দায় কি শুধু প্রশাসনের? নালা সাফাইয়ের পরই প্লাস্টিক ফেলছেন মানুষ, ক্ষুব্ধ হাওড়া পুরসভা
আসন্ন বর্ষায় জল-যন্ত্রণা রুখতে শহরজুড়ে নিকাশিনালার ব্যাপক সংস্কারে নেমেছে হাওড়া পুরসভা। বড় রাস্তা থেকে অলিগলি, পলি জমে বুজে আসা নালাগুলির নাব্যতা বাড়াতে কার্যত যুদ্ধকালীন তৎপরতায় কাজ চলছে। কিন্তু এই চেষ্টা কি আদৌ ফলপ্রসূ হবে? কাজ শুরুর একমাসের মধ্যেই এই প্রশ্ন উঠছে খোদ পুরসভার অন্দরে। কারণ, সদ্য সাফাই হওয়া নর্দমাগুলি ভরে যাচ্ছে প্লাস্টিকে। এই সমস্যার সমাধানে সচেতনতা বৃদ্ধি ও শাস্তিমূলক জরিমানা—জোড়া পথে হাঁটার সিদ্ধান্ত নিয়েছে পুরসভা। প্লাস্টিক নিয়ে নাগরিকদের সচেতনতা বাড়াতে পোস্টারিং, মাইকিং করা হবে। পাশাপাশি নাগরিকদের দায়িত্বজ্ঞানহীন আচরণের জন্য জরিমানা করবে পুরসভা। দ্রুত এই প্রক্রিয়া শুরু হবে।
হাওড়া পুরসভা সূত্রে জানা গিয়েছে, নিকাশি সাফাইয়ের কাজে বিস্তর অর্থ ও শ্রম ব্যয় হচ্ছে। কয়েকদনি আগে সাফাইয়ের কাজ সম্পন্ন হয়েছে, এরকম নিকাশিগুলি পরিদর্শনে গিয়েছিলেন পুর-প্রশাসক বোর্ডের চেয়ারম্যান সহ উচ্চপদস্থ কর্তারা। তাঁরা লক্ষ্য করেন, মাত্র তিন-চারদিনের মধ্যেই ফের সেগুলি কার্যত আগের অবস্থায় ফিরে এসেছে। পুরসভার দাবি, যে যার মতো প্লাস্টিক বর্জ্য ফেলে দিচ্ছে নালায়। দেদার ফেলা হচ্ছে থার্মোকল ও নানা কঠিন বর্জ্য। এমনকী কোথাও কোথাও বাতিল হেলমেট, বালিশ, কম্বলও ফেলে দেওয়া হয়েছে সদ্য সাফাই হওয়া নর্দমায়। তাহলে কি পুরসভার এত চেষ্টা বিফলেই যাবে? সেই উদ্বেগ থেকেই সমস্যার মোকাবিলার কথা ভাবছে তারা। ঠিক হয়েছে, প্রথম পর্যায়ে পোস্টারিং ও মাইকিং করে সচেতনতা প্রচার করা হবে।
টোটোয় মাইক বেঁধে অলিগলি ও পাড়ায় পাড়ায় চলবে প্রচার। প্লাস্টিকের বিরুদ্ধে অভিযানও শুরু হবে। ৪০ মাইক্রনের বেশি মাত্রার প্লাস্টিক নিষিদ্ধ ঘোষণা করা হবে হাওড়া শহরে। পুরসভার মার্কেটিং বিভাগ হানা দেবে বিভিন্ন বাজারে। নিষিদ্ধ প্লাস্টিক কোনও বিক্রেতা দিলে তাঁকে ৫০০ বা তারও বেশি টাকা জরিমানা করা হবে। একই সঙ্গে ক্রেতাকেও ৫০ বা তার বেশি টাকা জরিমানা করবে পুরসভা। এ বিষয়ে হাওড়া পুরসভার প্রশাসক ডাঃ সুজয় চক্রবর্তী বলেন, ৪০ মাইক্রনের বেশি মাত্রার প্লাস্টিক নিষিদ্ধ করার ব্যাপারে নগরোন্নয়ন দপ্তরের নির্দেশ এসেছে। অভিযান চলবে বিভিন্ন বাজারে। যেভাবে নাগরিকরা নর্দমায় প্লাস্টিক ও অন্যান্য বর্জ্য ফেলছে, তাতে বর্ষার আগে ফের সেগুলি জল বহনে অক্ষম হয়ে পড়বে। সোমবার আমি নিজে ১৫ নম্বর ওয়ার্ডে গিয়ে এরকম পরিস্থিতি প্রত্যক্ষ করেছি।