জঙ্গলমহলে গড়ে উঠবে হরিণ প্রজনন কেন্দ্র, উদ্যোগী বনদপ্তর
‘বনের রাজা’ বলে কথা। ফলে, তার যত্নআত্তিতে ত্রুটি রাখা যাবে না। লাঞ্চ কিংবা ডিনারে ‘এলাহি’ আয়োজন থাকবে, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। তাই এবার সুন্দরবনের বাঘমামাদের পেট ভরাতে জঙ্গলমহলের চার জেলায় হরিণ প্রজনন কেন্দ্র তৈরির উদ্যোগ নিয়েছে রাজ্যের বনদপ্তর। সেই মতো প্রস্তুতি শুরু হয়েছে। দপ্তরের দাবি, জঙ্গলমহলে হরিণ প্রজনন হলে সুন্দরবনে বাঘেদের খাবারের কোনও ঘাটতি হবে না। জঙ্গলমহল ছাড়াও উত্তর ২৪ পরগনার পারমাদানে যে অভয়ারণ্য রয়েছে, তার পাশের জমিতেও এই প্রজনন কেন্দ্র গড়ার পরিকল্পনা নেওয়া হচ্ছে। সদ্য সমাপ্ত ব্যাঘ্র সুমারি অনুযায়ী দেখা যাচ্ছে, তিন বছর পর এবার সুন্দরবনে বাঘের সংখ্যা বাড়তে চলেছে। ফলে, খাবারের চাহিদাও বাড়বে। তাই এই উদ্যোগ।
দুই ২৪ পরগনা জেলার বড় অংশ জুড়ে রয়েছে সুন্দরবন। যা রয়্যাল বেঙ্গল টাইগারের ডেরা বলেই পরিচিত। জঙ্গলে তাদের মূল খাবার হল হরিণ। তাই বনদপ্তর মাঝে মাঝে সেখানে চিতল হরিণ ছাড়ে। সেই হরিণ শিকার করে বাঘেরা। পারমাদানের অভয়ারণ্যে প্রচুর চিতল হরিণ রয়েছে। সেই হরিণ নিয়ে গিয়ে ছাড়া হয় সুন্দরবনে। চাহিদা অনুযায়ী অনেক সময় বাইরে থেকেও নিয়ে আনা হয় হরিণ। বনদপ্তরের দাবি, জঙ্গলমহলের বহু জায়গায় হরিণ রয়েছে। মূলত পর্যটকদের জন্যই তা রাখা হয়েছে। সেখানে হরিণের বংশ বিস্তার হচ্ছে। এছাড়াও বেশকিছু হরিণ খোলা জঙ্গলে ছাড়া হয়েছে।
বনদপ্তর সূত্রে জানা গিয়েছে, জঙ্গলমহলে এবার চারটি পৃথক হরিণ প্রজনন কেন্দ্র গড়ে তোলা হবে। তার জন্য চারটি জেলাকে চিহ্নিত করা হয়েছে। পশ্চিম মেদিনীপুর, ঝাড়গ্রাম, বাঁকুড়া ও পুরুলিয়া। প্রতিটি জেলায় একটি করে কেন্দ্র হবে। এ ব্যাপারে রাজ্যের বনমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, জঙ্গলমহলে হরিণ রি-প্রোডাকশন সেন্টার করার আদর্শ পরিবেশ রয়েছে। জমি দেখা হয়ে গিয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরু হবে। ভবিষ্যতে সুন্দরবনের বাঘেদের খাবারের আর অভাব হবে না। মন্ত্রী বলেন, পারমাদান অভয়ারণ্যের বিপরীতে ৩০০ একর খাস জমি রয়েছে। সেই জমি পেলে সেখানেও একটি হরিণ প্রজনন কেন্দ্র করতে পারব।