কার, ২০২৪ সালের লোকসভা ভোটের রণকৌশলে বিজেপি বিরোধী জোটের সেনাপতি হতে চাইছেন না এনসিপি সুপ্রিমো। তাঁর এই মনোভাবের জেরে একাধিক রাজনৈতিক সম্ভাবনার ব্যাখ্যা উঠে আসছে। প্রশ্ন উঠছে, নিজে বিরোধী জোটের মুখ হতে না চেয়ে শারদ পাওয়ার কি পরোক্ষে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পথ প্রশস্ত করছেন? আগামী দিনে মমতার নেতৃত্বই মেনে নিতে এভাবেই কি তিনি চাপ বাড়াচ্ছেন কংগ্রেসের উপর?
পাঁচ রাজ্যের ভোট বিপর্যয়ের পর কংগ্রেসের রাজনৈতিক গুরুত্ব আরও তলানিতে। এই সুযোগ কাজে লাগাতে সচেষ্ট পাওয়ার। তিনি এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় প্রথম থেকেই একটি বিষয়ে একমত—বিরোধী জোটের সেনাপতি কংগ্রেস থেকেই হবে—এর কোনও বাধ্যবাধকতা নেই। আলোচনার মাধ্যমে স্থির হবে নেতৃত্ব। কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থাগুলির অপব্যবহারের বিরুদ্ধে সরব হওয়ার জন্য কিছু দিন আগে বিজেপি বিরোধী দলগুলির মুখ্যমন্ত্রী ও নেতাদের চিঠি পাঠিয়ে ছিলেন তৃণমূল নেত্রী। মমতার ওই আহ্বানকে সমর্থন জানান পাওয়ার। তিনি বলেছিলেন, ‘এব্যাপারে সকলের অবশ্যই উদ্যোগী হওয়া দরকার।’ আবার সম্প্রতি শারদ পাওয়ারের বাসভবনে হামলার ঘটনারও তীব্র নিন্দা করেন মমতা। ফলে দু’জনেই যে আগামী দিনে বিরোধী জোটের কারিগর হতে চলেছেন, সেটা ক্রমেই স্পষ্ট হচ্ছে। ঠিক এখানেই প্রশ্ন উঠছে, পাওয়ার বিরোধী জোটের মুখ হতে চাইছেন না কেন? তিনি কি এখন রাষ্ট্রপতি পদের দিকে চোখ রাখছেন? অর্থাৎ, রাষ্ট্রপতি পদে বিরোধী জোটের প্রার্থী হিসেবে তাঁকেই ভাবা হতে পারে, এরকম সম্ভাবনা সৃষ্টি হয়েছে কি?
পাওয়ারের রাজনৈতিক রণকৌশল ঠিক কী হতে চলেছে, সেটা নিয়ে জাতীয় রাজনীতির অন্দরে চর্চা তুঙ্গে। এনসিপি সুপ্রিমোকে ইউপিএ চেয়ারম্যান হতে অনুরোধ করেছিল শিবসেনা। কিন্তু শারদ পাওয়ার সেই ‘অফার’ ফিরিয়ে দিয়েছেন। তিনি স্পষ্ট বলেছেন, ইউপিএ চেয়ারপার্সন কংগ্রেস থেকে কেউ হওয়াটাই কাম্য। যদিও সম্মিলিত বিরোধী জোটের সেনাপতি কে হবেন, সেটা নিয়ে বরাবরই রহস্য রেখে দিচ্ছেন পাওয়ার। মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের সঙ্গে বৈঠকের পর তিনি বলেছিলেন, বিরোধী জোটের মুখ কে হবেন, যথামসয়েই তা ঠিক করা হবে। আগামী জুলাই মাসে রাষ্ট্রপতি পদের নির্বাচন। বিজেপি বিরোধী প্রার্থী স্থির করার লক্ষ্যে বিভিন্ন দলকে একজোট করার জন্য শারদ পাওয়ার এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ই যৌথ প্রয়াস চালাচ্ছেন।
এদিকে এই একঝাঁক জল্পনা কল্পনার মধ্যেই আবার সম্প্রতি শারদ পাওয়ারের সঙ্গে একান্ত বৈঠক করেন নরেন্দ্র মোদী। পাওয়ারকে কী বার্তা দিয়েছেন তিনি? সেটাও কিন্তু রহস্য।