আরও বাড়তে পারে জিএসটি, জোরালো হচ্ছে খাদ্যপণ্যের মূল্যবৃদ্ধির আশঙ্কা
অগ্নিমূল্যের বাজারে আরও এক দফা বোঝা চাপতে চলেছে আম আদমির ঘাড়ে? জিএসটি কাঠামোর নয়া বিন্যাসের সম্ভাবনা সেই আশঙ্কা আরও জোরালো করেছে। নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী, বিশেষ করে, খাদ্যপণ্যের উপর কর আরও বাড়তে পারে। সেইসঙ্গে নতুন ৩ শতাংশের ধাপ তৈরি করে এতদিন ছাড়ের আওতায় থাকা কিছু পণ্যকে নিয়ে আসা হতে পারে কর কাঠামোয়।
জানা গিয়েছে, পণ্য পরিষেবা কর (জিএসটি)-র পাঁচ শতাংশের যে ধাপ এখন রয়েছে, তা বেড়ে ৮ শতাংশ হতে পারে। এই ধাপের আওতায় রয়েছে প্রধানত প্যাকেটজাত খাদ্য সহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী। এছাড়াও ৩ তিন শতাংশেরও একটি নতুন ধাপ চালু হতে পারে। সূত্রের খবর, খাদ্যসামগ্রীর বাইরে থাকা কয়েকটি বহুল ব্যবহৃত পণ্যকে ৫ শতাংশ থেকে নতুন এই ধাপে নিয়ে আসা হতে পারে। বাকিগুলিকে থাকবে আট শতাংশের ধাপে। তা হলে কিছু পণ্যের দাম সামান্য কমলেও অধিকাংশই আরও মহার্ঘ হবে। এগুলির মধ্যে রয়েছে খাদ্যসামগ্রীও। আগামী মাসে জিএসটি কাউন্সিলের বৈঠক বসতে চলেছে। এখানেই পাঁচ শতাংশের ধাপ তুলে নেওয়ার প্রস্তাব নিয়ে আলোচনা হবে বলে খবর।
বর্তমানে জিএসটি-র চারটি ধাপ রয়েছে-৫,১২, ১৮ ও ২৮ শতাংশ। এছাড়াও সোনা ও সোনার অলঙ্কারে রয়েছে তিন শতাংশ জিএসটি। বর্তমানে ব্র্যান্ডহীন ও প্যাকেটজাত নয় এমন খাদ্যসামগ্রী সহ কিছু পণ্য জিএসটি-মুক্ত। এই তালিকায় বদল হতে পারে। এগুলির ৩ শতাংশের নয়া স্তরে আসার সম্ভাবনা রয়েছে। অর্থাৎ, সবমিলিয়ে বাড়তি করের ধাক্কায় খাদ্যসামগ্রী সহ বেশ কিছু
নিত্য প্রয়োজনীয় সামগ্রীর দাম আরও বাড়ার আশঙ্কা।
সূত্রের খবর, পাঁচ শতাংশের ধাপ বাড়িয়ে আট শতাংশ করার প্রস্তাব বিবেচনা করা হচ্ছে। প্রতি এক শতাংশ বৃদ্ধিতে বছরে মোটামুটি হিসেবে ৫০ হাজার কোটি টাকার অতিরিক্ত রাজস্ব কোষাগারে আসবে। এ ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেবে জিএসটি পরিষদ। কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী সহ এই কমিটিতে রয়েছেন সমস্ত রাজ্যের অর্থমন্ত্রীরা।
জিএসটির আওতায় অত্যাবশ্যক সামগ্রীগুলির উপর সবচেয়ে কম কর নেওয়া হয় বা ছাড় দেওয়া হয়। পাশাপাশি বিলাস সামগ্রী বা সিগারেটের মতো অহিতকর পণ্যে সবচেয়ে বেশি জিএসটি রয়েছে। এই পণ্যগুলিতে সর্বোচ্চ ২৮ শতাংশ জিএসটির সঙ্গে সেসও নেওয়া হয়। এই সেস থেকে প্রাপ্ত অর্থে রাজ্যগুলিতে জিএসটি চালুর জন্য ক্ষতিপূরণ দেওয়া হয়ে থাকে।
আগামী জুনেই রাজ্যগুলির ক্ষতিপূরণের ব্যবস্থা উঠে যাচ্ছে। আগামী জুলাই থেকেই কেন্দ্র রাজ্যগুলিকে ক্ষতিপূরণ দেবে না। এতে রাজ্যগুলি যাতে ক্ষতিগ্রস্ত না হয়, সেই লক্ষ্যে পদক্ষেপ গ্রহণের চেষ্টা হচ্ছে। আর তা করতে গিয়ে জিএসটি-র হারের বদলের এই প্রস্তাব। তা কার্যকর হলে মাশুল গুনতে হবে সাধারণ মানুষকেই। মূল্যবৃদ্ধিতে নাজেহাল আম জনতার পকেটে যে আরও টান পড়বে তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না।