দেশে শান্তিরক্ষায় একজোট বিরোধীরা, যৌথ বিবৃতি তৃণমূল, কংগ্রেস, বাম সহ ১৩ দলের
কোনওরকম উসকানি নয়, শান্তি বজায় রাখুন। একযোগে দেশবাসীর কাছে আবেদন জানালেন বিরোধী শিবিরের শীর্ষ নেতানেত্রীরা। দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ক্রমবর্ধমান ‘ঘৃণা ভাষণ’ নিয়ে উদ্বেগপ্রকাশ করে একটি খোলা চিঠি লিখেছে বিরোধী শিবিরের ১৩ জন নেতানেত্রী। তাৎপর্যপূর্ণভাবে এই চিঠিতে একসঙ্গে সই করেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী এবং তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় (Mamata Banerjee)।
বিরোধী শিবিরের নেতা-নেত্রীরা বলছেন,”যেভাবে খাদ্য, বস্ত্র, ভাষা, ধর্ম, উৎসব এবং সংস্কৃতিকে ব্যবহার করে শাসক শিবির আমাদের সমাজে মেরুকরণ করার চেষ্টা করে চলেছে তাতে আমরা ভীষণভাবে ব্যাথিত। সরকারের বদান্যতায় যেভাবে উসকানিমূলক ভাষণ দেওয়ার পরও অভিযুক্তরা ছাড় পেয়ে যাচ্ছে, তাতে আমরা উদ্বিগ্ন। এই ইস্যুতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীর (Narendra Modi) নীরবতাও আমাদের স্তম্ভিত করেছে।” সোশ্যাল মিডিয়া এবং সংবাদমাধ্যমের অপপ্রচার নিয়েও উদ্বেগপ্রকাশ করেছেন বিরোধী শিবিরের নেতানেত্রীরা। উদ্দেশ্যপ্রণোদিতভাবে সমাজে বিভাজন তৈরির অভিযোগ তুলে সাধারণ নাগরিকদের সচেতন থেকে সম্প্রতি বজায় রাখারও আবেদন জানিয়েছেন সোনিয়া-মমতারা।
সদ্যই রামনবমীতে দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্যে সাম্প্রদায়িক হিংসার ঘটনা প্রকাশ্যে এসেছে। তার প্রেক্ষিতে বিরোধীদের এই বার্তা বেশ তাৎপর্যপূর্ণ। তবে তার থেকেও তাৎপর্যপূর্ণ এই চিঠিকে কেন্দ্র করে ফের বিরোধী ঐক্যের যে ছবি ধরা পড়ল, সেটি। দীর্ঘদিন বাদে ফের এক সারিতে দেখা গেল সোনিয়া গান্ধী (Sonia Gandhi) এবং মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়কে। ২০২১ বিধানসভা নির্বাচনে রাজ্যে বিপুল জয়ের পর মমতাই প্রথম জাতীয় স্তরে বিজেপির বিকল্প জোট গড়ার পক্ষে সওয়াল করেছিলেন। জোটের জমি তৈরি করতে দিল্লিতে গিয়ে সোনিয়ার সঙ্গে দেখাও করেন তিনি। কিন্তু তারপর হঠাৎই কংগ্রেস এবং তৃণমূলের সম্পর্কের অবনতি হওয়া শুরু করে। গত কয়েকমাসে প্রায় নিয়মিত কংগ্রেসের অকর্মণ্যতা নিয়ে সরব হতে দেখা গিয়েছে তৃণমূলকে। এসবের মধ্যেই ফের এক চিঠিতে সোনিয়া এবং মমতার নাম থাকাটা বেশ চমকপ্রদ এবং বার্তাবহ। প্রসঙ্গত, শনিবারই কেন্দ্রের মোদী সরকারের বিরুদ্ধে এক সংবাদমাধ্যমে কলম ধরেছেন কংগ্রেস সভানেত্রী সোনিয়া গান্ধী। তাঁর কলমে বারবার উঠে এসেছে কবিগুরু রবীন্দ্রনাথের কবিতা।
বিরোধীদের চিঠিতে সই করেছেন শরদ পওয়ার, সীতারাম ইয়েচুরি, এম কে স্ট্যালিন (MK Stalin), তেজস্বী যাদবের মতো নেতারাও। তাৎপর্যপূর্ণভাবে সিপিআইএম লিবারেশন নেতা দীপঙ্কর ভট্টাচার্যও এই চিঠিতে সই করেছেন। তবে, আম আদমি পার্টি, শিব সেনা, টিআরএসের কোনও নেতা এতে সই করেননি।