“রাজ্যপালের সংবিধান মেনে চলা উচিত”, ধনখড়কে তোপ বিধানসভার অধ্যক্ষের
রাজ্য ও রাজ্যপাল সংঘাত নতুন নয়। সেই সংঘাতের মাঝেই আরও একবার রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিধানসভার স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়। রাজ্যপাল একটি নির্দিষ্ট রাজনৈতিক দলের হয়ে কাজ করছেন বলেই অভিযোগ তাঁর। যদিও স্পিকারের মন্তব্য প্রসঙ্গে পালটা কিছুই বলতে রাজি হননি রাজ্যপাল জগদীপ ধনখড়।
নতুন করে রাজ্যপাল ও বিধানসভার স্পিকারের সংঘাতের সূত্রপাত হয় বি আর আম্বেদকরের জন্মজয়ন্তীতে। ওইদিন আম্বেদকরের মূর্তিতে মাল্যদান করতে বিধানসভায় যান রাজ্যপাল। স্পিকারের পাশে দাঁড়িয়ে সাংবাদিকদের সামনে রাজ্য সরকারকে আক্রমণ করেন জগদীপ ধনকড়। সাংবাদিকরা রাজ্যপালের উদ্দেশে নানা প্রশ্ন করেন। স্পিকার বিমান বন্দ্যোপাধ্যায় সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দিতে বারণ করেন। বিধানসভায় দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠকে আপত্তি জানান। তবে স্পিকারের বাধা অগ্রাহ্য করে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাব দেন রাজ্যপাল। পরে সে প্রসঙ্গে ক্ষোভপ্রকাশ করেন বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়।
সোমবার আরও একবার রাজ্যপালের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন তুললেন বিধানসভার স্পিকার। তিনি বলেন, “রাজ্যপালের সংবিধান মেনে চলা উচিত। বিধানসভাকে রাজনৈতিক প্রেক্ষাপট হিসাবে ব্যবহার করছেন রাজ্যপাল। তাঁকে বিধানসভা চত্বরে দাঁড়িয়ে সাংবাদিক বৈঠক না করার অনুরোধ করেছিলাম। তা সত্ত্বেও তিনি বলেছেন। রাজ্যপাল যা মনে করেছেন তাই করছেন। বিধানসভার গরিমা তাঁর বোঝা উচিত ছিল। রাজভবনে গিয়ে যা খুশি বলতেই পারেন তিনি। তবে বিধানসভায় বলা উচিত হয়নি।” কলকাতা হাই কোর্টও প্রত্যেকটি বিষয়ে এক্তিয়ার বহির্ভূতভাবে হস্তক্ষেপ করছে বলেও দাবি বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের।
এদিকে, এদিন আবারও এসএসকেএম হাসপাতালে যান রাজ্যপাল জগদীপ ধনকড়। সেখানে বিমান বন্দ্যোপাধ্যায়ের খোঁচা প্রসঙ্গে প্রশ্ন করা হয় তাঁকে। যদিও এ প্রসঙ্গ নিয়ে মুখ খোলেননি রাজ্যপাল। বিষয়টি এড়িয়ে যান তিনি। যদিও তার আগে এদিন সকালে কলকাতা হাই কোর্টের আইনজীবীদের বিচারপতি অভিজিৎ গঙ্গোপাধ্যায়ের এজলাস বয়কটের ঘটনার কথা উল্লেখ করে টুইট করেন রাজ্যপাল। এ ঘটনা অনভিপ্রেত বলেই টুইটে লেখেন তিনি।
স্পিকার এবং রাজ্যপালের সংঘাত নিয়ে বিজেপি সরব। রাজ্য বিজেপির মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্যের দাবি, “রাজ্যপাল সংবিধান বোঝেন না, সেটা হতে পারে? বাংলার পরিষদীয় ব্যবস্থা সংবিধানের সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ না হলে, রাজ্যপাল তো বলবেনই। স্পিকার বারবার রাজ্যপালকে আক্রমণ করেছেন। স্পিকারের উপস্থিতিতে হেনস্তার শিকারও হয়েছেন। আর কী বলতে পারেন উনি?” তৃণমূল নেতা জয়প্রকাশ মজুমদার স্পিকারকে সমর্থন করেন। তিনি বলেন, “স্পিকার ঠিকই বলেছেন। বিধানসভা স্পিকারের এক্তিয়ারভুক্ত। রাজভবনকে বিজেপির হেড অফিসে পরিণত করেছেন রাজ্যপাল। টুইট আর সাংবাদিক সম্মেলন নিয়ে বেঁচে আছেন উনি।”